প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছুটি নিয়ে দুঃসংবাদ

দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে বছরে প্রায় ১৭৯ দিন পাঠদান চালু থাকে। এত দিন শিক্ষার্থীরা বছরে ৭৯ দিনের মতো ছুটি পেত। তবে এবার সেই ছুটি কমিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
বিজ্ঞাপন
নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, বার্ষিক ছুটি ৭৯ দিন থেকে কমিয়ে প্রায় ৬০ দিন করা হবে। এতে শিক্ষার্থীরা আরও বেশি দিন স্কুলে উপস্থিত থাকতে পারবে এবং পাঠগ্রহণের সুযোগ পাবে।
রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সাতক্ষীরায় আয়োজিত এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় এ তথ্য জানান প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ও বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় শহরের লেকভিউ রিসোর্টে অনুষ্ঠিত ওই কর্মশালায় জেলার ৪০ জন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক অংশ নেন।
আরও পড়ুন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য জরুরি নির্দেশনা
বিজ্ঞাপন
মহাপরিচালক বলেন, “বর্তমানে শিক্ষার্থীরা বছরে মাত্র ১৭৯ দিন স্কুলে আসে। শিক্ষা কার্যক্রমকে আরও কার্যকর করতে ছুটির ক্যালেন্ডারে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীরা বেশি সময় শ্রেণিকক্ষে কাটাতে পারবে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, প্রায় সব স্কুলের বাইরেই ঝালমুড়ি, ফুচকা, চটপটি, আইসক্রিমসহ নানা ধরনের খাবারের দোকান থাকে। এসব খাবার তৈরি ও পরিবেশনে কোনো স্বাস্থ্যবিধি মানা হয় না। একই পানিতে হাত ধোয়া থেকে শুরু করে থালা-বাসন পরিষ্কার করা হয়, যা শিশুদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। অন্যদিকে, সামর্থ্যবান পরিবারের শিশুরা ‘জাঙ্ক ফুড’-এর প্রতি ঝুঁকছে, যেখানে বিভিন্ন কেমিক্যাল ব্যবহারের কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।
শিক্ষকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “খাবারের প্রাপ্যতা যেমন জরুরি, তেমনি নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষার্থীদের ফুড সেফটি ও ফুড সিকিউরিটি সম্পর্কে সচেতন করতে হবে।”
বিজ্ঞাপন
কর্মশালায় শিশুদের জন্য নিরাপদ খাদ্য, স্বাস্থ্যবিধি, হাত ধোয়ার নিয়মসহ নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের এসব বিষয়ে সচেতন করবেন বলেও জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. জাকারিয়া। তিনি বলেন, “সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে হলে নিরাপদ খাবার গ্রহণ করতে হবে এবং জীবনযাপনে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। চিকিৎসক বা হাসপাতাল আমাদের বাঁচাতে পারবে, তবে নিজেদের সুরক্ষার দায়িত্ব নিতে হবে সবার আগে।”
বিজ্ঞাপন
এর আগে, আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষে (৭ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার জানিয়েছিলেন, সাপ্তাহিক দুই দিনের ছুটি বহাল রেখেই শিক্ষাপঞ্জির অন্যান্য ছুটি কমিয়ে আনা হবে।