Logo

নেপালে তরুণদের ক্ষোভে কাঁপছে অলির মসনদ

profile picture
জনবাণী ডেস্ক
৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৮:১৫
38Shares
নেপালে তরুণদের ক্ষোভে কাঁপছে অলির মসনদ
ছবি: সংগৃহীত

শিক্ষার্থী স্কুল ও কলেজের ইউনিফর্ম পরে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন

বিজ্ঞাপন

নেপালের সংসদ ভবনে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করা বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে দেশটির পুলিশ। 

সোমবার (০৮ সেপ্টেম্বর) দিনভর এই রাজধানী কাঠমান্ডুসহ অন্যান্য শহরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

বিক্ষোভকারীরা কারা?

বিজ্ঞাপন

হাজারো তরুণ নেপালি, যাদের বেশিরভাগের বয়স ২০ বছরের কাছাকাছি বা তারও কম। তারা রাজধানী কাঠমান্ডু এবং দেশের অন্যান্য শহরে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন। বিক্ষোভকারী অনেক শিক্ষার্থী স্কুল ও কলেজের ইউনিফর্ম পরে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন।

বিক্ষোভের আয়োজকরা এই কর্মসূচিকে ‌‌‘জেন জি প্রজন্মের আন্দোলন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

বিক্ষোভের সূচনা কীভাবে?

গত সপ্তাহে নেপালের সরকার একাধিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে। দেশটির সরকারের নতুন নিয়ম অনুযায়ী প্ল্যাটফর্মগুলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিবন্ধন করতে ব্যর্থ হওয়ায় সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

সরকারের দাবি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা ভুয়া আইডি তৈরি করে ঘৃণাত্মক বক্তব্য, ভুয়া খবর ছড়ানো, প্রতারণা এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে।

সরকারি এক আদেশে নেপাল টেলিকমিউনিকেশনস অথরিটিকে নিবন্ধনহীন প্ল্যাটফর্ম নিষ্ক্রিয় করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বন্ধ হয়ে যাওয়া প্ল্যাটফর্মগুলো নিয়ম মেনে নিবন্ধন করলে তাদের সেবা আবারও চালু করা হবে।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, নিষিদ্ধ প্ল্যাটফর্মগুলোর মধ্যে মেটার ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ, অ্যালফাবেটের ইউটিউব, চীনের টেনসেন্ট, স্ন্যাপচ্যাট, পিন্টারেস্ট এবং এক্স রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য

বিজ্ঞাপন

দেশে দুর্নীতি ব্যাপক আকার ধারণ করেছে বলে মনে করেন বেশিরভাগ নেপালি জনগণ। বিরোধীরা প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলির সরকারের সমালোচনা করছেন। সরকার দুর্নীতি দমন কিংবা দীর্ঘদিনের অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিরোধীরা।

নেপালের তরুণরা বলেছেন, এই বিক্ষোভ তাদের ক্ষোভ এবং হতাশার বহিঃপ্রকাশ। যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণে আরও তীব্র হয়েছে।

সোমবার যা ঘটেছে

সোমবার হাজার হাজার তরুণ নেপালের বড় বড় শহরে বিক্ষোভে অংশ নেন। কাঠমান্ডুতে বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে সংসদ ভবনে প্রবেশ করেন এবং একটি অ্যাম্বুলেন্সে আগুন দেন।

পুলিশকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জলকামান, লাঠি এবং রাবার বুলেট ব্যবহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিছু কিছু এলাকায় কারফিউ জারির পাশাপাশি সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ 

দেশজুড়ে চলমান সহিংস-বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেছেন নেপালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক। সোমবার সন্ধ্যার দিকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি।

নেপালি সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানী কাঠমান্ডুর বালুয়াটারে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক শুরু হয়েছে। এই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক।

বৈঠকে অংশ নেওয়া দেশটির একজন মন্ত্রীর বরাত দিয়ে কাঠমান্ডু পোস্ট বলেছে, সোমবার দেশজুড়ে সহিংস বিক্ষোভে কাঠমান্ডুতে ১৭ জন, ইতাহারিতে দু’জন নিহত ও ৪০০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। জেন-জি প্রজন্মের তরুণী-তরুণীদের বিক্ষোভে হতাহতের এই ঘটনায় নৈতিক দায়িত্ববোধ থেকে রমেশ লেখক পদত্যাগ করেছেন।

বিক্ষোভ-সহিংসতার এই ঘটনায় দেশটির ক্ষমতাসীন কেপি অলি শর্মার ওপর ব্যাপক রাজনৈতিক চাপ তৈরি হয়েছে।

রক্তের হাহাকার 

চলমান বিক্ষোভে আহতদের চিকিৎসার জন্য রক্তের চাহিদা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠছে। দেশটির জাতীয় ব্লাড ব্যাংক সেন্ট্রাল ব্লাড ট্রান্সফিউশন সার্ভিসের টেকনিক্যাল কর্মকর্তা সঞ্জীব কুমার যাদব এ তথ্য জানিয়েছেন।

কাঠমান্ডু পোস্টকে সঞ্জীব কুমার যাদব বলেছেন, কাঠমান্ডুর হাসপাতালগুলোতে শত শত আহত রোগী ভর্তি হচ্ছেন। তাদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন হাজার হাজার ব্যাগ রক্ত। আমরা এখন রক্ত সংগ্রহের কাজে খুবই ব্যস্ত আছি।

রক্তের জন্য বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে বিরতিহীনভাবে তাদের দপ্তরে ফোন আসছে উল্লেখ করে সঞ্জীব বলেন, সোমবার সকাল থেকে এ পর্যন্ত আমরা ১ হাজার ২০০ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করেছি এবং সেগুলোর মধ্যে ২০০টিরও বেশি ব্যাগ সন্ধ্যার আগেই ন্যাশনাল ট্রমা সেন্টার ও বীর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকি হাসপাতালগুলোতেও শিগগিরই রক্ত পাঠানোর চেষ্টা চলছে।

‘‘এবং আশার কথা হলো—শত শত তরুণ-তরুণী স্বেচ্ছায় রক্ত দিতে আসছেন। তাদের কাছ থেকে রক্ত সংগ্রহের জন্য আমাদের প্রতিষ্ঠানের ২০ জন কর্মী সারাক্ষণ তৎপর আছেন।’’ সূত্র: কাঠমান্ডু পোস্ট, রয়টার্স।

এমএল/ 

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD