Logo

জঞ্জাল মুক্ত হাতিরঝিলে প্রশান্তির নিঃস্বাস

profile picture
জনবাণী ডেস্ক
১৭ মে, ২০২৫, ০৫:২৫
43Shares
জঞ্জাল মুক্ত হাতিরঝিলে প্রশান্তির নিঃস্বাস
ছবি: সংগৃহীত

দুর্গন্ধ রোধ ও মশার বংশ বৃদ্ধি হ্রাস করতে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে রাজউক পাশাপাশি পরিকল্পিত সবুজায়ন করতে কাজ করছে

বিজ্ঞাপন

রাজধানীর হাতিরঝিল জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত। এক সময় হাতিরঝিল ছিল ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়। গোটা এলাকায় ছিল বস্তি। সেখানে এখন গড়ে তোলা হয়েছে ছবির মতো একখণ্ড সৌন্দর্য বাগান।

হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ী সমন্বিত উন্নয়ন প্রকল্পটি ২০০৭ সালে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) গ্রহণ করেন। যা দেশীয় পরামর্শকদের তৈরি করা নকশা ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে রাজউকের অধীনে বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর স্পেশাল ওয়ার্কস অর্গানাইজেশন। বাস্তবায়নের পর ২০১৩ সালের ২ জানুয়ারি উদ্বোধন করে সরকার।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

হাতিরঝিল প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পর দৃষ্টিনন্দন ভাবে উপস্থাপিত হলেও জুলাই বিপ্লবের পূর্বে হাতিরঝিল একটি ময়লা আবর্জনাপূর্ণ পুতিগন্ধময় জঞ্জালে পরিণত হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান রাজউক প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থাপনায় ও নিবিড় তত্ত্বাবধানের ফলে ফিরে পেতে যাচ্ছে হাতিরঝিলের পুরনো রূপ। সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, নেই আগের মত সেই ময়লা, সেই হকারদের উপদ্রব কিংবা অনিয়ন্ত্রিত মাদকের আখড়া।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম প্রায়শই হাতিরঝিল এলাকা পরিদর্শন করেন এবং হাতিরঝিলের নান্দনিকতা ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন বলে জানা যায়।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্পটি গড়ে উঠেছে ৩০২ একর জমির ওপর। ঢাকা মহানগরের নান্দনিক সৌন্দর্য বাড়ানো, রাজধানীর পূর্ব ও পশ্চিম অংশের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ সার্বিক পরিবেশের উন্নয়নই এ প্রকল্পের লক্ষ্য। যানবাহন চলাচলের জন্য প্রকল্পে চারটি সেতু, চারটি উড়াল সড়ক, প্রায় ১৭ কিলোমিটার সড়ক, ২৬০ মিটার সেতুপথ এবং প্রায় ১২ কিলোমিটার হাঁটার পথ নির্মাণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বিনোদনের জন্য উদ্যান স্থান, ওয়াটার কোর্ট, পানিতে চলাচলের ট্যাক্সি টার্মিনাল ও অ্যাম্ফিথিয়েটার নির্মাণ করে প্রকল্পটি। ওয়াটার বোট ও চক্রাকার বাস সার্ভিস চালু রয়েছে।

প্রকল্প এলাকা উন্মুক্ত করে দেয়ার পর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার মানুষ সেখানে ভিড় করছেন। অনেকেই মানুষ সপরিবারে বেড়াতে আসছেন। শুরুতে রাতে আলোকসজ্জার জন্য হাতিরঝিল অন্যরকম রূপ ধারণ করলেও বর্তমানে এমনটা আর লক্ষ্য করা যায় না। হাতিরঝিল ছোট বড় মিলিয়ে রয়েছে কয়েকশো রেস্টুরেন্টে যেখানে ঘুড়তে আসা দর্শনাথিদের রসনা মেটায়। 

বিজ্ঞাপন

তবে উদ্বোধনের পর থেকে বিভিন্ন গাছপালা ও ঝোপঝাড়ের অযাচিত বৃদ্ধির ফলে জঞ্জালে পরিনত হয়েছিল হাতিরঝিল। পাশাপাশি মশার বিস্তার ও পানির দুর্গন্ধ নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল হাতিরঝিল প্রকল্প। বর্তমানে হাতিরঝিল প্রকল্প এলাকায় ঝোপঝাড় অপসারণের ফলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে অপরদিকে মশার বংশ বৃদ্ধির হার কমেছে অনেকখানি।

