৮ মাস ধরে বন্ধ যমুনা সার কারখানার উৎপাদন


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:২৩ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২৪


৮ মাস ধরে বন্ধ যমুনা সার কারখানার উৎপাদন
ছবি: সংগৃহীত

গ্যাস সংকটের কারণে টানা ৮ মাস ৫ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে যমুনা সার কারখানার উৎপাদন। এতে কারখানাটির গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি নষ্টসহ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এদিকে কারখানার সঙ্গে জড়িত প্রায় ৫ শতাধিক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। আর সরকারকে গুণতে হচ্ছে কোটি কোটি টাকার লোকশান। কৃষকরা জানিয়েছেন, ভর্তুকি দিয়ে আমদানি করা সার ব্যবহার করে অর্ধেক ফসলও পাচ্ছেন না তারা। বিএনপির নেতারা লাভজনক এই প্রতিষ্ঠানটি দ্রুত চালুর দাবি করেছেন।


১৯৯১ সালে জামালপুরের সরিষাবাড়ীর তারাকান্দিতে দেশের সারের চাহিদা পূরণ করতে এশিয়া উপমহাদেশের বৃহত্তম দানাদার ইউরিয়া সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান যমুনা ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড স্থাপন করা হয়। ১৭০০ মেট্রিকটন উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন এ কারখানার থেকে দেশের ২১টি জেলায় ইউরিয়া সার সরবরাহ করা হয়।


আরও পড়ুন: সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামিম গ্রেফতার


তবে গ্যাস সংকটের কারণে চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি থেকে বন্ধ হয়ে যায় যমুনা সার কারখানার ইউরিয়া সার উৎপাদন। সার উৎপাদন করতে প্রতিদিন ৪০ হাজার থেকে ৪৫ হাজার ঘনফুট গ্যাসের সরবরাহ প্রয়োজন হয়। আর গ্যাসের প্রেশার দরকার হয় ১৫০ থেকে ১৮০ ঘনফুট। ফলে স্বাভাবিকভাবে ১১০ থেকে ১২০ ঘনফুট প্রেশার দেয়া হয় কারখানার সার উৎপাদনে। কিন্তু হঠাৎ করেই ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২৭ ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করায় প্রেশার নেমে আসে ৮০ থেকে ৯০ ঘনফুটে। ফলে কারখানার সার উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।


৮ মাস ৫ দিন ধরে সার উৎপাদন বন্ধ থাকায় কারখানার মূল্যবান যন্ত্রপাতি নষ্ট হবার আশঙ্কা রয়েছে। আর কারখানার সঙ্গে জড়িত ৫ শতাধিক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে।


স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন, যমুনা সার কারখানা বন্ধ হবার কারণে বাইরে থেকে যে সারগুলো আনা হচ্ছে সেটা দুয়াশাইলের মিঠা পানির সঙ্গে মিলছে না। বাইরে থেকে যে সার আসছে সেগুলো লবণাক্ত পানির সার। লবণাক্ত সার লবণাক্ত মাটির জন্য উপযোগী।


আরও পড়ুন: ডেস্কোর হাই ভোল্টেজের তার যেন মরণ ফাঁদ!


তাদের দাবি, যমুনা নদী থেকে পানি সংগ্রহ করে যে ইউরিয়া তৈরি হচ্ছে তাতে কোনো আয়রণ নেই। ফলে এ অঞ্চলের মাটিতে এ সার ভালো কাজ করে। এতে ফসলও ভালো ফলে।


যমুনা সার কারখানা শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদুল আলম তালুকদার বলেন, ‘৮ মাস ধরে কারখানা বন্ধ। শুধু গ্যাসের কারণে সার উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। কারখানাতে গত ১৫ বছর ধরে লুটপাট করা হয়েছে।’


তিনি আরও বলেন, ‘বিদেশ থেকে যে সার আনা হচ্ছে তাতে দামের অনেক ডিফারেন্স। প্রতি মেট্রিক টন ৯৬ হাজার টাকায় আমরা সার আনছি। সেখানে যমুনা থেকে ২৮ হাজার টাকায় কৃষকদের সার দেয়া সম্ভব হয়।’


আরও পড়ুন: ১৫ বছরে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে মহাসাগর চুরি হয়েছে: নৌ উপদেষ্টা


তবে যমুনা সার কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সালেহ্ মোহা. মোসলেহ উদ্দিন বলেন, ‘এখনো চালু করার কোনো নির্দেশনা পাইনি, আমি রেডি আছি, গ্যাস পেলে চালাতে পারবো।’


এমএল/