ধর্ষণের শিকার হয়ে কষ্টের কথা শোনালেন সুদানের নারী


Janobani

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০৩:৫০ পিএম, ৫ই সেপ্টেম্বর ২০২৫


ধর্ষণের শিকার হয়ে কষ্টের কথা শোনালেন সুদানের নারী
ছবি: সংগৃহীত

২২ বছর বয়সী এক তরুণীর জীবন একেবারে বদলে যায় ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে। যখন বিমান হামলার সময় একটি বোমা তার বাড়ির আঙ্গিনাতে সরাসরি আঘাত হানে। বোমা হামলার আওয়াজ তার কানে এখনও বাজে। র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ) নামের একটি প্যারামিলিটারী গ্রুপ ওই তরুণীকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। তারা হুমকি দেয়, যদি সে তাদের দাবিতে সম্মত না হয়, তবে তার পরিবাররের সবাই মারা যাবে।


সেই ঘটনা নিয়ে ওই তরুণী বলেন, তারা যদি আমাকে মেরে ফেলতো, তাহেলে সেটাই সবচেয়ে ভালো হতো। কাঁদতে কাঁদতে আলজাজিরাকে কথাগুলো বলেন ওই তরুণী। এ সময় চোখের পানিতে তার পরনের হিজাব পর্যন্ত ভিজে যায়।


অপহরণের দুই দিন আটকে রেখে তাকে ধর্ষণ করা হয়। ওই তরুণী বলেন, একজন দুই-তিন ঘণ্টা থাকে তারপর তার বন্ধু আসে।’ এই ভয়াবহ ট্রমার ফলে তার শ্বাসকষ্টের সমস্যা শুরু হয়, যা আগে কখনও ছিল না।


আরও পড়ুন: আবারও আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তে ভূমিকম্পের আঘাত


তরুণী আরও বলেন, যখন আমি নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করি, তখন তারা আমাকে মারতে শুরু করে। দুই দিন পর তাকে ফিরিয়ে দেয়া হলেও তার বাড়ি লুট হয়ে গেছে এবং পরিবার ও সমস্ত জিনিসপত্র হারিয়ে গেছে।


ওই তরুণী এখন শরণার্থী শিবিরে বসবাস করছেন। এখানে তার মা, তিন বোন এবং দুই ভাইয়ের সঙ্গে পুনর্মিলন হয়েছে। তার বাবা ও অন্য ভাই এখনও সুদানে আরএসএফ বাহিনীর হেফাজতে রয়েছে। ওই তরুণী বলেন, আমরা শুধু রাস্তায় পাওয়া জিনিস দিয়ে আমাদের বাড়ি বানিয়েছি। 


ওই তরুণী তার পরিবারকে সহায়তার জন্য শহরের ব্যস্ততম রাস্তার মোড়ে চা বিক্রি করেন। তিনি বলেন, এতে কোনো মর্যাদা নেই। আমাকে সবসময় পুরুষরা বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে।


আরও পড়ুন: ফেসবুকসহ বেশ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করল নেপাল


গত রমজান মাসে ঘরে ফেরার পথে চাদের নিরাপত্তা বাহিনী তাকে আটক ও যৌন নির্যাতন করে। ওই তরুণী বলেন, তিনি (নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য) আমাকে স্পর্শ করতে শুরু করলেন তারপর ধর্ষণ করলেন।


চাদে ২০২৪ সালে ৪ হাজারের বেশি যৌন সহিংসতার ঘটনা ধরা পড়ে, যার মধ্যে সুদানি শরণার্থী ও স্থানীয় নারী-পুরুষ উভয়ই আক্রান্ত। নিরাপত্তা বাহিনী দাবি করে যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে, কিন্তু শরণার্থীরা জানান, বারবার নির্যাতনের শিকার হতে হয় তাদেরকে।


রেড ক্রসের মানসিক স্বাস্থ্য প্রতিনিধি স্টেফানি লোইসু বলেন, যদি আপনি স্থিতিশীলতার আশা নিয়ে আসেন, তারপরও ভয় থাকে। এটি শুধু সহিংসতা নয়, আশা হারানোও একটি ট্রমা।


এমএল/