চিকিৎসায় নোবেল পেলেন তিন বিজ্ঞানী

চিকিৎসা বিজ্ঞানে অসামান্য অবদানের জন্য ২০২৫ সালের নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিন গবেষক মেরি ই. ব্রাঙ্কো, ফ্রেড র্যামসডেল এবং শিমন সাকাগুচি।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৩টা) সুইডেনের স্টকহোমে ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট থেকে এই তিন বিজ্ঞানীর নাম ঘোষণা করা হয়।
তাদের গবেষণা পেরিফেরাল ইমিউন টলারেন্স (অর্থাৎ দেহের প্রতিরোধ ব্যবস্থা কীভাবে নিজের টিস্যুকে ভুলক্রমে আক্রমণ করা থেকে বিরত থাকে) সেই জটিল প্রক্রিয়ার রহস্য উন্মোচন করেছে।
বিজ্ঞাপন
ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট জানায়, মানবদেহের ইমিউন সিস্টেম বাইরের জীবাণু ও ভাইরাস থেকে সুরক্ষা দিলেও কখনও কখনও নিজের কোষকেই আক্রমণ করে বসে, যার ফলে সৃষ্টি হয় অটোইমিউন রোগ। দীর্ঘ গবেষণার পর নোবেলজয়ী তিন বিজ্ঞানী দেখিয়েছেন, এই ভুল প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে এক বিশেষ কোষ রেগুলেটরি টি-সেল (Treg)।
এই টি-সেলগুলোর কার্যকারিতা নির্ভর করে ফক্সপিথ্রি (FOXP3) নামের জিনের ওপর। ১৯৯০-এর দশকে জাপানের শিমন সাকাগুচি প্রথম প্রমাণ করেন, রেগুলেটরি টি-সেল মানবদেহে অপ্রয়োজনীয় ইমিউন প্রতিক্রিয়া প্রতিরোধ করে। পরবর্তীতে মেরি ই. ব্রাঙ্কো ও ফ্রেড র্যামসডেল ফক্সপিথ্রি জিনের ত্রুটির ফলে ইঁদুর ও মানুষের শরীরে অটোইমিউন সমস্যা দেখা দেওয়ার প্রমাণ পান।
গবেষণার মাধ্যমে তারা দেখান, এই জিনই রেগুলেটরি টি-সেলগুলোর বিকাশ ও কাজের মূল নিয়ন্ত্রক, যা পেরিফেরাল ইমিউন টলারেন্সের ভিত্তি গড়ে তোলে। তাদের এই আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের আরও স্পষ্ট ধারণা দিয়েছে, মানবদেহের ইমিউন সিস্টেম কীভাবে ভারসাম্য বজায় রাখে, কখন তা ব্যর্থ হয় এবং ক্যানসার কোষ কীভাবে এই প্রক্রিয়াকে ফাঁকি দিয়ে বেঁচে যায়।
বিজ্ঞাপন
চিকিৎসাবিজ্ঞানে এই সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ তিন বিজ্ঞানীকে দেওয়া হবে ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা, একটি মেডেল এবং সনদপত্র।
উল্লেখ্য, গত বছর চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পেয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের দুই বিজ্ঞানী ভিক্টর অ্যামব্রোস ও গ্যারি রাভকুন, মাইক্রো আরএনএ আবিষ্কারের জন্য।
বিজ্ঞাপন
প্রতি বছর নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করে স্টকহোমের ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট। আগামীকাল (মঙ্গলবার) বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৩টায় ঘোষণা করা হবে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল বিজয়ীদের নাম।
বিশ্বখ্যাত এই পুরস্কার প্রথম দেওয়া হয় ১৯০১ সালে। সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের নামে প্রবর্তিত এই পুরস্কার বর্তমানে পদার্থ, রসায়ন, চিকিৎসা, সাহিত্য, শান্তি এবং ১৯৬৯ সাল থেকে অর্থনীতি, এই ছয় বিভাগে প্রদান করা হয়।