আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও গুরুত্ব পেয়েছে তারেক রহমানের দেশে ফেরার খবর

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসন শেষে দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা তারেক রহমান। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে তার প্রত্যাবর্তন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি বড় ও তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হিসেবে মূল্যায়িত হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে ৬০ বছর বয়সী তারেক রহমানের। ২০০৮ সালে রাজনৈতিক নিপীড়নের অভিযোগ তুলে লন্ডনে বসবাস শুরু করেন তিনি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আকাঙ্ক্ষা পোষণ করছেন।
এএফপি প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তারেক রহমানের মা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। বয়স ৮০ হলেও তিনি সম্প্রতি জানিয়ে দিয়েছেন যে আগামী ২০২৬ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবেন। এ পরিস্থিতিতে দলের নেতৃত্ব কার্যত তারেক রহমানের হাতে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
আল জাজিরা জানিয়েছে, বিএনপি রাজধানীতে ইতিহাসের অন্যতম বড় সমাবেশ আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাদের দাবি, প্রায় ৫০ লাখ নেতাকর্মী ও সমর্থক ঢাকায় জড়ো হয়ে তারেক রহমানকে স্বাগত জানাতে পারেন। বিএনপির এই আগমন দেশের রাজনীতিতে নতুন গতি ফিরিয়ে আনতে পারে।
কাতারভিত্তিক সংস্থা আরও লিখেছে, তারেক রহমান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও দলের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে সবচেয়ে এগিয়ে থাকা নেতা হিসেবে দেখা হচ্ছে। নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ সীমিত থাকায় বিএনপির জয়ের সম্ভাবনা জোরালো বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
রয়টার্স উল্লেখ করেছে, প্রায় ১৭৫ মিলিয়ন জনসংখ্যার মুসলিম-প্রধান বাংলাদেশ সংবেদনশীল নির্বাচনী সময় পার করছে। নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার এই নির্বাচন পরিচালনা করছে। ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, বিএনপি সংসদে সবচেয়ে বেশি আসন পেতে পারে।
বিজ্ঞাপন
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, প্রায় ১৭ বছর বিদেশে থাকার পর তারেক রহমান লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান ও মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। বিএনপির পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিলে তিনি ২০০৯ সালে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এবং প্রবাস থেকেও দলের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।
এই প্রত্যাবর্তন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও প্রতীকী ঘটনা। দীর্ঘ রাজনৈতিক অস্থিরতার পর তার দেশে ফেরার ঘটনা দেশটির গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও ক্ষমতার ভারসাম্যের ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
বিজ্ঞাপন
বিমানবন্দর অবতরণের পর তারেক রহমান ও তার পরিবারকে সংক্ষিপ্ত আনুষ্ঠানিকতা শেষে স্বাগত জানানো হয়। এরপর তিনি সড়কপথে ৩০০ ফিট এলাকায় আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন এবং এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
উৎসবমুখর পরিবেশে রাজধানীর পূর্বাচল ৩০০ ফিট হাইওয়ে এলাকায় রাত থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা জড়ো হতে শুরু করেছেন। মুখে মুখে শোনা যাচ্ছে একটাই স্লোগান: ‘লিডার আসছে’।








