হিমাচলে ভারী বৃষ্টির সঙ্গে ভয়াবহ বন্যা-ভূমিধস, নিহত ৬৩
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০২:১৮ অপরাহ্ন, ৪ঠা জুলাই ২০২৫

ভারতের হিমাচল প্রদেশ বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়েছে। রাজ্যটিতে ভারী বৃষ্টিপাত, আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে কমপক্ষে ৬৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। চলমান এই দুর্যোগে সেখানে শত শত কোটি রুপির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া রাজ্যটিতে ইতোমধ্যে পাঁচ শতাধিক রাস্তা যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। একইসঙ্গে বিদ্যুৎ ও পানির সংকটে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ।
শুক্রবার (০৪ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি।
গণমাধ্যমটি বলছে, ভারতের হিমাচল প্রদেশে প্রবল ভারী বর্ষণের ফলে মেঘভাঙা বৃষ্টি, আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে এখন পর্যন্ত ৬৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও অসংখ্য মানুষ। সরকার জানিয়েছে, প্রায় ৪০০ কোটি রুপির সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তবে প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও অনেক বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে সৌদি যুবরাজের গোপন বৈঠক
এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের সব জেলায় আগামী সোমবার (০৭ জুলাই) পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি রয়েছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলা হচ্ছে মান্ডি। সেখানে এখন পর্যন্ত ১৭ জন মারা গেছেন ও কমপক্ষে ৪০ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
অন্যান্য জেলা — কাংরা (১৩ জন), চাম্বা (৬), শিমলা (৫) সহ বিলাসপুর, হামিরপুর, কিন্নর, কুল্লু, লাহুল স্পিতি, সিরমাউর, সোলান ও উনা থেকেও প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। পুরো রাজ্যে এখন পর্যন্ত ১০০ জনের বেশি আহত, শতাধিকের বেশি বাড়ি ধ্বংস ও ১৪টি সেতু বন্যার পানিতে ভেসে গেছে।
রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের বিশেষ সচিব ডি.সি. রানা বলেন, “আমাদের সিস্টেমে ইতোমধ্যে ৪০০ কোটির ক্ষয়ক্ষতির হিসাব উঠেছে। তবে প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি আরও বেশি হবে। আমরা এখন জীবন রক্ষায়, উদ্ধারকাজে ও পুনর্গঠনে মনোযোগ দিচ্ছি।” সম্পূর্ণ ক্ষয়ক্ষতির হিসাব পেতে আরও সময় লাগবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: মহররমের আয়োজনে অনুপস্থিত আয়াতুল্লাহ খামেনি, চলছে গুঞ্জন
এদিকে চলমান এই দুর্যোগে রাজ্যে ৫০০ টিরও বেশি রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে এবং ৫০০টিরও বেশি বিদ্যুৎ ট্রান্সফর্মার অচল হয়ে পড়েছে। এর ফলে হাজার হাজার মানুষ বিদ্যুৎ ও পানির সংকটে পড়েছেন। খাদ্য সংকটও তৈরি হয়েছে, যা মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা আরও অনেকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
এনডিটিভি বলছে, ভারী বর্ষন, বন্যা ও ভূমিধসে মৃত ৬৩ জন ছাড়াও প্রায় ৩০০ গবাদি পশু মারা গেছে। যার মধ্যে ১৬৪টি গরুও রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া বেশ কিছু ভিডিওতে বন্যায় নদীর ভয়ঙ্কর রূপ এবং কাদামাটির স্রোতে পুরো গ্রাম ও বাড়িঘর ভেসে যেতে দেখা গেছে।
এছাড়া মানুষকে ধসে পড়া টিলার ধ্বংসস্তূপের মধ্য দিয়ে বাঁচার আকুতি করতেও দেখা গেছে। এই বিপর্যয়ের মধ্যে কর্তৃপক্ষ উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে, তবে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানা গেছে।
এমএল/