ইরানের মজুদ ইউরেনিয়াম নিয়ে শঙ্কিত ইসরায়েল!


Janobani

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০৭:১৮ অপরাহ্ন, ১১ই জুলাই ২০২৫


ইরানের মজুদ ইউরেনিয়াম নিয়ে শঙ্কিত ইসরায়েল!
ছবি: সংগৃহীত

ইরানের পরমাণবিক স্থাপনা ধ্বংসে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের যৌথ হামলার পরও তেহরানের কাছে পারমাণবিক বোমা তৈরির মতো যথেষ্ট সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম রয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় ইরান তাদের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রকল্প জোরেশোরে এগিয়ে নিতে পারে বলে আশঙ্কা করেছে ইসরায়েল।


বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) ইসরায়েলের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তার বরাতে এমন খবর প্রকাশ করেছে মার্কিন গণমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস।


শুক্রবার (১৩ জুন) থেকে ইরানের ওপর হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ইরানের সামরিক ঘাঁটি ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে একের পর এক হামলা চালায় তারা। পাশাপাশি দেশটির গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা, গোয়েন্দা ও সামরিক কমান্ডার এবং বিজ্ঞানীদেরও হত্যা করে ইসরায়েল।


জবাবে ইসরায়েলের হাইফা, তেল আবিবসহ বিভিন্ন বড় শহরের দিকে ইরান টানা ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। এগুলোর কিছু কিছু স্পর্শকাতর এলাকায় আঘাত হানে। তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নীতি অনুযায়ী, হামলার আসল জায়গাগুলোর তথ্য প্রকাশ করাটা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর জন্য নিষিদ্ধ।


আরও পড়ুন: এরদোয়ানের বড় সাফল্য, কুর্দিস্থানের যোদ্ধাদের নতুন অধ্যায় শুরু


এক সপ্তাহের মাথায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন পদক্ষেপ নেওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম।


মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার মন্ত্রিসভার সদস্যরা ওই হামলার পর থেকেই দাবি করে আসছেন, যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনাই ‘পুরোপুরি ধ্বংস’ হয়ে গেছে। ৩০ হাজার পাউন্ড ওজনের বিশেষ বাঙ্কারবিধ্বংসী বোমার মাধ্যমে এ হামলা চালানো হয়েছে।


গত সপ্তাহে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের মুখপাত্র শন পারনেল সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে অন্তত এক থেকে দুই বছর পেছনে ঠেলে দিয়েছি। অন্তত প্রতিরক্ষা দপ্তরের গোয়েন্দা বিভাগের পর্যালোচনায় এমনটাই মনে করা হচ্ছে। 


যদিও শন পারনেল তার এই দাবি প্রমাণে কোনো তথ্য উপস্থাপন করেননি। পারনেল বলেন, গোয়েন্দা বিশ্লেষকদের হিসাব অনুযায়ী, আসল সময়টা সম্ভবত দুই বছরের কাছাকাছি।


আরও পড়ুন: ছয় হাজারেরও বেশি প্রবাসীকে ফেরত পাঠাল কুয়েত


ইসরায়েলের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রে থাকা ১৮ হাজার সেন্ট্রিফিউজের বেশির ভাগই ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে, ৬০ শতাংশ মাত্রায় সমৃদ্ধ সব ইউরেনিয়াম নষ্ট হয়নি। কিছু ইউরেনিয়াম বিশেষ পাত্রে আলাদা করে সংরক্ষণ করা ছিল, যা এখনো ইরানি বিজ্ঞানীরা ব্যবহার করতে পারেন। 


নিউইয়র্ক টাইমসকে সাক্ষাৎকার দেওয়া ইসরায়েলি ওই কর্মকর্তা বলেন, ইসরায়েলের বিশ্বাস, ১০ মাস আগে হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহ নিহত হওয়ার পর ইরান যে জোরেশোরে পরমাণু বোমা বানানোর চেষ্টা চালাচ্ছে, তার যথেষ্ট প্রমাণ ইসরায়েলের হাতে আছে। এ–সংক্রান্ত প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও ভাগাভাগি করা হয়। এরপরই ইসরায়েল ইরানের ওপর একের পর এক হামলা চালানোর নিজস্ব পরিকল্পনাকে এগিয়ে নেয়।


তবে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাসচিব রাফায়েল গ্রোসি বলেন, হামলার আগেই ইরান তাদের অনেক ইউরেনিয়াম মজুত সরিয়ে ফেলেছিল। 


অবশ্য, ইসরায়েলি ওই কর্মকর্তা নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, কেউ যদি ইউরেনিয়াম সংগ্রহের চেষ্টা করে, তবে ইসরায়েল তা ধরে ফেলবে এবং আবার হামলা চালাবে।


এমএল/