উপদেষ্টা পরিষদের সভায় আমানত সুরক্ষা অধ্যাদেশ অনুমোদন

বাংলাদেশের আর্থিক সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে ‘আমানত সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অনুমোদন পেয়েছে। এর মাধ্যমে দেশের আমানতকারীদের জন্য সুরক্ষিত আমানতের সর্বোচ্চ সীমা এক লাখ থেকে বাড়িয়ে দুই লাখ টাকা করা হয়েছে। এটি দেশের প্রায় ৯৩ শতাংশ আমানতকারীর সঞ্চয়কে আরও নিশ্চিত নিরাপত্তা দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (০৯ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
১৯৮৪ সালে ব্যাংক আমানতকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ‘ব্যাংক ডিপোজিট ইন্সুরেন্স অর্ডিন্যান্স’ প্রণীত হয়েছিল। এরপর ২০০০ সালে এই অধ্যাদেশটি সংস্কার করে ‘ব্যাংক আমানত বিমা আইন’ হিসেবে পুনর্গঠন করা হয়। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গেই এই আইন বেশ কিছু সীমাবদ্ধতায় পড়ে যায়। তফসিলি ব্যাংক সমূহের আমানতকারীদের সুরক্ষার পাশাপাশি ফাইন্যান্স কোম্পানির আমানতকারীদের সুরক্ষার বিষয়টি আইনের আওতায় ছিল না, ফলে এদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না।
আরও পড়ুুন: দেশে কমেছে চালের দাম, বেড়েছে সরবরাহ
বিজ্ঞাপন
নতুন অধ্যাদেশে এই সব অসংগতি দূর করে তফসিলি ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানির জন্য পৃথক পৃথক ‘আমানত সুরক্ষা তহবিল’ গঠন করার বিধান রাখা হয়েছে। দুই তহবিল একে অপরের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা থাকে এবং অর্থনৈতিক লেনদেনে বিনিময়যোগ্য হবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ এই তহবিলের ট্রাস্টি বোর্ড হিসেবে কাজ করবে, যা তহবিল পরিচালনা ও প্রশাসনের কাজ দেখবে।
আমানত সুরক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে একটি স্বতন্ত্র বিভাগ গঠন করা হবে। এ অধ্যাদেশ কার্যকর হলে, পুরোনো আইন অনুযায়ী অন্তর্ভুক্ত সব তফসিলি ব্যাংক স্বয়ংক্রিয়ভাবে এই তহবিলের সদস্য হিসেবে গণ্য হবে। পাশাপাশি নতুন লাইসেন্স প্রাপ্ত ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রারম্ভিক প্রিমিয়াম জমা দিয়ে সদস্যপদ গ্রহণ করবে।
বিজ্ঞাপন
তহবিল থেকে ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোর রেজল্যুশনের ক্ষেত্রে শর্তসাপেক্ষে আর্থিক সহায়তা প্রদানের বিধান রাখা হয়েছে। তহবিলের অর্থ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নিরাপদ বিনিয়োগ, বৈচিত্র্য এবং তারল্য সংরক্ষণকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। সুরক্ষিত আমানত পরিশোধের সময়সীমা ১৮০ দিনের পরিবর্তে ১৭ কার্যদিবসে পরিশোধের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে নতুন অধ্যাদেশে।