ভারত সফরে যুক্তরাষ্ট্র–পাকিস্তানকে কড়া বার্তা তালেবান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

ভারত সফরে এসে যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান জানিয়েছেন আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, আফগানিস্তানের মাটিতে কোনো বিদেশি শক্তির নিয়ন্ত্রণ মেনে নেওয়া হবে না।
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) সফরের দ্বিতীয় দিনে দিল্লিতে আফগান দূতাবাসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মুত্তাকি। ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতা গ্রহণের পর এই প্রথমবার তিনি ভারত সফরে আসেন। জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা শিথিল হওয়ায় তার এই সফরের সুযোগ হয়।
সম্প্রতি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আফগানিস্তানের বারগাম বিমান ঘাঁটি ফের মার্কিন নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার আহ্বান জানান। সেই প্রসঙ্গ টেনে মুত্তাকি বলেন, “আফগানিস্তান কখনোই কোনো বিদেশি সামরিক উপস্থিতি মেনে নেয়নি, ভবিষ্যতেও নেবে না। সম্পর্ক চাইলে কূটনৈতিক পথে আসুন, সামরিক পোশাকে নয়।”
বিজ্ঞাপন
সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। সাম্প্রতিক সীমান্ত হামলার প্রসঙ্গ তুলে বলেন, “পাকিস্তানের এই পদক্ষেপ ভুল। আফগানদের সাহস পরীক্ষা করা উচিত নয়। যারা তা করতে চায়, তারা সোভিয়েত ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর পরিণতি দেখে নিতে পারে।”
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস. জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকে মুত্তাকি কাবুলে ভারতের দূতাবাস পুনরায় চালুর বিষয়টি স্বাগত জানান। তিনি বলেন, “ভারতের টেকনিক্যাল মিশনকে পূর্ণাঙ্গ দূতাবাসের পর্যায়ে উন্নীত করার ঘোষণা শুনে আমি আনন্দিত।”
জয়শঙ্কর বলেন, “ভারত ও আফগানিস্তানের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। এই সফর দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতার নতুন দিগন্ত খুলবে।”
বিজ্ঞাপন
এছাড়া আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতকে “ঘনিষ্ঠ বন্ধু” আখ্যা দিয়ে বলেন, “আফগানিস্তানে সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে ভারত প্রথম পাশে দাঁড়িয়েছিল। আমরা বাণিজ্য ও জনগণের পারস্পরিক সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চাই।”
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলায় ২৩ নিহত
চাবাহার বন্দর নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মুত্তাকি বলেন, “এটি দুই দেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য রুট। মার্কিন নিষেধাজ্ঞাজনিত প্রতিবন্ধকতা দূর করতে ভারত ও আফগানিস্তানকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”
বিজ্ঞাপন
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ভারত আফগান নাগরিকদের জন্য নতুন ভিসা নীতি চালু করেছে, যার আওতায় চিকিৎসা, শিক্ষা ও ব্যবসা ক্ষেত্রে আরও বেশি ভিসা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি খাদ্য সহায়তা ও ২০টি অ্যাম্বুলেন্স উপহার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে নয়াদিল্লি, যার মধ্যে প্রথম পাঁচটি ইতোমধ্যে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা