Logo

অস্থিতিশীল পেঁয়াজের বাজার, কেজিপ্রতি ছাড়লো ১০০ টাকার ঘর

profile picture
নিজস্ব প্রতিবেদক
৪ নভেম্বর, ২০২৫, ২০:১৯
6Shares
অস্থিতিশীল পেঁয়াজের বাজার, কেজিপ্রতি ছাড়লো ১০০ টাকার ঘর
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর খুচরা ও পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে প্রতি কেজিতে ১০০ টাকার ঘর ছাড়িয়েছে। গত দুদিনে কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। বর্তমানে খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১০০ থেকে ১১০ টাকায়, যা তিনদিন আগে ছিল ৮০ থেকে ৮৫ টাকা।

বিজ্ঞাপন

পাইকারি বাজারেও একই পরিস্থিতি। মানভেদে দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০ থেকে ১০৫ টাকা কেজিতে। এর আগে গত শুক্র ও শনিবার দাম ছিল ৭২ থেকে ৮৫ টাকা।

শ্যামবাজারের আড়তদাররা জানিয়েছেন, ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি বন্ধ থাকায় দেশি পেঁয়াজের ওপর চাপ বেড়েছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কমে যাওয়ায় বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে।

বিজ্ঞাপন

কুমিল্লার আড়তের আড়তদার আবুল কালাম বলেন, পাবনা ও ফরিদপুরের আড়তে দাম বেড়েছে, যার প্রভাব পড়েছে সারাদেশে। আগের তুলনায় দাম প্রায় ২০ টাকা বেড়েছে। এখন সরবরাহ যথেষ্ট নয়।

চট্টগ্রামের চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজারেও তিন দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। মানভেদে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০৫ টাকায়, যা বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ছিল ৭২ থেকে ৮৫ টাকা।

খাতুনগঞ্জ হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস মিয়া বলেন, ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি বন্ধ থাকায় দেশের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছে।

বিজ্ঞাপন

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দেশে রবি মৌসুমের রোপণ দেরিতে শুরু হওয়ায় নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসতে সময় লাগবে। পাবনা, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া ও রাজবাড়ীসহ বিভিন্ন অঞ্চলে এখনো রোপণ শেষ হয়নি। সময়মতো আমদানির অনুমতি না দিলে বাজার আরও অস্থিতিশীল হতে পারে।

তবে কৃষি অধিদপ্তর জানাচ্ছে, দেশে এখনও পেঁয়াজের ঘাটতি নেই। কৃষকের হাতে পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক ড. মো. জামাল উদ্দীন বলেন, পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ানোর কোনো বাস্তব কারণ নেই। এই মুহূর্তে ব্যবসায়ীদের কারসাজি ছাড়া দাম বৃদ্ধি ঘটেছে না। কৃষকের হাতে পাঁচ লাখ টন পেঁয়াজ আছে, তাই আগামী দুই মাসে সংকট হবে না। নভেম্বরের মধ্যে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ বাজারে আসবে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে মুড়িকাটা পেঁয়াজও উঠতে শুরু করবে, ফলে দাম স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

বিজ্ঞাপন

কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুল কাদের বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে দাম কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়েছে। আমরা ৭৭-৮০ টাকায় কিনে ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি করছি। গত বছরের এই সময়ে দাম ছিল ১৩০-১৫০ টাকা। সে তুলনায় এবার দাম এখনও কম।

ক্যাবের সহসভাপতি এসএম নাজের হোসাইন বলেন, বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়ানো হচ্ছে। আড়তদার, কমিশন এজেন্ট ও দাদন ব্যবসায়ীদের কারসাজিতেই পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী।

বিজ্ঞাপন

কৃষি মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ৩৫ লাখ টন, কিন্তু উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৩৮ লাখ টন। ব্যবসায়ীরা ভারত থেকে আমদানির জন্য আবেদন করেছে। তবে এখনো অনুমতি মেলেনি।

অতিরিক্ত উপপরিচালক বনি আমিন খান জানান, পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তের বিষয়। অনুমতি ছাড়া কোনো আইপি দেওয়া যায় না।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাহমুদুর রহমান বলেন, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ নভেম্বরেই বাজারে আসবে। এখন অনুমতি দিলে কৃষক ক্ষতির মুখে পড়বেন। তাদের ন্যায্য দাম নিশ্চিত করাই আমাদের অগ্রাধিকার।

বিজ্ঞাপন

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের উৎপাদন যথেষ্ট হলেও আমদানির স্থগিত ও মৌসুমি প্রভাবের কারণে পেঁয়াজের দাম অস্থিতিশীল। নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসার আগে দামের ঊর্ধ্বগতি চলতেই পারে।

জেবি/এএস
Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD