Logo

পৃথিবীতে কেন এত এত সুন্দর কারুকার্যখচিত প্রাচীন মসজিদ ও মাজার আছে?

profile picture
জনবাণী ডেস্ক
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১২:৫১
92Shares
পৃথিবীতে কেন এত এত সুন্দর কারুকার্যখচিত প্রাচীন মসজিদ ও মাজার আছে?
লেখক: সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া আজহারী

ইসলামের প্রথম যুগে মসজিদ ছিল খুব সাধাসিধে। সালাফগণ মসজিদে অতিরিক্ত খরচ করা ও কারুকার্য খচিত করা অপছন্দ করতেন। এমনকি খাইবার বিজয়ের পর হুজুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লামার কাছে প্রচুর সম্পদ এসেছিল।

বিজ্ঞাপন

নবি কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি সাল্লাম কিন্তু সেই সম্পদ মসজিদে অপচয় করে নষ্ট করেন নাই। পবিত্র মসজিদে নববীতে অতিরিক্ত ইসরাফ বাড়াবাড়ি করেন নাই। নামাজ পড়ার মত উপযুক্ত করতে যতটুকু দরকার ঠিক ততটুকুই খরচ করেছেন। আর সেই সম্পদ গরিব দুঃখী সাহাবাগনের কল্যাণে খরচ করেছেন।

সালাফগণের মানহাজ শুনবেন? "হজরত ওমর ইবনে আব্দুল আজিজ রাহঃ কে হজ্জের মওসুমে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, ইয়া আমিরাল মুমিনিন আপনি কী এবছর কাবা শরিফের গেলাফ বানানোর জন্য অর্থ বরাদ্দ দেবেন না? আপনার উত্তরসূরীরা তো তা করতেন (এটাকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সওয়াবের কাজ মনে করা হত এবং এখনো করা হয়)। হজরত ওমর ইবনে আব্দুল আজিজ রাহঃ জবাব দিলেন, কাবার গেলাফের চাইতে গরিব অসহায় মানুষের অর্থের বেশি প্রয়োজন। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবারের গেলাফের টাকা গরিব মিসকিনের মাঝে বিতরণ করব।" বলুন এখন আমরা কোথায় আর সালাফদের মানহাজ কোথায়? এই কথাই যদি এখন কোন মুসলমান বলে, তবে তাকে কাফিরের ফতোয়া দেবে হুজুররা।

কিন্তু বর্তমানে পৃথিবীর বহু দেশে অসংখ্য অগুনিত প্রাচীন সুন্দর সুন্দর কারুকার্য খচিত মসজিদ দেখা যায়, মাজার দেখা যায়। এসব তাহলে কোথা থেকে আসল? এজন্য আপনাকে কালচার বুঝতে হবে, ইতিহাস জানতে হবে। কেন মাজার পাকা হয়েছে, এবং কেন মসজিদে এত এত কারুকার্য শুরু হয়েছে তা বুঝতে হলে আপনাকে মানুষের সাইকোলজি বুঝতে হবে। যখন মুসলমান রাজা বাদশাহদের হাতে প্রচুর টাকা পয়সা আসতে লাগল তখন তারা নিজের থাকার জন্য মনোরম অট্টালিকা বানাতে লাগল। তখন রাজা বাদশাহরা চিন্তা করল, আরে, আমরা এত সুন্দর বিল্ডিং বাড়িতে থাকি আর আল্লাহর ঘরের এই অবস্থা। এত অবহেলা! আল্লাহর ঘর সুন্দর হওয়া উচিত। মসজিদ সুন্দর হতে শুরু করল, কারুকার্যখচিত হতে শুরু করল, সেই সাথে চলতে লাগল প্রতিযোগিতা। কোন বাদশাহের রাজত্বে কত সুন্দর মসজিদ আছে তার প্রতিযোগিতা!

বিজ্ঞাপন

সেই রাজা বাদশাহরাই চিন্তা করল, আরে আমাদের ঘর এত সুন্দর, এত সুন্দর প্রাসাদে থাকি আমরা। আর আল্লাহর নবি-রাসূল, সাহাবাগনের মাজার, আল্লাহর ওলিগণের মাজারসমূহের এরকম অবস্থা! এটা হতে পারে না। তারা মাজারও সুন্দর কারুকাজ করে নির্মাণ করতে লাগলেন। আর এর মাধ্যমে বাদশাহদের আরেকটা উদ্দেশ্য ছিল, প্রজাদের মনোরঞ্জন এবং নিজেদেরকে দ্বীনদার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা, সেইসাথে কিছু মানুষের কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা করা। আপনি পৃথিবীর যত প্রাচীন সুন্দর মসজিদ ও মাজার পাবেন সব রাজা বাদশাহদের করা। দিল্লী নিজামুদ্দিন আউলিয়া রাহঃ এঁর মাজার, খাজাজী রাহঃ এঁর মাজার, বাগদাদ শরীফ, আবু আইউব আনসারি রাহঃ এঁর মাজারসহ সব প্রাচীন সব মাজার কোন না কোন বাদশাহের করা। এগুলোর পেছনে সাইকোলজিক্যাল, পলিটিকাল, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অনেক কারণ জড়িত। এটা এতটা সিম্পল না!

লেখক: সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া আজহারী

জেবি/আরএক্স
Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD