গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে হামলা, জেলাজুড়ে দিনভর সহিংসতা
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬:০৭ অপরাহ্ন, ১৬ই জুলাই ২০২৫

গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে বুধবার (১৬ জুলাই) বিকেলে এক চাঞ্চল্যকর হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। বিকেল ৪টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এসময় কারারক্ষীদের সঙ্গে হামলাকারীদের সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন কারারক্ষী আহত হন। তবে এখন পর্যন্ত কারাগার থেকে কোনো বন্দি পালানোর খবর পাওয়া যায়নি।
হামলার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসে সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনী। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্রিয় তৎপরতায় হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
এ ঘটনার আগে ও পরে গোপালগঞ্জ জেলাজুড়ে একাধিক সহিংসতা, অবরোধ, অগ্নিসংযোগ এবং পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে, যা গোটা জেলার পরিস্থিতিকে চরম উত্তেজনাকর করে তোলে।
সকাল: সদর উপজেলার গান্ধীয়াশুর এলাকার ঘোনাপাড়া-টেকেরহাট আঞ্চলিক সড়কে গাছ কেটে রাস্তায় অবরোধ সৃষ্টি করে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় সেখানে গেলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়িবহরের ওপর হামলা চালানো হয়।
সকাল ১১টার পর: গোপালগঞ্জ সদরের উলপুরে পুলিশের একটি গাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন এবং আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
দুপুর: শহরের কেন্দ্রস্থলে এনসিপি’র পূর্বঘোষিত পদযাত্রা ও সমাবেশ চলাকালে ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী হঠাৎ করে হামলা চালায়। তারা সমাবেশস্থলে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।
সমাবেশ শেষে: এনসিপির নেতাকর্মীরা ফিরে যাওয়ার সময় একদল সশস্ত্র ব্যক্তি চারদিক থেকে তাদের ঘিরে ফেলে হামলার চেষ্টা করে। এসময় পুলিশের গাড়িসহ এনসিপির যানবাহন আটকে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে।
গোপালগঞ্জ জেলাজুড়ে চলমান সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ ও কারাগারে হামলার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেছে। সেনাবাহিনী ও পুলিশ টহল বাড়িয়েছে এবং জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, জেলার সার্বিক পরিস্থিতি এখনও উত্তপ্ত, তবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সম্ভাব্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
সম্প্রতি এনসিপি ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত বিভিন্ন সংগঠনের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছিল। এরই জের ধরে একাধিক সংঘর্ষ ও সড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
আরএক্স/