বাঁধ ভেঙ্গে হুমকিতে তিন হাজার একর জমির ধান


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


বাঁধ ভেঙ্গে হুমকিতে তিন হাজার একর জমির ধান

টাঙ্গুয়ার হাওর পাড়ের কৃষকরা স্বেচ্ছাশ্রমে টানা ৭দিন কাজ করেও রক্ষা করতে পারলেন না নজরখালি বাঁধটি। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় কৃষকদের চোখের সামনেই তাদের সোনার ফসল পানিতে ডুবে যাচ্ছে।

বৃহৎ এ টাঙ্গুয়া হাওরটিতে ২৪ হাজার ৭০৩ একর  জলাভূমি থাকলেও হাওরের কান্দাগুলোতে প্রায় ৩ হাজার একর জমিতে টাঙ্গুয়া পাড়ের জয়পুর,গোলাবাড়ি,মন্দিয়াতা,রংচি,রুপনগরসহ বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা বোর জমিতে চাষাবাদ করেছেন। কৃষকদের দাবীর মূখে টাঙ্গুয়া হাওরের ৩টি বাঁধ মেরামতের জন্য নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে হাওরে প্রথম ধাক্কায় যেন পানি না ঢুকে সে লক্ষে পানি বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সুনামগঞ্জ ৮ লক্ষ টাকা বরাদ্ধ দেয়।

চলতি বছর গত দু’দিনে নদীতে আগাম পানি আসায় টাঙ্গুয়া হাওরের নজরখালি বাঁধটি টিকিয়ে রাখতে জয়পুর গোলাবাড়ি গ্রামের লোকজন গত রবিবার রাত থেকে এ পর্যন্ত তারা স্বেচ্ছাশ্রমে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছিলেন।

টাঙ্গুয়া হাওরপাড়ের গোলাবাড়ি গ্রামের খসরুল আলম জানান,শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় নজরখালি বাঁধটি ভেঙ্গে হাওরের ভিতরে পানি ঢুকছে। টাঙ্গুয়া হাওটিতে ২৪ হাজার ৭০৩ একর জলাভূমি থাকলেও চাষাবাদের জমির পরিমাণ রয়েছে মাত্র ৩ হাজার একর। এই ৩ হাজার একর জমির মালিক হচ্ছেন তাহিরপুর ও ধর্মপাশা উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের কৃষকদের। তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ও দক্ষিণ ইউনিয়ন এবং ধর্মপাশা উপজেলার উত্তর ও দক্ষিণ বংশীকুন্ডা ইউনিয়ন। গত রবিবার থেকে তাহিরপুরের গোলাবাড়ি ও জয়পুর গ্রামের লোকজনে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ মেরমতের কাজ করে যাচ্ছিলেন। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ধর্মপাশার রংচি,রুপনগর ও অন্যন্য গ্রামের প্রায় শতাধিক লোক নজরখালি,নাওটানা ও গনিয়াকুড়ি বাঁধে কাজ করতে দেখা গেছে।

অপরদিকে তাহিরপুরের লতিবপুর হাওরের ২’শ এক জমির ধান হুমকির মূখে পড়েছে। উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের পাঠাবুকা,লতিবপুর ও আনন্দনগর গ্রামের কৃষকরা লতিবপুর হাওরে ধান চাষ করেন। হাওরটিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়ন্ত্রনে নেয়ার জন্য এ হাওরের কৃষকদের দাবী গত দুই যুগ ধরে করে আসছে।সম্প্রতি গত তিনদিন ধরে উজানের পানিতে পাটলাই নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ডুবন্তের মুখে পড়েছে লতিবপুর হাওরের প্রায় দুইশত একর জমির ধান। সম্প্রতি শ্রীপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় কৃষকদের সহযোগিতায় ছোট ছোট ক্লোজার নালাগুলো বন্ধ বন্ধ করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের কিছু সহযোগীতা ছাড়া অন্য কোন সহযোগিতা পায়নি এ হাওরে। ফসল রক্ষা বাঁধের জন্য সরকারের পর্যাপ্ত বরাদ্দ থাকলেও বিগত দুই যগ ধরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি এ হাওরে। হাওরের আপর থেকে এর উচ্চতা হবে ৯/১০ ফুট। ফলে সামান্য পানিতেই হুমকির সম্মুখীন হতে হয় লতিবপুর হাওরকে। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত  পালা বদলে কৃষকরা বাঁধে কাজ করে যাচ্ছে। তবে রাতভর কঠোর পরিশ্রম করলেও কাজের কোন কিনরা মেলেনি। নদীর পানি এভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকলে দিনের যে কোন সময়ে হাওরটি পানির নীচে তলিয়ে যেতে পারে।

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রায়হান কবীর বলেন, নদীর পানি অতিরিক্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় টাঙ্গুয়া হাওরের সকল আপরবাঁধ উপচে হাওরে পানি ডুকছে। 

তিনি আরো জানান, নজরখালি বাঁধটি ভেঙ্গে গেছে। নজরখালি বাঁধ এলাকাতে বর্তমানে অবস্থান করছেন তিনি।

এসএ/