‘শত্রু’ পাকিস্তানকে বড় বন্যার বিষয়ে সতর্ক করলো ভারত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯:১০ পিএম, ২৫শে আগস্ট ২০২৫

নিজেদের ‘শত্রু প্রতিবেশী’ পাকিস্তানকে আন্তঃসীমান্ত বন্যার সতর্কবার্তা দিয়েছে ভারত।
সোমবার (২৫ আগস্ট) নয়াদিল্লির কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইসলামাবাদের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ভারত-পাকিস্তানের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া শতদ্রু বা সালতুজ নদীর পানিবৃদ্ধি সংক্রান্ত সতর্কবার্তা দিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন দুই দেশের কর্মকর্তারা।
হিমালয়ের চীনা অংশ থেকে উদ্ভূত হয়ে ভারত ও পাকিস্তানের পাঞ্জাবের ওপর দিয়ে বয়ে আরব সাগরে পতিত হওয়া ‘সুতলেজ’ নদীটির ভারতীয় অংশের নাম ‘শতদ্রু’ এবং পাকিস্তানি অংশের নাম ‘সালতুজ’। সম্প্রতি এই নদীটির পানি বিপদসীমার বেশ ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে এই তথ্য জানিয়ে বলা হয়েছে, শতদ্রু নদীর পানি যদি আরও বৃদ্ধি পায়— তাহলে এ নদীর পাকিস্তান অংশ সালতুজের পানিও বাড়বে এবং সেক্ষেত্রে বন্যার আশঙ্কা আছে।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি হামলা, চার সাংবাদিকসহ নিহত ১৫
শতদ্রুর পানিবৃদ্ধির হালনাগাদ তথ্যসহ আনুষাঙ্গিক অন্যান্য তথ্য ইসলামাবাদকে নয়াদিল্লি প্রদান করেছে বলেও জানিয়েছেন ভারত-পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের সাম্প্রতিক কূটনৈতিক সম্পর্কের বিচারে ভারতের এই পদক্ষেপ রীতিমতো বিস্ময়কর এবং চমকপ্রদ। কারণ এমনিতেই গত বেশ কয়েক বছর ধরে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ছিল; এর মধ্যে গত এপ্রিলে ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে ভারত ও পাকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্ক ব্যাপক বৈরী হয়ে ওঠে। ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মিরে হামলার পরপরই দুই দেশের মধ্যে দিয়ে বহমান সিন্ধু নদের পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করে ভারত, তারপর মে মাসের প্রথম সপ্তাহে সংঘাতেও জড়িয়ে পড়েছিল দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্র। পরে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে সংঘাত থামলেও দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে কোনো উন্নতি হয়নি, সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি থেকেও ভারত স্থগিতাদেশ তুলে নেয়নি।
আরও পড়ুন: সৌদিতে ২২ হাজারের বেশি প্রবাসী গ্রেফতার
তারপরও কেন ভারত পাকিস্তানকে বন্যা সতর্কতা দিলো— এ প্রশ্নের উত্তরে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, নয়াদিল্লি মানবিক কারণে পাকিস্তানকে এই সতর্কবার্তা দিয়েছে।
সিন্ধু পানিচুক্তি থেকেও স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়া হবে কি না— প্রশ্নের জবাবে নয়াদিল্লির ওই কর্মকর্তা বলেছেন, “আপাতত এমন কোনো পরিকল্পনা কেন্দ্রীয় সরকারের নেই।”
প্রসঙ্গত, বিগত অন্যান্য বছরগুলোর মতো এবারও জুন মাসেই বর্ষা শুরু হয়েছে পাকিস্তানে, তবে এবারের বর্ষা ব্যাপক আকারে বিপর্যয়ও বয়ে এনেছে দেশটির জন্য। দেশটির জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জুনের শেষ দিক থেকে এ পর্যন্ত দু মাসে প্রবল বর্ষণ ও তার ফলে সৃষ্ট বন্যা, হড়পা বান, ভূমিধস, বাড়ির ছাদ-দেওয়াল ধস ও বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৭৯৯ জন। সূত্র: রয়টার্স।
এমএল/