রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে তদন্তে চাপ, সমালোচনার মুখে ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপের অভিযোগে বিতর্কে জড়িয়েছেন। তিনি দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডিকে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে চাপ দিচ্ছেন।
বিজ্ঞাপন
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, রবিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একাধিক পোস্টে ট্রাম্প প্রকাশ্যে বন্ডিকে নির্দেশ দেন আরও আক্রমণাত্মক তদন্ত শুরু করতে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা আর দেরি করতে পারি না। এতে আমাদের সুনাম নষ্ট হচ্ছে।”
তিনি বিশেষভাবে সাবেক এফবিআই প্রধান জেমস কোমি, নিউইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিশিয়া জেমস ও ডেমোক্র্যাট সিনেটর অ্যাডাম শিফের নাম উল্লেখ করে ব্যবস্থা নিতে বলেন। উল্লেখযোগ্যভাবে, শিফই ছিলেন ট্রাম্পের প্রথম অভিশংসন প্রক্রিয়ার তত্ত্বাবধায়ক।
কিছুক্ষণ পর ট্রাম্প আবারও বন্ডির প্রশংসা করে লেখেন, তিনি “চমৎকার কাজ করছেন।”
বিজ্ঞাপন
এর আগে শনিবারও তিনি ক্ষোভ জানিয়ে লিখেছিলেন, “শুধু গল্প, কোনো পদক্ষেপ নেই। কোমি, শিফ, লেটিশিয়া— সবাই বড় অপরাধী, অথচ কিছুই হচ্ছে না।”
ট্রাম্পের এই আচরণের কঠোর সমালোচনা করেছেন ডেমোক্র্যাট নেতারা। সিনেট সংখ্যালঘু নেতা চাক শুমার বলেন, “এটাই একনায়কতন্ত্রের পথ।” তার মতে, বিচার বিভাগ সবসময়ই নিরপেক্ষ ছিল, কিন্তু প্রেসিডেন্ট সেটিকে প্রতিশোধের অস্ত্রে পরিণত করছেন।
ফেডারেল প্রসিকিউটর এরিক সিবার্টের পদত্যাগের পরই ট্রাম্প এই মন্তব্য করেন। যদিও ট্রাম্প দাবি করেছেন, তিনি সিবার্টকে বরখাস্ত করেছেন কারণ লেটিশিয়া জেমসের বিরুদ্ধে মামলা করতে তিনি ব্যর্থ হন। নিউইয়র্ক টাইমসের তথ্য অনুযায়ী, শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে সিবার্ট স্পষ্ট করেন যে অভিযোগের পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ নেই।
বিজ্ঞাপন
লেটিশিয়া জেমস এ অভিযোগকে “অমূলক” ও “প্রতিশোধমূলক” আখ্যা দেন। ২০২৩ সালে তিনিই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মামলায় জয়ী হয়েছিলেন।
বিবিসি বলছে, ১৯৭০-এর দশক থেকে মার্কিন বিচার বিভাগকে প্রেসিডেন্টের প্রভাবমুক্ত রাখার চেষ্টা হলেও ট্রাম্প বারবার নিয়ম ভেঙেছেন। আগেও তিনি তার প্রথম মেয়াদে অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশনসকে সরিয়ে দেন। আর ২০২০ সালের নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ মানতে অস্বীকার করায় অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার পদত্যাগ করেছিলেন।
নির্বাচনী প্রচারণার সময় ট্রাম্প বহুবার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দেন, যার মধ্যে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও ছিলেন।