ভারতে নারীদের নামাজের পর ‘গোমূত্র শুদ্ধি’ নিয়ে তোলপাড়

ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের পুণেতে মুসলিম নারীদের নামাজ আদায়কে কেন্দ্র করে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। ঐতিহাসিক শানিওয়ারওয়াড়া দুর্গে কয়েকজন নারী নামাজ আদায় করার পর বিজেপি নেতাদের নেতৃত্বে সেখানে ‘গোমূত্র শুদ্ধিকরণ’ কর্মসূচি পালিত হয়।
বিজ্ঞাপন
ঘটনাটি সামনে আসতেই রাজ্যজুড়ে রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) ভারতের শীর্ষ সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্গের ভেতরে নামাজ আদায়ের ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর বিজেপি সংসদ সদস্য মেধা কুলকার্নি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়ে ‘শুদ্ধি’ কর্মসূচিতে অংশ নেন। অভিযোগ, তার নেতৃত্বে কয়েকজন বিজেপি কর্মী গোমূত্র ছিটিয়ে স্থানটি ধুয়ে ফেলেন এবং সেখানে ‘শিব বন্দনা’ পাঠ করেন।
বিজ্ঞাপন
বিষয়টি নিয়ে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর (এএসআই) কর্তৃপক্ষ স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে। যদিও এখন পর্যন্ত নামাজ আদায় করা নারীদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
এ নিয়ে বিজেপি সাংসদ মেধা কুলকার্নি বলেন, “শানিওয়ারওয়াড়া নামাজের জায়গা নয়। এখানে নামাজ আদায় করা দুঃখজনক ও উদ্বেগজনক। প্রশাসনের উচিত বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা।”
অন্যদিকে, মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী নিতেশ রানে বলেন, “শানিওয়ারওয়াড়া হিন্দু ঐতিহ্যের প্রতীক। মুসলিমরা যদি মসজিদে নামাজ পড়েন, তাতে সমস্যা নেই। কিন্তু এই ঐতিহাসিক স্থানে তা গ্রহণযোগ্য নয়।”
বিজ্ঞাপন
তবে বিজেপির এই পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করেছে বিরোধীরা।
এনসিপি নেতা অজিত পাওয়ারের মুখপাত্র রূপালি পাটিল থোম্বরে বলেন, “মেধা কুলকার্নির বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক বিভাজন সৃষ্টির অভিযোগে মামলা হওয়া উচিত। তিনি হিন্দু-মুসলমানদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নষ্ট করার চেষ্টা করছেন।”
বিজ্ঞাপন
শিবসেনা নেত্রী নীলম গোহরে বলেন, “শানিওয়ারওয়াড়া প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সংরক্ষিত এলাকা। নিয়ম ভাঙলে প্রশাসনই ব্যবস্থা নেবে—কেউ যেন নিজ হাতে আইন তুলে না নেয়।”
এদিকে পুলিশ জানায়, দুর্গ এলাকায় অতিরিক্ত নিরাপত্তা মোতায়েন করা হয়েছে এবং ঘটনাটি তদন্তের আওতায় রয়েছে।