ইনিংস হারের শঙ্কায় বাংলাদেশ


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


ইনিংস হারের শঙ্কায় বাংলাদেশ

পদ্ম সেতু টেস্ট সিরিজে প্রথম টেস্ট হারের পর দ্বিতীয় টেস্টে সম্মান বাঁচানোর লড়াই করছে বাংলাদেশ। তবে ব্যাটিংয়ে যেমন সুবিধা করতে পারেনি বোলিংয়েও সমান অবস্থায় টাইগাররা। 

সেন্ট লুসিয়ায় বাংলাদেশের ওপর ছড়ি ঘোরাচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্যারিবীয়দের প্রতিটি উইকেট নিতে কত ঘামই না ঝরাতে হয়েছে বাংলাদেশের বোলারদের। ক্লান্তিকর ১২৬.৩ ওভার বোলিং করে স্বাগতিকদের অলআউট করেছেন খালেদ আহমেদ-মেহেদী মিরাজরা। সেন্ট লুসিয়ায় রোববার টেস্টের তৃতীয় দিনের লাঞ্চের পরই ৪০৮ রানে থেমেছে স্বাগতিকদের প্রথম ইনিংস।

ফলে ১৭৪ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। ড্যারেন স্যামি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খেলা একই পিচের চিত্রপট বদলে গেল মিনিট বিশেকের ব্যবধানেই! বাংলাদেশ দল ব্যাটিংয়ে নামতেই পিচ যেন ব্যাটারদের মৃত্যুকূপ হয়ে দেখা দিল। টপাটপ উইকেট পড়া শুরু হল। আবারো সেই ব্যাটিং বিপর্যয় এবং এর ফলে এখন ইনিংস হারের শঙ্কায় সফরকারীরা।

সাকিব-সোহানের ব্যাটে অ্যান্টিগায় ইনিংস হার এড়ালেও ঠিকই ইনিংস হারের শঙ্কা উঁকি দিচ্ছে সেন্ট লুসিয়ায়। কারণ তৃতীয় দিনের খেলা শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৩২ রান তুলেতেই ৬ উইকেট হারিয়ে বসেছে টাইগাররা। 

মাত্র ৩৬ ওভারেই ক্যারিবীয় তিন পেসার কিমার রোচ, আলজারি জোসেফ ও জাইডেন সিলসের তোপে সাজঘরে ফিরে গেছেন তামিম ইকবাল (৪), মাহমুদুল হাসান জয় (১৩), এনামুল হক বিজয় (৪), লিটন দাস (১৯), নাজমুল হোসাইন শান্ত (৪২) ও সাকিব আল হাসান (১৬)।

অধিনায়ক সাকিব আল হাসান আউট হতেই দিনের খেলা শেষ ঘোষণা করেন আম্পায়ারদ্বয়। এ সময় নুরুল হাসান সোহান ১৬ রানে ব্যাট করছিলেন। আর এর ফলে এখনও ৪২ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ। 

আউট হওয়া ৬ ব্যাটারের প্রথম তিনজনই রোচকে উইকেট দিয়েছেন। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই কিমার রোচের ২৫০তম শিকারে পরিণত হন তামিম ইকবাল (৪)। অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি। এরপর বাড়তি বাউন্স করা বলে ব্যাট পেতে দেন জয়, বল স্লিপে ব্ল্যাকউডের হাতে জমা পড়ে। ১৩ রান করে সাজঘরে ফেরেন এই ওপেনার। আর এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন ৪ রান করা বিজয়।

যাতে দলীয় মাত্র ৩২ রানেই ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। বৃষ্টি বাঁধায় খেলা কিছু বন্ধ থাকার পর দলীয় ৫৭ রানে সাজঘরে ফেরেন লিটন দাস। জাইডেন সিলসের শিকার হন তিনি, এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে। এরপর অধিনায়ক সাকিবকে নিয়ে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করলেও তা বেশিক্ষণ স্থায়ী করতে পারেননি নাজমুল হোসাইন শান্ত। 

দলীয় ১০৪ রানের মাথায় সাজঘরে ফেরেন জোসেফের শিকার হয়ে, উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে। যার ফলে থেমে যায় বাঁহাতি এই ব্যাটারের ৪২ রানের ইনিংস। এরপর টিকে থাকতে পারেননি সাকিবও। তিনিও ফেরেন জোসেফের শিকার হয়ে স্লিপে জন ক্যাম্পবেলের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে।

অর্থাৎ দলীয় ১১৮ রানেই ৬টি উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে দল। এ অবস্থায় মেহেদী মিরাজকে নিয়ে ১৪ রানের জুটি গড়েন সোহান। যার মধ্যে ৮ রানই নিয়েছেন উইকেটরক্ষক ব্যাটার, বাকী ৬ রানই এসেছে অতিরিক্ত থেকে। অন্যপ্রান্তে ১৩ বল খেলা মিরাজ অপরাজিত শূন্য রানে।

এখন দেখার বিষয়, চতুর্থ দিনে এই দুই ব্যাটার কতক্ষণ টিকে থাকতে পারেন এবং ইনিংস হার এড়াতে পারেন কিনা। তবে স্কোরবোর্ডের যে অবস্থা তাতে জয় তো অনেক দূরের কথা, ড্র করারও কোনো সুযোগ নেই বাংলাদেশ দলের। পরাজয় আবশ্যম্ভাবী। কিন্তু সেটা কেমন ব্যবধানের হয় সেটা দেখারই অপেক্ষায় ভক্তকুল।

এর আগে উইন্ডিজকে ৪০৮ রানে অলআউট করার মধ্যদিয়ে ৯ টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবার পাঁচ উইকেটের দেখা পেলেন খালেদ আহমেদ। প্রায় ৩২ ওভার হাত ঘুরিয়ে ১০৬ রানের বিনিময়ে এই কীর্তি গড়লেন টাইগার পেসার। এছাড়া মিরাজ ৯১ রানে ৩টি এবং শরিফুল ৭৬ রানে ২টি উইকেট লাভ করেন।

ক্যারিবীয়দের পক্ষে ১৪৬ রানের ইনিংস খেলেন কাইল মায়ার্স। এছাড়া ব্রাথওয়েট ৫১, ক্যাম্পবেল ৪৫, ব্ল্যাকউড ৪০ ও জশুয়া ডা সিলভা ২৯ রান করেন।

এসএ/