চুয়াডাঙ্গায় রোটা ভাইরাসের আক্রমণ, ১৭১ জন হাসপাতালে ভর্তি


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


চুয়াডাঙ্গায় রোটা ভাইরাসের আক্রমণ, ১৭১ জন হাসপাতালে ভর্তি

আফজালুল হক: চুয়াডাঙ্গায় তীব্র শিতে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। এতে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষ। আর এই শীতে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। এর মধ্যে  রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন।  

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে সুত্রে জানা যায়,  গত ১ সপ্তাহে রোটা ভাইরাসে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে শিশুসহ ১৭১ জন ভর্তি হয়েছেন। এছাড়াও প্রতিদিন বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১০০-১৫০ ডায়রিয়া রোগী। এরমধ্যে ৮০ শতাংশ শিশুরাই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে। সর্বশেষ গতকালই ২৪ জন শিশুসহ ২৪ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে। 

শুক্রবার রাতে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, দু’টি কক্ষ নিয়ে ডায়রিয়া ওয়ার্ড। দু’টি কক্ষ সব সময় রোগীতে পরিপূর্ণ থাকে। কক্ষের কোনোটিতে বেড নেই। এই শীতে মেঝেতেই শিশু রোগীদের থাকতে হচ্ছে। বাইরের বারান্দা ও সিড়িতে রোগীদের চিকিৎসা চলছে। তিল পরিমান ঠাই নেই। সব মিলিয়ে রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। 

মাহমুদা খানম নামে একজন বলেন, তীব্র শীতে হাসপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে কোন জায়গা নাই। আজ দুদিন যাবত সিড়ির উপরেই আমার ৭ বছরের বাচ্চার চিকিৎসা চলছে। শীতে জরাজীর্ণ হতে হচ্ছে আমাদের।

বিল্লাল হোসেন নামে এক বৃদ্ধ বলেন, তিনদিন যাবত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। গতকাল সকালে সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। ওয়ার্ডে কোন জায়গা নেই। এই শীতে বারান্দায় চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। 

ডায়রিয়া ওয়ার্ডে দায়িত্বরত নার্সরা  জানান, শীতের তীব্রতা বাড়ায় ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই শিশু। চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের। 

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আসাদুর রহমান মালিক খোকন বলেন, এই শীতে রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে৷ সিংহভাগই শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে।  মূলত রোটা ভাইরাস মল ও মুখ গহ্বর দিয়ে খাদ্যনালীতে প্রবেশ করে। এই ভাইরাস আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে আছে এবং একজনের কাছ থেকে অন্যজনের দেহে প্রবেশ করে। সংক্রমিত পানি, খাবার এবং খেলনা বিভিন্ন আসবাবপত্র থেকেও আক্রান্ত হতে পারে। ইনফিউবেশন প্রিয়ড ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টা অর্থাৎ রোটা ভাইরাস এ সংক্রমণ হওয়ার ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। এ রোটা ভাইরাস প্রতিরোধে মায়ের দুধ কার্যকর। যেসব শিশু ছয়মাস বয়স পর্যন্ত শুধু মায়ের দুধ খায়, তাদের ঝুঁকি অনেক কম থাকে। আর ডায়রিয়া হলে শিশুর স্বাভাবিক খাবার বন্ধ করা যাবে না। এর ফলে শিশু আরও বেশি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ঝুঁকিতে থাকে।