ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে রেহাই পাইনি ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মিয়াত আলম
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১:৩৮ পূর্বাহ্ন, ৪ঠা সেপ্টেম্বর ২০২৪
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় বরিশালে সারা শরীরে পাঁচটি রাবার বুলেটে গুলিবিদ্ধ হন পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কাছিপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব কাছিপাড়া গ্রামের (৩নং ওয়ার্ড) এর বাসিন্দা খোরশেদুল আলম (সুজন) এর ছোট ছেলে মিয়াত আলম। একই দিনে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের হামলার শিকার হয়ে গুরুতর জখম হন সুজনের বড় ছেলে মারজুক আলম।
যানা গেছে, গত (৪ই আগস্ট) রবিবার দুপুর আনুমানিক তিনটার দিকে মিয়াত আলম (১৪) বরিশাল উদায়ন স্কুলের অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোটা সংস্কার আন্দোলনে মিছিলে যোগ দেয়। মিছিলটি বরিশাল চৌমাথায় করিমকুটির এলাকায় পৌঁছালে পুলিশ মিছিলটি লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি করলে মিয়াত আলমের শরীরে বিভিন্ন জায়গায় একে একে পাঁচটি রাবার বুলেট গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পরে। পরবর্তীতে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা মিয়াত আলমকে গুরুতর জখম অবস্থায় বরিশাল সেন্ট্রাল হসপিটালে নিয়ে যায় এবং সেখানে চিকিৎসা দেওয়া হয়।বরিশাল সেন্ট্রাল হসপিটালে উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে মিয়াত আলমের গুলিবিদ্ধ শরীর থেকে চিকিৎসকরা গুলি উঠাতে সক্ষম হলেও শরীরে দুটো গুলি এখনো উঠাতে পারেনি।কয়েকদিন পরে চিকিৎসা শেষে শিক্ষার্থী মিয়াত আলমকে তাঁর স্বজনরা বাড়িতে নিয়ে আসে।মিয়াত আলম বরিশাল উদায়ন স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী।রোল নং-৬৯. ইউরেনাস্য।
অপরদিকে, ওই দিনই (৪আগস্ট) রবিবার বেলা আনুমানিক এগারোটা দিকে বরিশাল হাতেম আলী কলেজের চৌমাথায় কোটা সংস্কার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপরে স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মী হকিস্টিক,ধারালো রামদা ও লোহার পাইপ দিয়ে শিক্ষার্থীদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে আতর্কিত হামলা চালায়।এসময় মারজুক আলম এর মাথায় হকিস্টিকের আঘাতে মাথা ফেটে যায় এবং বাম হাতে ধারালো অস্ত্রের কোপসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে মারাত্মক জখম হলে আহত অবস্থায় তাকে বরিশাল সেন্ট্রাল হসপিটালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। মারজুক আলম সরকারি হাতেম আলী কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। রোল নম্বর ৪২১ বিজ্ঞান বিভাগ।
আরও পড়ুন: পটুয়াখালীতে পুরোনো সেতু ভেঙ্গে খালে যুবক আহত
আরো জানা গেছে, মিয়াত আলম ও মারজুক আলম এর বাবা সুজন আলম স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মামলা-হামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।সুজনের দোষ ছিলো তিনি বিএনপি'র একজন সক্রিয় নেতা।স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের সময় দীর্ঘ ১৫ বছর নিজ বাড়িতেও ঠিকমতো থাকতে পারতেন না।এমনকি হুমকি-দামকি সহ বিভিন্ন সময়ে তাকে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। খোরশেদুল আলম সুজন তিনি কাছিপাড়া ইউনিয়ন যুবদলের একজন একনিষ্ঠ কর্মী।
আরও পড়ুন: বাউফলে স্কুলের ছাদে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শিক্ষার্থীর মৃত্যু
মিয়াত আলম ও মারজুক আলম-এর মা হাসি আলম অশ্রুঝরা কান্না কন্ঠে সাংবাদিকদের জানান, আমার নিস্পাপ ছেলেরা কোটা সংস্কার আন্দোলনে মিছিল করেছে বিধায় ওদের উপর অবৈধ সরকারের পুলিশ সদস্যরা আতর্কিত ভাবে গুলি করবে এটা মোটেও আমার বোধগম্য নয়। আমার নিষ্পাপ ছোট ছেলে মিয়াত আলম এর শরীরে পাঁচটি গুলি করে পুলিশ। এবং আমার বড় ছেলে মারজুক আলম এর উপর স্বৈরাচারী হাসিনার আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনী ছাত্রলীগ ও যুবলীগের দোসররা হকিস্টিক দিয়ে মাথায় আঘাত করে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ দিলে আমার ছেলের বাম হাত সহ শরীরের বিভিন্ন অংশ জখম হয়।
আমি একজন মা ও একজন অভিভাবক হিসেবে এর সঠিক বিচার দাবি জানাচ্ছি।
জেবি/এসবি