গাজায় ইসরায়েলের লাগামহীন বর্বরতা, নিহত ছাড়াল ৫৮ হাজার


Janobani

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০১:২৩ অপরাহ্ন, ১৪ই জুলাই ২০২৫


গাজায় ইসরায়েলের লাগামহীন বর্বরতা, নিহত ছাড়াল ৫৮ হাজার
ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের টানা বিমান হামলায় নিহতের সংখ্যা ভয়াবহভাবে বেড়ে ৫৮ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। সর্বশেষ একদিনে আরও অন্তত ৯৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু। 


সোমবার (১৪ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।


আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, রবিবার ইসরায়েলি বাহিনী গাজার জনবহুল বাজার, পানি সংগ্রহ কেন্দ্রসহ একাধিক স্থানে ভয়াবহ বিমান হামলা চালায়। গাজা শহরের একটি বাজারে হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ১৭ জন, যাদের মধ্যে আছেন গাজার প্রখ্যাত চিকিৎসক ডা. আহমেদ কান্দিল। অপরদিকে, মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের একটি পানি সংগ্রহ কেন্দ্রে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ১০ জন, যাদের বেশিরভাগই শিশু।


প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, শিশুরা পানি সংগ্রহের লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল, তখনই সেখানে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা একজন যোদ্ধাকে লক্ষ্যবস্তু বানাতে চেয়েছিল, কিন্তু ‘কারিগরি ত্রুটির’ কারণে ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে পড়ে। তবে এ দাবির পক্ষে কোনো স্বাধীন সূত্র থেকে তথ্য নিশ্চিত করা যায়নি।


গাজায় জ্বালানির অভাবে অধিকাংশ পানিশোধন ও নিষ্কাশন কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে সাধারণ মানুষকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সীমিতসংখ্যক পানিকেন্দ্রে যেতে হচ্ছে। এ সুযোগেই ঘটছে ভয়াবহ হামলা।


ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৮ হাজার ২৬। এছাড়া আহত হয়েছেন অন্তত ১ লাখ ৩৮ হাজার ৫০০ জন।


জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফ জানিয়েছে, শুধু জুন মাসেই গাজায় ৫ হাজার ৮০০ শিশু অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ১ হাজার শিশুর অবস্থা সংকটাপন্ন। রবিবার অপুষ্টিতে ভুগে আরও একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে।


ইউনিসেফ জানিয়েছে, “শিশুদের দেহ গলে যাচ্ছে। এটি শুধু পুষ্টির সংকট নয়, এটি শিশুদের বেঁচে থাকার জরুরি অবস্থা।”


এদিকে, বাংলাদেশসহ ২০টিরও বেশি দেশ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘পদক্ষেপ’ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও রাষ্ট্র গাজার পরিস্থিতিকে ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’ হিসেবে অভিহিত করছে।


এই পরিস্থিতি আর শুধু একটি সামরিক সংঘাত নয় — এটি এক গভীর মানবিক সংকট। শিশু, নারী, সাধারণ মানুষ — কেউই নিরাপদ নয়। গাজার জনসংখ্যা এখন মৃত্যু, ক্ষুধা, পিপাসা ও ভয়ের চরম এক বাস্তবতার মধ্য দিয়ে দিন পার করছে।


আরএক্স/