চঞ্চল চড়ুইয়ে সেজেছে মৌলভীবাজারের আকাশ
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২:০৪ অপরাহ্ন, ১৬ই জুলাই ২০২৫

মৌলভীবাজার শহরের ব্যস্ততম এলাকাগুলো এখন যেন রূপ নিয়েছে হাজার হাজার চড়ুই পাখির অভয়ারণ্যে। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর শহরের আকাশে ও বৈদ্যুতিক তারে ভেসে বেড়ায় চঞ্চল এই পাখিদের কিচিরমিচির শব্দ। তাদের দলবেঁধে আগমন ও অবস্থান শহরবাসীর কাছে এক অনন্য প্রাকৃতিক দৃশ্য হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন: মৌলভীবাজারে ফেলে দেওয়া আঁশ বিক্রি করে স্বাবলম্বী শত শত পরিবার
চড়ুই পাখি মানুষের আশপাশে থাকতে ভালোবাসে। শহরের কোলাহল, যানবাহনের শব্দ ও কংক্রিটের জঙ্গলের মধ্যেও তারা ঠাঁই করে নিয়েছে নিজেদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়। প্রতিদিন সূর্যাস্তের পর থেকে দলবদ্ধভাবে ছুটে আসে এরা। হাজার হাজার চড়ুই পাখির এমন উপস্থিতি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকেও ছুটে আসেন প্রকৃতিপ্রেমী ও উৎসুক জনতা। অনেকে ছবি তুলে রাখেন স্মৃতির খাতায়।
অবশ্য এই পাখিদের শান্তিপূর্ণ বসবাসে কিছু ব্যাঘাতও দেখা যাচ্ছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রাতে কিছু অসাধু যুবক চড়ুই পাখি শিকার করে থাকে, যা প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও পরিবেশের জন্য হুমকি স্বরূপ। এই বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এলাকাবাসী।
সিলেট বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘চড়ুই পাখির সংখ্যা কমেছে, এটা সত্য। তবে তারা যেখানে নিরাপদ মনে করে ও খাবার পায়, সেখানেই বাসা বাঁধে। সম্ভবত মৌলভীবাজারে এমন পরিবেশই তৈরি হয়েছে, তাই এখানে পাখির সংখ্যা বাড়ছে।’
তিনি আরও বলেন, “যদি নিরাপদ পরিবেশ ও প্রজননের সুযোগ থাকে, তবে চড়ুইদের সংখ্যা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে।”
নিরাপদ আশ্রয় ও খাদ্যের সংকটে চড়ুই পাখি আজ বিলুপ্তির ঝুঁকিতে। অথচ এরা প্রাকৃতিক কীটনাশক হিসেবে কাজ করে এবং পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই চঞ্চল পাখিদের রক্ষা করতে প্রয়োজন সামাজিক সচেতনতা, আইন প্রয়োগ এবং পরিবেশবান্ধব নগর পরিকল্পনা।
আরও পড়ুন: মৌলভীবাজার সীমান্ত দিয়ে আরও ৭৮ জনকে পুশইন
চড়ুই পাখির কিচিরমিচিরে মুখর সন্ধ্যা মৌলভীবাজারবাসীর জন্য শুধু এক নিসর্গের অভিজ্ঞতা নয়, বরং প্রাকৃতিক সহাবস্থানের এক জীবন্ত উদাহরণ। এই সৌন্দর্য ধরে রাখতে হলে আমাদের সবাইকে হতে হবে আরও সচেতন, দায়িত্বশীল ও প্রকৃতিপ্রেমী।
এসডি/