ইন্দোনেশিয়ায় বন্যা-ভূমিধসে মৃত্যু ৯০০ ছাড়িয়েছে

টানা কয়েকটি ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত ও লাগাতার বর্ষণে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা ও আচেহ প্রদেশে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধস পরিস্থিতি ক্রমেই আরও দুঃসহ হয়ে উঠছে। দুই অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রাম ও উপকূলীয় এলাকা থেকে এখন পর্যন্ত ৯১৬ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এখনও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না অন্তত ২৭৪ জনকে— জানিয়েছে স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় প্রশাসনভিত্তিক একাধিক সরকারি সূত্র।
আচেহের তামিয়াং জেলায় ক্ষতিগ্রস্তদের দুর্দশা সবচেয়ে বেশি দৃশ্যমান। বন্যার পানিতে চারদিকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া মানুষ খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে দিন কাটাচ্ছেন। প্রত্যন্ত অঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ প্রায় অচল হয়ে যাওয়ায় উদ্ধার ও ত্রাণ সরবরাহ কঠিন হয়ে পড়েছে।
তামিয়াংয়ের একটি ইসলামি আবাসিক স্কুলে আটকা থাকা শিক্ষার্থী দিমাস ফিরমানসিয়াহ (১৪) জানান, এক সপ্তাহ ধরে তারা হোস্টেলেই বন্দী। পানির মজুত শেষ হয়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে বন্যার পানি পান করতে হচ্ছে তাদের।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকারি ত্রাণকেন্দ্র থেকে খাবার ও পানি সংগ্রহ করতে গিয়েও বহু ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে।
এর আগে প্রেসিডেন্ট প্রবাও সুবিয়ান্তো মন্তব্য করেছিলেন— পরিস্থিতি ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে আসছে এবং সরকারের প্রস্তুতি সন্তোষজনক। তবে সুমাত্রা ও আচেহ প্রদেশের প্রশাসন জানায়, বাস্তব অবস্থা এখনো ভয়াবহ; তাই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জরুরি অবস্থা ঘোষণার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এদিকে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর অভিযোগ— ব্যাপক প্রাণহানি ও ক্ষতির জন্য প্রধানত বন উজাড় এবং অবৈধ খনি কার্যক্রম দায়ী। তাদের দাবি, চীনের অর্থায়নে পরিচালিত নর্থ সুমাত্রা হাইড্রো এনার্জি ও এগিনকোর্ট রিসোর্সেসসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ডে পরিবেশ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে যোগাযোগ করলেও কোম্পানিগুলো কোনো মন্তব্য করেনি।
বিজ্ঞাপন
গত নভেম্বরের শেষ দিক থেকে ঘূর্ণিঝড় ‘সেনিয়া’সহ পরপর কয়েকটি ঝড় ও অতিবৃষ্টিতে সুমাত্রা ও আচেহে বন্যা শুরু হয়। পরে বিভিন্ন স্থানে ভূমিধস দেখা দিলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নেয় এবং মৃতের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে।








