সালমান এফ রহমান-আনিসুল হককে আবারও ১০ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ

সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বিরুদ্ধে নিউমার্কেট থানায় দায়ের হওয়া পাপসের দোকানের কর্মচারী শাহজাহান আলী হত্যা মামলায় ১০ দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করে আবারও ১০ দিনের রিমান্ডে চায় পুলিশ।

শনিবার (২৪ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ জসিমের আদালতে এ রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

এরআগে, গত ১৪ আগষ্ট ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ মামুনুর রশিদের আদালত তাদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।

আরও পড়ুন: সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজকে দশ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ

এরআগে, নিউমার্কেট থানা ও আদালত সুত্রে জানা যায়, সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হককে কোটা বিরোধী আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় পাপসের দোকানের কর্মচারী শাহজাহান আলীকে (২৪) হত্যায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তাদের আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।

এর আগে মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নৌপথে পলায়নরত অবস্থায় রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেফতার করা হয় বলে জানান ডিএমপি কমিশনার মো. মাইনুল হাসান।

গত ১৬ জুলাই কোটা বিরোধী আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় পাপসের দোকানের কর্মচারী শাহজাহান আলীকে (২৪) হত্যার অভিযোগে তার মা আয়শা বেগম (৪৫) বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞানতামা আসামি করা হয়।

আরও পড়ুন: ৪ দিনের রিমান্ডে ডা. দীপু মনি

এ মামলার অভিযোগে বলা হয়, শাহজাহান আলী (২৪) নিউমার্কেট থানার মিরপুর রোডস্থ বলাকা সিনেমা হলের গলির মুখে পাপসের দোকানে কাজ করতো। প্রতিদিনের ন্যায় ১৬ জুলাই সকাল ৯ টার দিকে দোকানে কাজ করার জন্য আসে। এদিন সন্ধ্যায় অজ্ঞাতনামা একজন ব্যক্তি আমার ছেলের মোবাইল নম্বর হতে আমার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন দিয়ে আমাকে জানায় যে, আমার ছেলে শাহজাহান আলী (২৪) গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ধানমন্ডি পপুলার হাসপাতালে ভর্তি আছেন। আমি সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষনিক পপুলার হাসপাতালে আসি এবং জানতে পারি যে, আমার ছেলেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছে। আমি তাৎক্ষনিক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে মর্গে গিয়ে আমার ছেলের মৃতদেহ দেখে সনাক্ত করি। 

তখন বিভিন্ন ব্যক্তির মাধ্যমে জানতে পারি, গত ১৬ জুলাই আমার ছেলে অজ্ঞাতনামা কোটা বিরোধীদের কর্তৃক গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়ে নিউমার্কেট থানাধীন মিরপুর রোডস্থ টিটি কলেজের বিপরীত পাশে কাদের আর্কেড মার্কেটের সামনে পাকা রাস্তার উপর পড়ে ছিল। চলমান কোটা সংস্কারের অজ্ঞাতনামা বিরোধীরা, জামায়াত, শিবির ও বিএনপির সশস্ত্র আসামীরা এক হয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে লোহার রোড, হকিস্টিক, লাঠি-সোঠা ইত্যাদি অস্ত্রসহ সায়েন্সল্যাব ক্রসিং হতে নিউমার্কেটের দিকে গাছ, লোহার রোলিং ভাংচুর করতে করতে এগিয়ে আসে এবং রাস্তায় থাকা বিভিন্ন স্থাপনায় আগুন দেয়। তখন কোটা বিরোধী অজ্ঞাতনামা আন্দোলনকারীরা, জামায়াত, শিবির ও বিএনপির সশস্ত্র আসামীরা এক হয়ে অতর্কিতভাবে নিউমার্কেট থানাধীন মিরপুর রোডস্থ টিটি কলেজের বিপরীত পাশে কাদের আর্কেড মার্কেটের সামনে পাকা রাস্তার উপর আমার ছেলেকে আক্রমণ করে।

আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন বাতিলে রিটের শুনানি বৃহস্পতিবার

অজ্ঞাতনামা আসামীরা আমার ছেলের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথারী আঘাত করে যার ফলে আমার ছেলে  রক্তাক্ত জখম হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকে। উপস্থিত পথচারীরা আমার ছেলেকে চিকিৎসার জন্য দ্রুত ধানমন্ডিস্থ পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। আমার ছেলের অবস্থা খারাপ দেখে পপুলার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমার ছেলের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত ডাক্তার আমার ছেলেকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে  গত ১৬ জুলাই সন্ধ্যা আনুমানিক ৭ টা ৫ মিনিটের সময় মৃত ঘোষণা করেন।

এমএল/