ঝুঁকি নিয়েও ট্রাম্পের ওপর ভরসা হামাসের

দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘বর্ণবাদী’ ও ‘বিশৃঙ্খলার প্রতীক’ বলে সমালোচনা করেছিল ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। অথচ সাম্প্রতিক এক ফোনালাপের পর তাদের অবস্থানে এসেছে নাটকীয় পরিবর্তন— এখন ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতির ওপরই নির্ভর করছে তাদের বড় একটি সিদ্ধান্ত।
বিজ্ঞাপন
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও কাতারের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে হওয়া একটি ফোনালাপের পর হামাসের মধ্যে ট্রাম্পকে নিয়ে নতুন বিশ্বাসের জন্ম হয়। সেই কলেই দোহায় হামাস নেতাদের লক্ষ্য করে চালানো হামলার জন্য কাতারের কাছে ‘ক্ষমা’ চান নেতানিয়াহু। হামাসের ধারণা, ট্রাম্পের হস্তক্ষেপেই নেতানিয়াহুকে এভাবে নমনীয় হতে হয়েছে।
হামাসের দুই ফিলিস্তিনি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছেন, এই ঘটনার পর গোষ্ঠীটি মনে করছে ট্রাম্প ইসরায়েলকে আর যুদ্ধ শুরু করতে দেবেন না। সেই বিশ্বাস থেকেই গত বুধবার যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় তারা, যা শুক্রবার থেকে কার্যকর হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
চুক্তি অনুযায়ী, গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার না হলেও হামাস মুক্তি দিয়েছে সব জিম্মিকে—যাদের তারা এতদিন যুদ্ধের সবচেয়ে বড় ‘অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করছিল। এ সিদ্ধান্ত যে ঝুঁকিপূর্ণ, হামাস নেতারাও তা জানেন। কারণ, আগেও যুদ্ধবিরতি ভেঙে ইসরায়েল নতুন করে আক্রমণ শুরু করেছিল।
তবুও, হামাস মনে করছে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। মিসরে যখন যুদ্ধবিরতির আলোচনায় বসে উভয় পক্ষ, তখন ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠজনরা হামাসকে আশ্বাস দেন— যুদ্ধ আর শুরু হবে না। আলোচনায় ট্রাম্প নিজেও তিনবার ফোন করে অংশ নেন। তার সঙ্গে ছিলেন ঘনিষ্ঠ সহযোগী স্টিভ উইটকোফ ও জামাতা জ্যারেড কুশনার।
বিজ্ঞাপন
রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ট্রাম্পের দেওয়া ২০ দফার শান্তি প্রস্তাবের সবটি বাস্তবায়ন সম্ভব না হলেও বর্তমান যুদ্ধবিরতি স্থায়ী শান্তির ভিত্তি গড়ে দিতে পারে। বিশেষ করে ট্রাম্প যেভাবে কাতারের কাছে নেতানিয়াহুকে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেছেন এবং ইরান-ইসরায়েল সংঘাত থামাতে ভূমিকা রেখেছেন, তাতে হামাসের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে— অন্তত আপাতত ট্রাম্প ইসরায়েলকে আর যুদ্ধ শুরু করতে দেবেন না।
সূত্র: রয়টার্স