জেনে আসি এবাদত হোসেনের অজানা গল্প
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
স্পোর্টস ডেস্ক: অজপাড়াগাঁয়ের ছেলে এবাদতের স্বপ্ন আজ সত্যি হলো। জাতীয় দলের হয়ে খেলা এই যুবক আজ দেশের মুখ উজ্জ্বল করলেন। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট জয়ের পর শুধু তার এলাকা মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ উত্তর ইউপির কাঁঠালতলী গ্রাম নয়, পুরো ক্রিকেট বিশ্ব আজ প্রশংসার পঞ্চমুখ এবাদতের। দারুণ খুশি দেশ, গ্রাম ও সারা বাংলার মানুষ। বুধবার (৫ জানুয়ারি) বিকেলে সরেজমিন এবাদত হোসেন বাড়িতে গিয়ে দেখা গেলো আনন্দোৎসব। মহাখুশি পরিবারের সবাই।
এবাদত হোসেনের বাবা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী ও মা সামিয়া বেগম চৌধুরী বলেন, লেখাপড়ার পাশাপাশি ছোটবেলা থেকেই খেলার প্রতি তার আলাদা টান ছিল। সারাদিন ক্রিকেট খেলত। তার স্বপ্ন ছিল সে কোনো একদিন জাতীয় দলের হয়ে খেলে দেশের মুখ উজ্জল করবে। আজ আমার ছেলে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশকে জিতিয়ে সে দেশের মুখ উজ্জল করেছে। আমাদের ছেলের এমন পারফরম্যান্সে আমরাও খুশি। এলাকার মানুষও খুশি। আমরা তার সব খেলা দেখেছি। নামাজ পড়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য দোয়া করেছি। সকালে এবাদতের সঙ্গে আমাদের মুঠোফোনে কথা হয়েছে। সে খুব খুশি।
এবাদতের চাচাতো ভাই দেলওয়ার হোসেন চৌধুরী ইমন বলেন, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়ে সারা বাংলাদেশের মতো আমরাও গর্বিত, আনন্দিত। আমার ছোট ভাই এবাদত হোসেন চৌধুরী ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটের প্রতি অনুরাগী। আমাদের বিশ্বাস ছিল সে একদিন দেশের মুখ আলোকিত করবে। আজ সে সেই স্বপ্ন পূরণ করেছে।
এবাদতের সহপাঠী আমজাদ হোসেন পাপলু ও এমদাদুর রাজ্জাক রাব্বি বলেন, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সে যে চমক দেখিয়েছে তাতে আমরা খুশি। এলাকার মানুষ ভীষণ খুশি। তার জন্য আজ বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে। এলাকার সবাই তাকে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, এবাদত হোসেন চৌধুরীর বাবা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বর্ডার গার্ডে (বিজিবি) চাকরি করতেন। আর মা সামিয়া বেগম চৌধুরী গৃহিনী। ছয় ভাইবোনের মধ্যে এবাদত হোসেন চৌধুরী দ্বিতীয়। ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেট খেলার প্রতি তার আলাদা টান ছিল। স্থানীয় বিভিন্ন ক্রিকেট ক্লাবে খেলেছেন এবাদত। ভালো বোলিং করতেন বলে এলাকার বাইরেও তার নামডাক ছড়িয়ে পড়ে। এসএসসি পাশ করে ২০০৮ সালে সৈনিক পদে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে যোগ দেন। সেখানেই চাকরির পাশাপাশি বিমানবাহিনীর নিয়মিত ভলিবল খেলতে শুরু করেন। কিন্তু ক্রিকেটের প্রতি তার টান মোটেও কমেনি। ২০১৬ সালে রবি পেসার হান্টের শেষ রাউন্ডে ১৩৯.০৯ কিলোমিটার গতিতে বল করে সবাইকে চমকে দেন এবাদত। নজরে আসেন সবার। এরপর থেকে এবাদতকে আর পেছনে থাকাতে হয়নি। ২০১৯ সালের মার্চে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এবাদতের অভিষেক হয়। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই তার টেস্টে অভিষেক হয়।