সন্তান মোবাইলসহ বিভিন্ন ডিভাইসে আসক্ত? মুক্তির উপায় জানুন


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


সন্তান মোবাইলসহ বিভিন্ন ডিভাইসে আসক্ত? মুক্তির উপায় জানুন

প্রযুক্তি ডেস্ক: তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে স্মার্টফোন আমাদের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় সঙ্গী হয়ে উঠেছে। মোবাইল ছাড়া এক মুহুর্ত চলার কথাও আমরা ভাবতে পারি না। ফলে এখনকার বেশিরভাগ বাচ্চাই মোবাইলের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছে। আবার অনেক অভিভাবকও বাচ্চাদের শান্ত রাখতে স্মার্টফোন বা ট্যাবে গান, কার্টুন কিংবা মজার ভিডিও চালিয়ে দেন। ফলে দিন দিন বাচ্চাদের মোবাইল সহ অন্যান্য ডিভাইসের প্রতি আসক্তি আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

মোবাইল ফোন থেকে নির্গত রেডিয়েশন বড়দের পাশাপাশি বাচ্চাদের মস্তিষ্ককেও ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাছাড়া এর অতিরিক্ত ব্যবহার বাচ্চার চোখেরও ক্ষতি করে। তাই আগে থেকেই প্রত্যেক বাবা-মায়েদের সাবধান হওয়া উচিৎ। 

সন্তানের মোবাইল ফোনের আসক্তি কী করে কমাবেন? দেখে নিন কিছু টিপস।

বাচ্চারা সাধারণত বড়দের অনুকরণ করতে ভীষণ পছন্দ করে। তাই বাচ্চাদের সামনে যত কম মোবাইল ব্যবহার করবেন ততই মঙ্গল। বাচ্চার সামনে মোবাইল হাতে রাখবেন না, কিংবা মোবাইলে গান শোনা, গেইম খেলা, গল্প বা চ্যাট করা এড়িয়ে চলুন। কারণ এগুলি দেখে বাচ্চাদের মনে মোবাইল সম্পর্কে কৌতুহল বাড়তে থাকে।

অবসর সময়ে বাচ্চাকে বিভিন্ন ধরনের সৃজনশীল কাজে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করুন। কোনও জিনিস বানানো, গল্পের বই পড়া, ছবি আঁকা, নাচ, গান কিংবা খেলাধূলা করা অথবা গাছের পরিচর্যা করা, ঘর গোছানো, ইত্যাদি কাজে তাকে ব্যস্ত রাখুন। বাড়ির কাছাকাছি কোনও পার্কে বা খেলার মাঠে নিয়ে যান খেলাধূলার জন্য। আশেপাশের স্পোর্টস ক্লাবে বাচ্চার নাম নথিভুক্ত করুন। প্রকৃতির সাথে পরিচয় করাতে নিয়মিত বাচ্চাকে নিয়ে হাঁটতে বের হন। এতেও কমবে ফোনের আসক্তি।

অনেক বাবা-মা বাচ্চাদের শান্ত করতে মোবাইলে গেইম, গান, কার্টুন কিংবা মজাদার ভিডিও চালিয়ে দেন। কিন্তু এটা করা একেবারেই উচিৎ নয়। বাচ্চার হাতে কোনও পরিস্থিতিতেই মোবাইল ফোন বা ভিডিও গেইম তুলে দেবেন না। এটি একেবারেই বাচ্চার সামগ্রিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে ভালো নয়। তাছাড়া, এতে আপনার বাচ্চার মোবাইল ব্যবহারের বদভ্যাস তৈরি হতে পারে।

এখনকার দিনে বেশিরভাগ মা-বাবাই চাকুরিজীবী। অফিসে খুব ব্যস্ত থাকায় বাচ্চার সঙ্গে খুব বেশি সময় কাটানো হয়ে ওঠে না। ফলে বাচ্চারা ডিভাইসের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়ে। অনেক বাচ্চাই একাকিত্বের কারণে মোবাইল ফোনের প্রতি নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। তাই চেষ্টা করুন দিনের কিছুটা সময় আপনার বাচ্চার সঙ্গে কাটানোর।

অনলাইন ক্লাসের চাপে এখন বাচ্চাদের ডিভাইস ব্যবহার অনিবার্য হয়ে উঠেছে। তাই মোবাইল বা ল্যাপটপ ব্যবহার করতে দিলেও, তার একটা নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিন। দিনের কতটা সময় স্মার্টফোন ব্যবহার করতে পারবে, তা গোড়াতেই ঠিক করুন। অনলাইন ক্লাসের পর আর মোবাইল বা ল্যাপটপ তার হাতে দেবেন না। খাওয়ার সময়, হোমওয়ার্কের সময়, ঘুমানোর সময় এবং বাইরে গিয়ে খেলার সময় তার হাতে মোবাইল দেবেন না। 

বাচ্চারা যেন আপনার অনুপস্থিতিতে মোবাইল ব্যবহার করতে না পারে, তাই মোবাইলে পাসওয়ার্ড দিয়ে রাখুন। সবসময় বাচ্চার আশেপাশে থাকা এবং তাকে স্মার্টফোন ব্যবহার থেকে বিরত রাখা সম্ভব নয়। তাই আপনার ফোনে এমন পাসওয়ার্ড সেট করুন, যাতে আপনি দূরে থাকাকালীনও সে ফোন ব্যবহার করতে না পারে।

ফোনের কোন কোন অ্যাপ আপনার সন্তান বেশি ব্যবহার করে, সেদিকে নজর রাখুন। ঐ অ্যাপগুলো দ্রুত ফোন থেকে মুছে ফেলুন। তাতে কিছুটা হলেও ফোনের প্রতি বাচ্চার আগ্রহ কমবে।