দার্জিলিংয়ে রাতভর বৃষ্টি ও ভয়াবহ ভূমিধসে নিহত ১৪, বন্ধ সব পর্যটন স্পট

দার্জিলিংয়ে রাতভর টানা বৃষ্টি ও ভয়াবহ ভূমিধসে অন্তত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত ও নিখোঁজ রয়েছেন আরও অনেকে। আকস্মিক এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে পাহাড়ি এলাকার বহু ঘরবাড়ি ও সড়ক ধসে পড়েছে। পর্যটন এলাকা হিসেবে পরিচিত দার্জিলিংয়ের অধিকাংশ দর্শনীয় স্থান আপাতত বন্ধ ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
বিজ্ঞাপন
রবিবার (৫ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, উত্তরবঙ্গে টানা ভারী বৃষ্টিতে দার্জিলিং জেলায় ভয়াবহ ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। মিরিক ও সুখিয়াপোখরিতে অন্তত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। উদ্ধারকাজ অব্যাহত রয়েছে এবং মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
দার্জিলিং জেলা পুলিশের উদ্ধার অভিযান চলছে। ভারী বর্ষণের ফলে পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিমের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। দার্জিলিং-শিলিগুড়ি প্রধান সড়কও বন্ধ রয়েছে। এছাড়া জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি ও কোচবিহারেও ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
ভারতের আবহাওয়া দপ্তর (আইএমডি) শনিবার রাত ১২টা ৪০ ও ৩টা ৪০ মিনিটে সিকিমের ছয়টি জেলায় রেড অ্যালার্ট জারি করে। এতে মাঝারি বজ্রসহ বৃষ্টি ও ঘণ্টায় ৩০-৪০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়ার আশঙ্কা জানানো হয়। পরে সকালে এই সতর্কতা কমিয়ে অরেঞ্জ অ্যালার্ট ঘোষণা করা হয়।
আইএমডি আগেই জানিয়েছিল, ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিপাত ৭ অক্টোবর পর্যন্ত চলতে পারে। কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন, ভুটানে ভারী বৃষ্টির প্রভাবে উত্তরবঙ্গে নিম্নাঞ্চলীয় আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এদিকে ভারী বৃষ্টি ও ভূমিধসের কারণে দার্জিলিংয়ের জনপ্রিয় পর্যটনস্থল টাইগার হিল ও রক গার্ডেনসহ সব দর্শনীয় স্থান সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ)। দার্জিলিংয়ের ঐতিহ্যবাহী টয় ট্রেন সার্ভিসও স্থগিত করা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে এবং আবহাওয়া ও সড়ক পরিস্থিতির হালনাগাদ তথ্য নজরে রাখতে পরামর্শ দিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
পশ্চিমবঙ্গের বিরোধীদলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, উত্তরবঙ্গে লাগাতার ভারী বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। এক্স-এ দেওয়া পোস্টে তিনি বলেন, ‘দার্জিলিং, কালিম্পং ও কুরসিয়ং অঞ্চলে ভূমিধস ও বন্যায় যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন। শিলিগুড়ি, তরাই ও ডুয়ার্সের সঙ্গেও সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।’
তিনি দ্রুত ত্রাণ ও উদ্ধার তৎপরতা জোরদার করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় খাদ্য, পানি, ওষুধ ও অস্থায়ী আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা জরুরি। উত্তরবঙ্গের মানুষের নিরাপত্তা ও কল্যাণই এখন সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।