গোপালগঞ্জবাসী কেউ ঘর থেকে বের হবেন না: আসিফ মাহমুদ


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:১১ অপরাহ্ন, ১৬ই জুলাই ২০২৫


গোপালগঞ্জবাসী কেউ ঘর থেকে বের হবেন না: আসিফ মাহমুদ
ছবি: সংগৃহীত

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কর্মসূচির আগে ও পরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এক সময় সমাবেশস্থল ও আশপাশ এলাকা ‘রণক্ষেত্রে’ পরিণত হয়। এমন থমথমে পরিস্থিতিতে প্রথমে ১৪৪ ধারা ও পরে কারফিউ জারি করা হয়েছে। এ বিষয়ে গোপালগঞ্জবাসীকে বার্তা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।


বুধবার (১৬ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা ৪৩ মিনিটে নিজের ভেরিফাইড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পোস্টে আসিফ মাহমুদ লিখেন, ‘গোপালগঞ্জে কারফিউ জারি করা হয়েছে। জীবন-মৃত্যুর মতো পরিস্থিতি না হলে সাধারণ জনগণ কেউ ঘর থেকে বের হবেন না। সকল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। নিষিদ্ধ সংগঠনের সন্ত্রাসীদের ভেঙে দেওয়া হবে।’


আসিফ মাহমুদ আরও লিখেন, ‘পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে সবকিছু মনিটরিং এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন স্বরাষ্ট্র, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধানরা।’


আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জের হামলা ‘বর্বরতা’, জড়িতদের ছাড় নয়: সরকার


এর আগে বেলা পৌনে ২টার দিকে ২০০-৩০০ লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে এনসিপির সমাবেশস্থলে যায়। সে সময় মঞ্চের আশপাশে থাকা পুলিশ সদস্যরা সেখান থেকে দ্রুত আদালত চত্বরে ঢুকে পড়েন। একই সময়ে মঞ্চে ও মঞ্চের সামনে থাকা এনসিপির নেতাকর্মীরাও দৌড়ে সরে যান। যারা হামলা চালান, তারা সবাই আওয়ামী লীগের সমর্থক বলে জানান এনসিপির নেতাকর্মীরা।


ওই সময় হামলাকারীরা মঞ্চের চেয়ার ভাঙচুর করেন, ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন। একপর্যায়ে জেলা পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান ঘটনাস্থলে যান। এনসিপির নেতাকর্মী ও পুলিশ এক হয়ে ধাওয়া দিলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। পরে এনসিপি সেখানে সমাবেশ শুরু করে। কিন্তু সমাবেশ শেষে আবারও হামলা চালায় হামলাকারীরা। এমন পরিস্থিতিতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।


এদিকে পুলিশ, গণমাধ্যমকর্মী ও এনসিপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনাকে লজ্জাজনক বলে অভিহিত করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে জানানো হয়, আজ গোপালগঞ্জে সংঘটিত সহিংসতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তরুণদের বিপ্লবী আন্দোলনের এক বছরপূর্তি উপলক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করার অধিকার হরণ করা হয়েছে, যা গভীর উদ্বেগজনক এবং মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের সমান। এনসিপি নেতাকর্মী, পুলিশ সদস্য ও গণমাধ্যমকর্মীরা নৃশংস হামলার শিকার হয়েছেন; তাদের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এ সময় অনেককে মারধর করা হয়েছে।


আরও পড়ুন: নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে সরানো হলো ‘নৌকা’ প্রতীক 


বিবৃতিতে বলা হয়, এই নিন্দনীয় হামলা নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের দ্বারা সংঘটিত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই হামলায় দায়ীদের অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনতে হবে। দোষীদের দ্রুত শনাক্ত করে কঠোরভাবে জবাবদিহির মুখোমুখি করা প্রয়োজন। বাংলাদেশের কোনো নাগরিকের ওপর এমন বর্বর সহিংসতার কোনো জায়গা থাকতে পারে না।


বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমরা সেনাবাহিনী ও পুলিশের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপের জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। পাশাপাশি হুমকি ও ভয়ভীতির মধ্যেও যারা সাহসিকতা ও অটল মনোভাব নিয়ে পদযাত্রা অব্যাহত রেখেছেন, সেই শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। এই বর্বরতার সঙ্গে জড়িতদের বিচার অবশ্যই নিশ্চিত করা হবে। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, বাংলাদেশে সহিংসতার কোনো স্থান নেই। অবশ্যই ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে।


প্রসঙ্গত, চলতি জুলাইয়ের শুরু থেকে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে এনসিপি। মাসব্যাপী এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ গোপালগঞ্জে পদযাত্রা ছিল দলটির।


এমএল/