স্পেনে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে নিহত ২৭
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
ইউরোপ-আফ্রিকার দুই দেশ মরক্কো-স্পেন। বিপুল সংখ্যক আফ্রিকান অভিবাসী স্পেনে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে অন্তত ২৭ জনের প্রাণহানী হয়েছে। প্রচুর সংখ্যক মানুষ আহতও হয়েছেন। খবর আনাদোলু ও আল জাজিরার।
শুক্রবার (২৪ জুন) ভোরে স্পেনের মেলিলা ছিটমহলে অনুপ্রবেশ চেষ্টাকালে আহত হয়ে অভিবাসীদের মৃত্যু হয়েছে বলেই জানায় কর্তৃপক্ষ। প্রথমে ৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও পরে মরক্কোর কর্তৃপক্ষ এই সংখ্যায় উন্নীত করেন।
এসময় প্রায় দুই হাজার অভিবাসী মেলিলায় প্রবেশের চেষ্টা করেন। একই সময় কাঁচি দিয়ে বেড়া কেটে পাঁচ শতাধিক অভিবাসী সীমান্ত নিয়ন্ত্রিত এলাকায় প্রবেশ করতে পেরেছেন বলেও জানা যায়।
মরোক্কোর কর্মকর্তারা বলেন, “বেড়ার ওপর থেকে পড়ে গিয়ে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ১৪০ সদস্য ও আরও ৭৬ অভিবাসী আহত হয়েছেন।”
এদিকে, মরক্কো অ্যাসোসিয়েশন ফর হিউম্যান রাইটস (এএমডিএইচ) দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেয়া পরিসংখ্যানের চেয়েও বেশি মৃতের সংখ্যা দিয়েছে। এএমডিএইচ-এর ভাষ্য মতে, ২৯ জন নিহত হয়েছেন। তবে এই সংখ্যাটি তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করা যায়নি।
গত মাসে স্পেন ও মরক্কোর কূটনৈতিক টানাপোড়েন দূর হলে প্রথমবারের মতো এ ধরনের অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে। স্প্যানিশ সরকারের স্থানীয় প্রতিনিধি বলেন, এ সময়ে ৪৯ স্প্যানিশ পুলিশ হালকা আহত হয়েছে।
একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মরক্কান সীমান্তের দিকে যে গুরুতর জখম ব্যক্তিরা ছিলেন তারা চিকিৎসা সেবা না পেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েছিলেন। স্পেনের সংবাদমাধ্যমের ছবিতে দেখা গেছে, মেলিলার রাস্তার পাশে ক্লান্ত অভিবাসীরা শুয়ে আছেন। কারও কারও হাতে রক্ত ও পোশাক ছিন্ন ছিল।
আরেকটি ক্লিপে, মরক্কোর একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে মাটিতে পড়ে থাকা একজনকে আঘাত করার জন্য লাঠি ব্যবহার করতে দেখা গেছে।
ওয়াকিং বর্ডারের প্রতিষ্ঠাতা হেলেনা ম্যালেনো গারজোন টুইট করে বলেছেন, “মেলিলায় ট্র্যাজেডির শিকার ব্যক্তিরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা বেদনাদায়ক অবস্থায় ছিল। যাদের সাহায্য করার কথা ছিল তারা সাহায্য করেনি।”
বেশ কয়েকটি এনজিও ঘটনার সময় অভিবাসীদের চিকিৎসার বিষয়ে অবিলম্বে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
সীমান্তে হামলা বন্ধে ইতিমধ্যে সেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করেছে মরোক্কো। তারা স্পেনের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করছে।
এভাবে সহিংস অনুপ্রবেশ চেষ্টার নিন্দা জানিয়েছেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো স্যানচেজ। ব্রাসেলসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি মানবপাচারকারী মাফিয়াদের দায়ী করেন।
মেলিলা ও সিউটা হলো স্পেনের উত্তর আফ্রিকার দুটি ছোট ছিটমহল। যা আফ্রিকার সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একমাত্র স্থল সীমান্ত। আর এ কারণেই এই দুই ছিটমহল দিয়ে অভিবাসীরা ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টা করেন।
এসএ/