২৭ দিনের মাথায় পদত্যাগ করলেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী

ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী সেবাস্টিয়ান লেকোর্নো মাত্র ২৭ দিন দায়িত্ব নেওয়ার পর পদত্যাগ করেছেন। আজ সোমবার প্যারিসের এলিসি প্রাসাদে তিনি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগপত্র জমা দেন। এলিসি প্রাসাদের কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন যে, প্রেসিডেন্ট তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন।
বিজ্ঞাপন
লেকোর্নো গতকাল রবিবারই নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করেছিলেন, কিন্তু সেই প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার মাত্র ১৪ ঘণ্টার মধ্যেই পদত্যাগপত্র জমা দেওয়া হলো। এর আগে, ৮ সেপ্টেম্বর ফ্রান্সের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঙ্কোইস বায়রো আস্থাভোটে হেরে পদত্যাগ করেন। পরের দিন ৯ সেপ্টেম্বর নিজের দীর্ঘদিনের সহযোগী লেকোর্নোকে প্রধানমন্ত্রীর পদে মনোনয়ন দেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ। ২৭ দিনের মধ্যে পদত্যাগের কারণে লেকোর্নো এখন ফ্রান্সের ইতিহাসে সবচেয়ে অল্প সময়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী হওয়ার রেকর্ড রাখলেন।
পদত্যাগের পেছনে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো কারণ জানানো হয়নি। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের জনগণ ও বিরোধী দলগুলো জাতীয় বাজেটের কাটছাঁট নিয়ে বেশ ক্ষুব্ধ। ফ্রান্সের সরকার অর্থনৈতিক চাপ ও ঋণের কারণে কিছু খাতে সরকারি বরাদ্দ কমানোর প্রস্তাব পাস করে, যার মধ্যে ছিল কল্যাণমূলক ও জনস্বার্থ সংক্রান্ত খাত। এই বাজেট সংস্কারের অংশ হিসেবে মোট ৪,৪০০ কোটি ডলার ছেঁটে দেওয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
এই বাজেট কাটছাঁটকে কেন্দ্র করে জনগণের মধ্যে ক্ষোভের ঝড় ওঠে। তার প্রভাবে পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঙ্কোইস বায়রোর বিরুদ্ধে আস্থাভোটের চ্যালেঞ্জ আসে, যা হেরে যাওয়ায় তাকে পদত্যাগ করতে হয়। বায়রোর পদত্যাগের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লেকোর্নোকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ।
লেকোর্নো কেন পদত্যাগ করেছেন, তা স্পষ্টভাবে বলা হয়নি। এছাড়া, তার স্থলাভিষিক্ত কে হবেন, সে বিষয়ে এখনও কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। তবে পদত্যাগের খবর প্রকাশের পর ডানপন্থি দলগুলো আগাম নির্বাচনের দাবি তুলেছে, আর বামপন্থি দলগুলো প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর অভিশংসনের কথা বলছে।
বিজ্ঞাপন
ফ্রান্সের সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, লেকোর্নোর পদত্যাগের পর দেশটির পুঁজিবাজারের ভলিউম প্রায় ২ শতাংশ কমে গেছে। দেশটি ১৯৫৮ সালের পর এমন গভীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আগামী দিনে ফ্রান্সে রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বাড়তে পারে।