শুধু নির্বাচনের জন্য ২ হাজার মানুষ জীবন দেয়নি: সারজিস
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬:৩৩ অপরাহ্ন, ৯ই নভেম্বর ২০২৪
এক বছরের মধ্যে সব কিছু সংস্কার হবে সেটা, কোনো বিবেকবান মানুষ চিন্তা করতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম। তিনি বলেছেন, ‘শুধু নির্বাচনের জন্য ২ হাজার মানুষ জীবন দেয়নি।’
শনিবার (৯ অক্টোবর) সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আন্দোলনে শহীদ পরিবারের সদস্যদের হাতে আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ শেষে এ মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুন: গোয়াইনঘাটে অবৈধ বালু ও পাথর উত্তোলন বন্ধে টাস্কফোর্সের অভিযান
সারিজস আলম বলেন, এই অভ্যুত্থান কিছু লোক দিয়ে হয়নি। যেই ফ্যাসিস্ট সরকারকে ১৬ বছরে বাংলাদেশের নামিদামি রাজনৈতিক সংগঠন এক টনক নড়াতে পারেনি, সেই শেখ হাসিনা কিছু লোকের জন্য এই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়নি। পুরো বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নেমেছিল বলে অভ্যুত্থান ঘটেছিল এবং স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়ে গিয়েছিল।
তিনি বলেন, দুর্নীতিগ্রস্ত সিস্টেমগুলোর জন্য এই মানুষগুলো বিগত ১৬ বছরে বিরক্ত হতে হতে দেয়ালে পিঠ লেগে গিয়েছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের ১৬ বছরে সবচেয়ে বড় দুর্নীতিগ্রস্ত ছিল নির্বাচন কমিশন। এই নির্বাচন কমিশন সংস্কার না করলে কোনোভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন এদেশে আশা করা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, শুধু একটা নির্বাচন কমিশনও সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পারে না। এর পাশাপাশি অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান জড়িত। এর মধ্যে অন্যতম হলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে একটা সিস্টেমের মধ্যে আনতে হবে। তা না হলে নির্বাচন দিলে আবার জবরদখলের ঘটনা পুনরায় ঘটতে পারে, ক্ষমতার অপব্যবহার হতে পারে। আবার এই নির্বাচন ঘিরে কোনো সমস্যা দেখা দিলে সে জন্য একটা বিচারিক প্রক্রিয়া প্রয়োজন। তাই বিচার ব্যবস্থার সংস্কার বিশেষ করে প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: চুনারুঘাটে চা-বাগানে শ্রমিকনেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহারের দাবীতে বিক্ষোভ
সারজিস আলম বলেন, তারা বলছেন না রাষ্ট্রের সবকিছু সংস্কার করে নির্বাচনে য়েতে। তারা এটাও বলছে না আগামী ৫-৬ বছর ধরে সংস্কার করতে। কিন্তু সংস্কারের জন্য ন্যূনতম একটা যৌক্তিক সময়তো লাগবেই। কোনো বিবেকবান মানুষ তার জায়গা থেকে চিন্তা করতে পারবেন না যে এক বছরের মধ্যে সবকিছু সংস্কার সম্ভব হয়ে যাবে। ১৬ বছর ধরে যে সিস্টেমগুলোকে ধীরে ধীরে ধ্বংস করা হয়েছে, সেই সিস্টেমগুলোকে সংস্কার করতে একটা যৌক্তিক সময় প্রয়োজন।
সারিজস আলম আরও বলেন, গত ৫৩ বছরেও বাংলাদেশের সংবিধান পাঁচ বছরের জন্য দেশের মানুষকে একটি জনতার সরকার উপহার দিতে পারেনি। তাই সাংবিধানিক সংস্কারও ব্যাপক প্রয়োজন। প্রত্যেক পাঁচ বছরের জন্য বড় বড় ইশতেহার দিয়ে প্রতিটি সরকার ক্ষমতায় চেয়ারে বসে। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পরপরই তারা ইশতেহার সম্পূর্ণ ভুলে যায়। এটিও ভুলে যায় তারা যে জনতার সরকার।
আরও পড়ুন: গোয়াইনঘাটে হাইড্রোলজি নিয়ে মাস্টারপ্লানের প্রয়োজন
শহীদ পরিবারের সদস্যদের মাঝে চেক বিতরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সারাদেশ থেকে প্রায় ১ হাজার ৬০০ জনের বেশি শহীদ পরিবারের তালিকা আমাদের কাছে এসেছে। আপাতত যাচাই-বাছাই করে নির্বাচিতদের পরিবারের হাতে আর্থিক অনুদানের চেক তুলে দেওয়া হচ্ছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধসহ ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।
এমএল/