অবশেষে শিক্ষা কর্মকর্তা মাহমুদুল হকের বদলি


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬:৩৮ অপরাহ্ন, ২০শে অক্টোবর ২০২৪


অবশেষে শিক্ষা কর্মকর্তা মাহমুদুল হকের বদলি
শিক্ষা কর্মকর্তা মাহমুদুল হক।

পর্দা নিয়ে কটূক্তি ও একাধিক স্কুলশিক্ষিকাকে হেনস্থার অভিযোগে টানা আন্দোলনের পর অবশেষে লাখাই উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাহমুদুল হককে বদলি করা হয়েছে। 


রবিবার (২০ অক্টোবর) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) আলেয়া ফেরদৌসী শিল্প-এর স্বাক্ষরিত এক আদেশে তাকে বদলি করা হয়। আদেশ কপিতে তার পরবর্তী কর্মস্থল সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় বলে উল্লেখ করা হয়। 


আরও পড়ুন: শিক্ষা কর্মকর্তা মাহমুদুলের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন


এর আগে এসব অভিযোগে তার বিরুদ্ধে স্থানীয় সচেতন নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে মানববন্ধন, স্মারকলিপি ও সর্বশেষ উপজেলা শিক্ষা অফিস ঘেরাও কর্মসূচি পালন করা হয়। এছাড়াও হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ভুক্তভোগী শিক্ষিকারা লিখিত অভিযোগ করেন।


এদিকে শনিবার সকাল থেকে ওই শিক্ষা কর্মকর্তাকে শাস্তি ও গ্রেফতারের দাবিতে ইসলামী সংগ্রাম পরিষদের চেয়ারম্যান আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলীপুরীর নেতৃত্ব উপজেলা শিক্ষা অফিস ঘেরাও ও প্রতিবাদ সভা শুরু হয়। এতে জেলার বিভিন্ন উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। 


এ সময় শিক্ষা কর্মকর্তাকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে চাকরিচ্যুতি ও শাস্তির আওতায় আনা না হলে ইসলামী সংগ্রাম পরিষদেও পক্ষ থেকে জেলা শিক্ষা অফিস ঘেরাও কর্মসূচি দেয়া হবে জানিয়ে আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলীপুরী হুঁশিয়ারি দেন। 


এছাড়াও আন্দোলনরত আলেম-ওলামা শিক্ষক সমাজ ও তৌহিদী জনতার পক্ষ থেকে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক এবং জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর ৫ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হলো- ১. হিজাব বিদ্বেষী, চরিত্রহীন ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা মাহমুদুল হককে এই মুহূর্ত থেকে লাখাই উপজেলায় অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হলো। ২. হিজাব বিদ্বেষী শিক্ষা কর্মকর্তা মাহমুদুল হককে সরকারি চাকরি থেকে সম্পূর্ণ বরখাস্ত করতে হবে। ৩. নতুন শিক্ষা কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে ঘুষ-দুর্নীতিমুক্ত, সৎ, ঈমানদার ও আমলদার ব্যক্তিকে নিয়োগ দিতে হবে। অন্য কোথাও শাস্তিপ্রাপ্ত বা বিতর্কিত ব্যক্তিকে কোনভাবেই নিয়োগ দেওয়া যাবে না। ৪. জেলার পর্দানশীন মুসলিম নারীরা যেনো শিক্ষাক্ষেত্রসহ সকল কর্ম ক্ষেত্রে ইসলামী অনুশাসন মেনে চলার সম্পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করতে পারে এবং কেউ এ ব্যাপারে তাদের বাঁধা দিতে না পারে বা হিজাব খুলতে বাধ্য না করতে পারে, এমনকি হিজাব ও হিজাব পরিহিতদের নিয়ে কটু মন্তব্য করতে না পারে, এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। ৫. শিক্ষা অফিসে বিগত সময়ে সংঘটিত সকল দুর্নীতি, ঘুষ-বাণিজ্য ও অনিয়ম তদন্তের জন্য শক্তিশালী তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দোষী ব্যক্তিদেরকে যথাযথ শাস্তির আওতায় এনে উপজেলা শিক্ষা অফিসকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হবে।


আরও পড়ুন: হবিগঞ্জের ডিসিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ


সচেতন নাগরিক সমাজের প্রধান সমন্বয়ক মিসবাহ উদ্দিন সবুজের সভাপতিত্বে ও মাওলানা আলী আজম ও মুখলিছুর রহমান আজিজির পরিচালনায় কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন—  ইসলামী সংগ্রাম পরিষদ চেয়ারম্যান আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলিপুরী, সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ সাদী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাওলানা লোকমান সাদী, সহ-সাধারণ সম্পাদক মাওলানা জাবের আল হুদা চৌধুরী, দফতর সম্পাদক মাওলানা সাইদুর রহমান, শায়েস্তাগঞ্জ নূরে মদিনা মাদ্রাসার শিক্ষা সচিব মাওলানা জয়নাল আবেদীন, ইসলামী সংগ্রাম পরিষদ নবীগঞ্জ উপজেলা সভাপতি মাওলানা ফজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক  মুফতি শফিকুর রহমান, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা সভাপতি মুফতি মঈনুদ্দিন, মুফতি ফজলুর রহমান সাহেব, মাওলানা আব্দুল হাই, মাওলানা তাজুল ইসলাম সাতাউকী, মাওলানা আব্দুল লতিফ, মুফতি শরিফ উদ্দিন,  মাওলানা খায়রুল ইসলাম, মাওলানা ফয়জুল করিম, মাওলানা মহিম মাহফুজ, মাওলানা  আব্দুল ওয়াদুদ, মাওলানা আবু সাঈদ জুনাইদ আহমেদ, আশরাফুল ইসলাম সোহাগ, মাওলানা আব্দুল্লাহ, মাওলানা আকরাম হুসাইন, মাওলানা সাইফুল ইসলাম, মাওলানা মুবাশ্বির হুসেন, মাওলানা ইলিয়াস আহমদ, মাওলানা হাবিবুর রহমান, মাওলানা ফাইজুল ইসলাম ফয়েজী, শাহিন আলম, কিবরিয়া আহমদ, মাওলানা আমির হুসেন প্রমুখ।


আরএক্স/