আদানির বকেয়া পরিশোধ করল বাংলাদেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:৩৫ পূর্বাহ্ন, ২রা জুলাই ২০২৫

ভারতের আদানি পাওয়ারের কাছ থেকে আমদানি করা বিদ্যুতের বকেয়া পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ। জুন মাসে এককালীনভাবে প্রায় ৪৩৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিশোধের মধ্য দিয়ে সব ধরনের পাওনা, পরিবহন ব্যয় এবং চুক্তিভিত্তিক অন্যান্য দায় মিটিয়ে ফেলেছে সরকার।
ভারতের বার্তা সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, এ পরিশোধের মাধ্যমে আদানি পাওয়ারের সঙ্গে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ আমদানিকেন্দ্রিক সব আর্থিক জটিলতার নিষ্পত্তি হয়েছে। এখন বাংলাদেশের আর কোনো বকেয়া নেই। বরং ভবিষ্যতের জন্য দুই মাসের সমপরিমাণ বিলের ঋণপত্র (LC) ও সার্বভৌম গ্যারান্টি প্রদান করেছে বাংলাদেশ।
বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু থাকবে নিয়মিত
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) সূত্রে জানা গেছে, পাওনা সংক্রান্ত সব জটিলতা মিটে যাওয়ায় এখন ভারতের ঝাড়খণ্ডে অবস্থিত গড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু রাখতে অনুরোধ জানানো হয়েছে আদানি পাওয়ারকে।
ভারতের এনডিটিভি জানিয়েছে, গত তিন-চার মাস ধরে বাংলাদেশ ধাপে ধাপে প্রতি মাসে ৯০–১০০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করে আসছিল। অবশেষে জুন মাসে একসঙ্গে বিশাল অঙ্কের এই অর্থ পরিশোধ করা হয়, যা এই খাতে এককালীন সর্বোচ্চ পরিশোধ হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে।
২৫ বছর মেয়াদি চুক্তি
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর আদানি পাওয়ারের সঙ্গে ২৫ বছরের একটি বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (PPA) করে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ বিভাগ। সেই চুক্তির আওতায় ভারতের ঝাড়খণ্ডের গড্ডায় ২০০ কোটি ডলার ব্যয়ে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে আদানি গোষ্ঠী। সেখান থেকেই বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি করা হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মন্তব্য
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিশোধ দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতা রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলেও, এত বড় অঙ্কের অর্থ একসঙ্গে পরিশোধের ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কতটা চাপের মুখে পড়েছে—তা নিয়েও আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।
এদিকে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প হওয়ায় পরিবেশগত উদ্বেগ এবং চুক্তির শর্তাবলির স্বচ্ছতা নিয়েও শুরু থেকেই বিতর্ক রয়েছে।
আরএক্স/