জোর করে সংসার করা যায় না, ইলিয়াস ভালো থাকুক: সুবহা


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


জোর করে সংসার করা যায় না, ইলিয়াস ভালো থাকুক: সুবহা

ইলিয়াস হোসাইন চাইলে এখনো তার সাথে সংসার করতে চান অভিনেত্রী শাহ হুমায়রা হোসেন। কিন্তু যে সংসার করবে না তার সঙ্গে জোর করে সংসার করা যায় না। ইলিয়াস তার জীবনে ভালো থাকুক আর আমি আমার জীবনে ভালো থাকি। 

সোমবার (২৫ জুলাই) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক সাবেরা সুলতানা খানমের আদালতে যৌতুকের জন্য নির্যাতনের অভিযোগের মামলায় সাক্ষ্য দিতে এসে একথা বলেন সুবহা।

এদিন মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ধার্য ছিল। সুবহা আদালতে হাজির হন। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া ইলিয়াস হোসাইনও এদিন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন।

বিচারক সুবহার কাছে জানতে চান, মামলা প্রত্যাহারের জন্য আপনি কি সম্পূর্ণ প্রস্তুত। সুবহা তখন বলেন, না। বিচারক কারণ জানতে চাইলে সুবহা বলেন, এখনো কিছু দেনা পাওনা বাকী আছে। আর আমি এখনো সংসার করতে চাই। ইলিয়াস যদি চায়। তখন বিচারক বলেন, কেউ সংসার করতে না চাইলে সেখানে না যাওয়ায় ভালো। এরপর বিচারক সুবহার কাছে জানতে চান,আসামি তাকে কত টাকা দিয়েছে, দেনমোহর কত? তখন সুবহা বলেন, সব মিলিয়ে ২০ লাখের মধ্যে ১০ লাখ দিয়েছে। এসময় নথি দেখে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আদালতকে জানান,‘বিয়ের দেন মোহর সাত লাখ টাকা। তখন বিচারক বলেন,১০ লাখ তো বেশি দিয়েছে। সুবহা বলেন, ৮ মাসের ভরণপোষণসহ অন্যান্য কিছু মিলিয়ে ১০ লাখ দিয়েছে।

এরপর বিচারক তখন সুবহার কাছে জানতে চান, ১০ লাখ টাকা পেয়েছেন। আপনি কি এতে স্যাটিসফাই। স্যাটিসফাই না হলে মামলা চালাতে পারেন। তখন সুবহা বলেন, আমি মামলা চালাতে চাই না।

তখন বিচারক সুবহার কাছে জানতে চান, আসামির বিরুদ্ধে আপনার কোনো অভিযোগ আছে? সুবহার বলেন, না। দুই পরিবারের উপস্থিতিতে তাদের আপোষ মীমাংসা হয়ে গেছে।

এরপর আসামিপক্ষ আপোষ মীমাংসার অ্যাফিডেটিভ জমা দেন। তখন রাষ্ট্রপক্ষ বলেন, মামলা আপোষ করতে চাইলে সাক্ষ্য দেন। 

তখন সুবহার সাক্ষ্য দেন। তিনি বলেন, ‘মামলাটি আপোষ হয়েছে। আসামির বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নাই। দেনা পাওনা পরিশোধ করেছে। এরপর আসামিপক্ষ সুবহাকে জেরা করেন।

পরে ইলিয়াসের জামিনের বিষয়ে শুনানি হয়। আদালত শুনানি শেষে ইলিয়াসের জামিন মঞ্জুর করেন।

গত ৩ জানুয়ারি রাজধানীর বনানী থানায় মামলাটি দায়ের করেন সুবহা।

মামলাটি তদন্ত করে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইলিয়াসকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন ডিএমপির তেজগাঁও নারী সহায়তা ও তদন্ত বিভাগের সাব-ইন্সপেক্টর মাছুমা আফ্রাদ।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত বছর সেপ্টেম্বরে ইলিয়াসের সঙ্গে সুবহার পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্কে গড়ে ওঠে। গত ১ ডিসেম্বর তারা বিয়ে করেন। বিয়ের সময় সুবহার পরিবারের পক্ষ থেকে ইলিয়াসের চাহিদা মোতাবেক ১২ লাখ টাকার রোলেক্স ব্র্যান্ডের ঘড়িসহ ১৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকার পণ্য দেওয়া হয়। কিন্তু এতেও ইলিয়াস সন্তুষ্ট হয়নি। এর মাঝে সুবহা জানতে পারেন, ইলিয়াস আগে একাধিক বিয়ে করেছেন এবং অসংখ্য প্রেমের সম্পর্ক চলমান। এরই মাঝে ইলিয়াস সুবহার কাছে ফ্ল্যাট কেনা বাবদ ৫০ লাখ এবং গাড়ির জন্য আরও ৩০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। গত ৯ ডিসেম্বর ইউটিউব চ্যানেল কেনার জন্য সুবহার মায়ের কাছে আরও ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন ইলিয়াস। তাকে আড়াই লাখ টাকা দেয় সুবহার পরিবার। পরে গত ২৭ ডিসেম্বর দুপুরে ফ্ল্যাট ও গাড়ি কেনার জন্য ৮০ লাখ টাকার জন্য চাপ দেন ইলিয়াস। এনিয়ে তাদের ঝগড়া হয়। এর জের ধরে রাত ৮টার দিকে সুবহাকে শারীরিক নির্যাতন করেন ইলিয়াস। পরদিন আবারও ৮০ লাখ টাকা যৌতুক চান তিনি। এ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ইলিয়াস সুবহাকে মারধর এবং মাথা দেয়ালের সাথে ঠুকে জখম করেন। এরপর ইলিয়াস সুবহাকে ব্যথার ওষুধের কথা বলে অন্য ওষুধ খাওয়ান। একটু পর সুবহা অজ্ঞান হয়ে যান। এ সুযোগে ইলিয়াস আলমারিতে থাকা ২০ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার এবং ৫০ হাজার টাকা নিয়ে যান। সুবহার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ওআ/