সদরপুরে প্রতিহিংসার আগুনে ছাত্র-জনতা


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:২৫ অপরাহ্ন, ৬ই আগস্ট ২০২৪


সদরপুরে প্রতিহিংসার আগুনে ছাত্র-জনতা
সদরপুর উপজেলায় থানায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ছবি: জনবাণী

তুমুল শিক্ষার্থী আন্দোলনের মুখে গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের পর দেশ ছেড়ে ভারতে যান শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের ঘোষণা আসার সঙ্গে সঙ্গে উল্লাসে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার হাজার হাজার মানুষ। এক দিকে বিজয়ের আনন্দে অন্যদিকে প্রতিহিংসার আগুনে মুহুর্তের মধ্যে শ্লোগানে উত্তাল করে তোলে মিছিল ও শ্লোগানে সদরপুর উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক। সদরপুর কলেজ মোড়, সদরপুরের পূর্বশ্যামপুর মোড়, হাসপাতাল মোড় থেকে একের পর এক হাজার হাজার ছাত্র জনতার মিছিলে প্রকম্পিত ও উত্তাল হয়ে ওঠে উপজেলার প্রানকেন্দ্র সদরপুর। 


সদরপুর থানার সামনে মিছিলকারীরা জড়ো হয়ে কিছুক্ষন অবস্থান নেয়। এব্যাপারে সদরপুর থানা পুলিশ পূর্ব থেকেই তাদের প্রবেশ ফটক বন্ধ করে রাখেন। আত্নরক্ষার জন্যে থানার ভিতরেই তারা অবস্থান করেন। 


আরও পড়ুন: অতিরিক্ত আইজিপি হারুন আটক

 

সোমবার (৫ আগস্ট) বিকেল ৪ টার দিকে সদরপুর সদর ইউনিয়নের পূর্বশ্যামপুর (কৃষ্ণপুর) মোড়ে কয়েক হাজার জনতা সমবেত হয়ে মিছিল দেয়। ছাত্র জনতার একাংশের মধ্যে থেকে পাশেই থাকা সদরপুর আওয়ামীলীগ অফিস কার্যালয় প্রথমে ভাংচুর চালায়। অপরদিক থেকে আসা আরেকটি মিছিল উপজেলা পরিষদের দিকে চলে যায়। থানার সামনে জড়ো হতে থাকে হাজার তাহার লোকজন এক পর্যায় থানা থেকে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে এসে অরক্ষিত নবনির্মিত সদরপুর উপজেলা কমপ্লেক্সের ইটের গুড়ি নিক্ষেপ করতে শুরু করে। পরবর্তীতে কিছু উগ্রপন্থি লোকজন পরিষদ ভবনের ভিতরে ঢুকে পড়ে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর চালায়। সেখানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সরকারি অন্যান্য অফিসে ভাংচুর চালানো হয়। 


পরবর্তীতে হামলাকারীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বাসভবনে হামলা চালালে উৎসুক জনতা বাসভবনের ভিতরে প্রবেশ করে বিভিন্ন ধরনের মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়। একই সাথে আরেকটি অংশ নির্বাহী অফিসারের বাসভবনের সামনে থানা নিরাপত্তা কর্মী আনসার ক্যাম্পেও ভাংচুর লুটপাঠের ঘটনা ঘটে। ওই ভবনের সামনে থাকা দুটো মোটর সাইকেলে আগুণ ধরিয়েও দেওয়া হয়। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আরেকটি মিছিল এসে সদরপুর থানায় ঢুকে পড়ে। থানা পুলিশ জীবন আশংঙ্কায় তারা পালিয়ে থাকেন। ওই সময় থানার অস্ত্র লুটপাঠের ও অন্যান্য সামগ্রী লুটপাট হওয়ার ঘটনা ঘটে। পাশপাশি থানা পুলিশের একটি জীপ,প্রিকাপ ও থানায় থাকা ইউওন’র জীপ গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় দুবৃর্ত্তরা। পরবর্তীতে রাত ৮টার দিকে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ইউএনও,পুলিশ সদস্য থানা থেকে বের হয়ে যায়। ন্যাক্কর জনক এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন উপজেলার অনেকে। তবে কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। 


এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।


আরও পড়ুন: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নিতে ড. ইউনূসের সম্মতি

 

এ ঘটনায় সদরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও যুবলীগ সভাপতি মোঃ শহিদুল ইসলাম বাবুল জানান, উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত প্রদান করবেন। 


এ ঘটনায় সদরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, পরিবেশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত মোতাবেক পরবর্তী কার্যক্রম চালানো হবে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসে।


এ ব্যাপারে সদরপুর উপজেলা বিএনপির আহব্বায়ক কাজী বদরুতজামান জানান, এ ঘটনায় সদরপুর উপজেলা বিএনপি ও তার অঙ্গসংঠন কোনো ভাবেই দায়ী নয়। উগ্রপন্থি জনতা ও বহিরাগতরা এ ন্যাক্কর জনক হামলা ঘটিয়েছেন। আমরা প্রশাসন ও থানা কে রক্ষার জন্য চেষ্ঠা করেছি কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাইরে ছিলো।



আরএক্স/