টাইগারদের শততম পরাজয়
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার টেস্ট সিরিজে টাইগারদেরকে ধবল ধোলাই করে সিরিজ জিতলো ক্যারিবিয়ানরা। আর সেন্ট লুসিয়ায় লজ্জাজনক হারের মধ্যে সাদা পোশাকে হারের সেঞ্চুরি পূর্ণ করল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
সেন্ট লুসিয়া টেস্ট পঞ্চম দিনে নিতে পারল না বাংলাদেশ। নুরুল হাসান সোহান ছাড়া আর কেউ দেখাতে পারলেন না লড়াইয়ের মানসিকতা। ৫০ মিনিটের মধ্যে সফরকারীদের দ্বিতীয় ইনিংস গুটিয়ে দিয়ে অনায়াসে জিতে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৩ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১৭ বল খেলে ১০ উইকেটে ম্যাচ জিতেছে স্বাগতিকরা।
ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে ফের হোয়াইটওয়াশড হলো বাংলাদেশ। অ্যান্টিগায় ৭ উইকেটে জয়ের পর সেন্ট লুসিয়ায় ১০ উইকেটে জিতেছে ক্যারিবিয়রা। এতে বাংলাদেশ দলকে হোয়াটওয়াশের স্বাদ দিয়ে সাদা পোশাকে টাইগারদের বিপক্ষে আধিপত্য ধরে রাখল উইন্ডিজ।
২০০০ সালে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর ২২ বছরে ১৩৪টি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ দল। যেখানে ১০০ হারের বিপরীতে টাইগারদের জয় ১৬টি ও ড্র আছে ১৮টি।
সেন্ট লুসিয়া পরাজয় একপ্রকার নিশ্চিতই ছিল, শুধু অপেক্ষা ছিল সময়ের। বাংলাদেশ দল ইনিংস হার এড়াতে পারে কি না সেদিকেও দৃষ্টি ছিল ক্রিকেট সমর্থকদের। নুরুল হাসান সোহানের আগ্রাসী ফিফটিতে দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ উতরে গেছে সাকিব আল হাসানের দল, তবে পরাজয় এড়াতে পারেনি।
ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটের দলের বিপক্ষে এ নিয়ে শেষ ৪ দেখায় টানা ৪ পরাজয় বাংলাদেশের। আর সব মিলিয়ে ২০ টেস্টে এটি ১৪তম পরাজয়।
লিটস দাসের অর্ধশতকের (৫৩) পরেও প্রথম ইনিংসে স্কোর বোর্ডে ২৩৪ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ দল। পরে উইন্ডিজের প্রথম ইনিংস থামে ৪০৮ রানে। দলটির হয়ে অনবদ্য ব্যাটিংয়ে একাই ১৪৬ রানের ইনিংস খেলেন কাইল মায়ার্স। এতে ১৭৪ রানের লিড পায় ক্যারিবিয়রা।
এই রান শোধ করে স্বাগতিকদের বড় রানের লক্ষ্য দিতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে টাইগাররা। শঙ্কা জাগে ইনিংস হারের।
মাত্র ৮ বল খেলে ৪ রান করে দলীয় ৪ রানের মাথায় উইকেট বিলিয়ে দেন তামিম। এরপর নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে জুটি বাঁধেন মাহমুদুল হাসান জয়। কয়েকটি ভালো শট, কয়েকটি আলগা শটও খেলেন তিনি। রোচকে ৭ম ওভারের দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারি মারার পরের বলেই তার ইনসুইংগার বলটিকে ঠেকাতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লাগিয়ে বসেন।
বল চলে যায় থার্ডম্যানে জার্মেই ব্ল্যাকউডের হাতে। ১৩ রান করে আউট হয়ে যান জয়। দলীয় ৩২ রানের মাথায় কেমার রোচের তৃতীয় শিকারে পরিণত হন এনামুল হক বিজয়। তার দুর্দান্ত ডেলিভারিতে হলেন এলবিডব্লিউ। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি আট বছর টেস্টে ফেরা বিজয়।
মাত্র ৪ রান করে আউট হন বিজয়। তিনি আউট হতে না হতেই নামে বৃষ্টি এবং খেলা বন্ধ হয়ে যায় এ সময়। বৃষ্টি থামার পর খেলা শুরু হলেও বদলায়নি বাংলাদেশের ভাগ্য। একপ্রান্তে নাজমুল শান্ত আশা দেখালেও হতাশ করেন সাকিব আল হাসান ও লিটন দাসরা।
ফর্মে থাকা লিটন সাজঘরে ফিরে যান ১৬ রান করে, সাকিব থামেন ব্যক্তিগত ১৯ রানে। দারুণ খেলতে থেকে ফিফটি আশা জাগালেও শেষ পর্যন্ত আলগা শটে আউট হন ৪২ রান করা শান্ত। ১১৮ রানে ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
সেখান থেকে ইনিংস পরাজয় এড়ানোর মিশনে ব্যাটিং শুরু করেন নুরুল হাসান সোহান ও মেহেদি হাসান মিরাজ। নুরুল সোহানের আগ্রাসী ফিফটিতে (৫০ বলে ৬০) সেই শঙ্কা উড়িয়ে সফরকারীদের দ্বিতীয় ইনিংস থামে ১৮৬ রানে। এতে ১২ রানের লিড পায় বাংলাদেশ।
ক্যারিবিয়দের সামনে ১৩ রানের লক্ষ্য দাঁড়ায়। টার্গেট টপকাতে নেমে একেবারে বেগ পেতে হয়নি স্বাগতিকদের। মাত্র ১৭ বলে কোনো উইকেট না হারিয়েই জয় তুলে নেয় তারা। জন ক্যাম্পবেল ১১ বলে ৯ এবং অধিনায়ক ব্র্যাথওয়েট ৬ বলে ৪ রানে অপরাজি থাকেন।
ক্যারিবিয়দের বিপক্ষে এ হার টেস্টে বাংলাদেশ দলের শততম। মাত্র ১৩৪ ম্যাচেই পরাজয়ের সেঞ্চুরির স্বাদ পেল বাংলাদেশ দল।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ ও ম্যান অব দ্য সিরিজ নির্বাচিত হয়েছেন কাইল মেয়ার্স।
এসএ/