এনআইডি সেবা ইসিতে রাখতে আন্দোলনে নামছেন কর্মকর্তারা


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২:২৪ অপরাহ্ন, ৬ই মার্চ ২০২৫


এনআইডি সেবা ইসিতে রাখতে আন্দোলনে নামছেন কর্মকর্তারা
ছবি: সংগৃহীত

এনআইডি সেবা নির্বাচন কমিশন থেকে সরিয়ে নেওয়ার যে পরিকল্পনা হচ্ছে তা রুখে দিতে (ইসি) কর্মকর্তারা প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ, এম, এম, নাসির উদ্দিনের দপ্তরের সামনে জড়ো হয়েছেন। এতে যদি কাজ না হয় আমরা প্রথমে অর্ধবেলা কর্মকর্তা বিরতিতে যাবো, এরপর পূর্ণ বেলা। তাও না হলে সারা দেশে নির্বাচন কমিশনের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেব।


বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) দপ্তরের সামনে এ দাবি নিয়ে অবস্থান করছেন এনআইডি অনুবিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।


আরও পড়ুন: জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদন জেনেভায় উপস্থাপন


জানা যায়, জন্মনিবন্ধন, এনআইডি ও পাসপোর্ট সেবা নিয়ে দুর্ভোগ-জটিলতা নিরসনে স্বতন্ত্র কমিশন প্রতিষ্ঠায় ‘সিভিল রেজিস্ট্রেশন (কমিশন), ২০২৫’ নামে একটি অধ্যাদেশ করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে স্থানীয় সরকার, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগসহ সংশ্লিষ্টদের মতামতও গ্রহণ করছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের এ বৈঠকে ইসি সচিবালয়ের প্রতিনিধিও উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া আইনের খসড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষাপূর্বক মতামত প্রদান সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির প্রথম সভা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অনুষ্ঠিত হয়েছে।


জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যে আইন করা হয়েছিল, ক্ষমতার পালাবদলে আবার তা বাতিল চেয়ে চিঠি দেয় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়। তাদের দাবি অনুযায়ী আইনটি বাতিল হলে এনআইডি সেবা বরাবরের মতই নির্বাচন কমিশনের হাতে থাকবে। এ প্রস্তাব অনুমোদনের পর সরকারকে এখন অধ্যাদেশ জারি করে আইনটি বাতিল ও আগের আইন বহাল করতে হবে।


এ ধারাবাহিকতায় সবশেষ গত ১৬ জানুয়ারি প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিন বলেছিলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা নিজেদের কাছে রাখতে নির্বাচন কমিশনের পাঠানো প্রস্তাব অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। এটা সবচেয়ে দ্রুততম সময়ে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।


এরই মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনও ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন সংস্থা নামে একটি স্বতন্ত্র স্বাধীন সংবিধিবদ্ধ সংস্থা গঠন করার বিষয়ে সুপারিশ করেছে সরকারের কাছে। 


অবশ্য এ নিয়ে বেশ আপত্তি জানিয়ে ২৬ জানুয়ারি সিইসি বলেছেন, নাসির উদ্দিন বলেন, ভোটার এনআইডি কার্ড, ভোটার রেজিস্ট্রেশন যেটা ওনারা বলেছেন পরবর্তী পর্যায়ে একটা আবার স্বাধীন অধিদপ্তর/পরিদপ্তরে হ্যান্ডওভার করার জন্য সাজেস্ট করছেন। আরেকটা কর্তৃপক্ষকে দিলে আমার কি তার উপর নিয়ন্ত্রণ থাকবে? ইটস ইমপসিবল ।”


আরও পড়ুন: বিশ্বমান বজায় রেখে শ্রম আইন সংস্কারের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার


সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‌‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া প্রণয়ন সময়োপযোগী। তবে, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন এবং জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের আওতাধীন না রেখে সম্পূর্ণ স্বাধীন, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পরিচালনা করা সমীচীন।সেই সঙ্গে বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিকের জন্মনিবন্ধন সনদ, জন্মনিবন্ধন সনদের ভিত্তিতে এনআইডি এবং এনআইডি'র ভিত্তিতে পাসপোর্ট প্রাপ্তির প্রক্রিয়ায় অনাবশ্যক জটিলতা এবং জনদুর্ভোগ পরিহার করা আবশ্যক।এই উদ্দেশ্যে লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ এবং নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে প্রস্তাবিত অধ্যাদেশ পরিমার্জন করে উপস্থাপন করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে সিভিল রেজিস্ট্রেশনের পদ্ধতি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো সুসংহত করতে একটি সংবিধিবদ্ধ, স্বাধীন কমিশন প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে আইন সংশোধন সমীচীন উল্লেখ করে সিভিল রেজিস্ট্রেশন (কমিশন), ২০২৫’ এর খসড়া নিয়ে মতামত নেওয়া হচ্ছে।


আরএক্স/