বিজ্ঞাপন

হাতিরঝিল প্রকল্প বাস্তবায়নের পর বিদেশি অনেক গাছ লাগানো হলেও লাগানো হয়নি দেশীয় আম, কালোজাম, বুনোজাম, আমলকী, আমড়া, জলপাই, কামরাঙা ইত্যাদি গাছ।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) জানায়, হাতিরঝিলের চারপাশে ১৬ কিলোমিটার একমুখী সড়ক। ২০১৬ সালে এই সড়কে যাত্রী পরিবহনে চালু হয়। এখন এই রুটে ১২টি বাস চলাচল করছে। চক্রাকার বাস সার্ভিস পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এইচআর ট্রান্সপোর্ট। ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রাজউক। প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে বিরতিহীনভাবে রাত ১১টা পর্যন্ত এই বাস চালু থাকে। রাজধানী জুড়ে লক্কর-ঝক্কর বাস চলাচল করলেও হাতিরঝিল এলাকায় দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। চক্রাকার বাস সার্ভিসে যাত্রীরা টিকিট কাউন্টার থেকে টিকিট সংগ্রহ করে চরেন বাসে। নির্ধারিত সময় শেষে স্টপিজ ছেড়ে যায় বাস, এতে করে এই রুটে চলাচলকারী যাত্রীদের মধ্যে আনন্দের সাপ লক্ষ্য করা যায়।

বিজ্ঞাপন

এই রুটি চলাচলকারী কয়েকজন বাস যাত্রী জানান, হাতিরঝিলে চক্রাকার বাস সার্ভিস চালুর পর থেকে তারা খুব দ্রুত সময়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন। বাস গুলোর যাত্রী সেবায় নেই কোন ঝামেলা। নিদিষ্ট টিকিট কাউন্টার থেকে টিকিট কেটে বাসে উঠে তারা। সিট ছাড়া দাঁড়িয়ে কোন যাত্রী না নেওয়া ও সঠিক সময়ে গন্তব্যের যাওয়ার কারণে দিন দিন বাড়ছে যাত্রীচাপ।

বিজ্ঞাপন

এক সময় হকারদের দখলে চলে যায় হাতিরঝিল পাশাপাশি বাড়তে থাকে ছিনতাই ও হত্যাকাণ্ড এ-সব বিষয় সামাল দিতে বেগ পেতে হয় রাজউক কর্মকর্তাদের। দীর্ঘ চেষ্টার পর হকার মুক্ত হয়েছে হাতিরঝিল এবং ছিনতাই-হত্যাকাণ্ড নেমে এসেছে শূন্যের কোঠায়। হাতিরঝিল দেখভাল করার জন্য সরাসরি যুক্ত রয়েছে কয়েকশো আনসার সদস্য। বিভিন্ন এলাকায় ও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট রয়েছে সিসিটিভির আওতায়।

বর্তমান হাতিরঝিলের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে 

বিজ্ঞাপন

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম জনবাণীকে বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র হলো হাতিরঝিল প্রকল্প। ইতোমধ্যে এই প্রকল্প এলাকার পরিবেশ ঠিক রাখতে বুয়েট থেকে দুই জন পরামর্শক নিয়োগ করা হয়েছে। পানির দুর্গন্ধ রোধ ও মশার বংশ বৃদ্ধি হ্রাস করতে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে রাজউক পাশাপাশি পরিকল্পিত সবুজায়ন করতে কাজ করছে রাজউক। 

২০১৭ সালের ১৩ এপ্রিল এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহত ফোয়ারা চালু হয় হাতিরঝিলে। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর এখন থেকে প্রতিদিন সন্ধ্যায় সংগীতের তালে তালে বর্ণিল আলোর সঙ্গে হাতিরঝিলে দেখা যেতো কিন্তু উদ্বোধনের কিছুদিন পর থেকে এ দৃশ্য আর চোখে পরেনা। ১ হাজার ৯৮০ বর্গমিটারের এ রঙিন ফোয়ারার পানি ১০ মিটার থেকে সর্বোচ্চ ৮০ মিটার পর্যন্ত ওপরে উঠতে দেখা যেত। হাতিরঝিলে পরিবেশ সুন্দর হলেও রাতে অন্ধকারে ডুবে থাকে দৃষ্টিনন্দন এই প্রকল্পটি।

এসডি/

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD