গাজায় নিরাপত্তা বাহিনী নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব অনুমোদন দিল জাতিসংঘ

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব অনুযায়ী গাজায় আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী মোতায়েনের অনুমোদন দিয়েছে। এটি ট্রাম্পের ঘোষিত যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গঠিত হবে এবং গাজায় অন্তর্বর্তী প্রশাসন গঠনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
বিজ্ঞাপন
প্রস্তাবটি সোমবার (১৭ নভেম্বর) গৃহীত হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাহিনী গাজায় অস্ত্র জমা নেওয়া, সামরিক অবকাঠামো ধ্বংস এবং নিরস্ত্রীকরণের কার্যক্রম তদারকিতে ভূমিকা রাখবে। এছাড়া ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন ‘বোর্ড অব পিস’ সদস্য দেশগুলো উপত্যকার পুনর্গঠন ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের তদারকি করবে।
তবে হামাস স্পষ্ট জানিয়েছে, তারা কোনো বিদেশি সামরিক বাহিনী গ্রহণ করবে না। সংগঠনের এক মুখপাত্র বলেন, প্রস্তাবটি ইসরায়েলি দখলের বিকল্প হিসেবে আন্তর্জাতিক অভিভাবকত্ব আরোপ করছে, যা ফিলিস্তিনি জনগণ ও সমস্ত গোষ্ঠীর জন্য গ্রহণযোগ্য নয়।
বিজ্ঞাপন
গাজার দারাজ এলাকায় একটি স্কুল আশ্রয়কেন্দ্রে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় অন্তত ১৩ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন, আহতদের মধ্যে একজন শিশু।
গাজার প্রশাসন জানিয়েছে, শীতের কারণে অন্তত ৩ লাখ তাঁবু প্রয়োজন, যা বাস্তুচ্যুত মানুষদের অস্থায়ী আশ্রয় নিশ্চিত করবে।
অক্টোবর ২০২৩ থেকে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ৬৯,৪৮৩ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,৭০,৭০৬ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১,১৩৯ জন নিহত এবং প্রায় ২০০ জনকে বন্দি করা হয়।
বিজ্ঞাপন
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মাইক ওয়ালটজ বলেন, প্রস্তাবটি ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের সম্ভাবনা তৈরি করছে এবং রাজনৈতিক সমাধানের নতুন দিগন্ত খুলতে সাহায্য করবে।
ভোটের আগে রাশিয়া ও চীনের রাষ্ট্রদূত ভোটে বিরত থাকেন। রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া মন্তব্য করেন, নিরাপত্তা পরিষদ ওয়াশিংটনের আশ্বাসের ভিত্তিতে একটি উদ্যোগ সমর্থন করছে, যার প্রক্রিয়া এখনও স্পষ্ট নয়।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ প্রস্তাবটি স্বাগত জানিয়েছে এবং বাস্তবায়নে অংশ নিতে প্রস্তুত। তবে হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যে প্রস্তাবের বাস্তবায়ন নিয়ে ভবিষ্যতে সংঘাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
প্রস্তাবে উল্লেখ আছে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ সংস্কার কর্মসূচি শেষ করলে এবং পুনর্গঠন কার্যক্রম এগিয়ে নিলে, ফিলিস্তিনিদের রাষ্ট্রগঠনের পথে একটি বিশ্বাসযোগ্য অবস্থান তৈরি হবে।
এদিকে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকারের কট্টর দক্ষিণপন্থী মন্ত্রীদের চাপের মুখে বলেন, গাজা নিরস্ত্রীকরণ করা হবে, সহজ বা কঠিন উপায়ে—যেভাবেই হোক।
বিজ্ঞাপন
এই পরিস্থিতিতে গাজায় অন্তর্বর্তী প্রশাসন ও আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী মোতায়েন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক, কূটনীতিক ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণবিন্দু হিসেবে দেখা হচ্ছে।








