ইসির নিবন্ধন পাচ্ছে নতুন ছয় রাজনৈতিক দল

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) চূড়ান্ত নিবন্ধন পেতে যাচ্ছে জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) ছয়টি নতুন রাজনৈতিক দল। কমিশনের স্বাক্ষর শেষে নতুন নিবন্ধিত দলগুলোর বিষয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করবে ইসি।
বিজ্ঞাপন
ইসির দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, মাঠ পর্যায়ে যাচাই-বাছাই শেষে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় লীগসহ মোট ছয়টি দলকে চূড়ান্ত নিবন্ধনের জন্য নথিতে ফাইল তোলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট শাখার কার্যক্রম বা স্বাক্ষর সম্পন্ন হয়েছে গত রোববার। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) ফাইল কমিশনের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। তবে কমিশন চাইলে শাখার প্রস্তাবে সংযোজন-বিয়োজন করতে পারবে। চূড়ান্ত অনুমোদনের পর গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।
সূত্র জানায়, ছয় দলের নিবন্ধনের জন্য ফাইল কমিশনের কাছে পাঠানো হয়েছে। ১০টি দলের বিষয়ে পুনঃতদন্ত হবে এবং বাকি ছয় দলের আবেদন বাতিল করা হয়েছে। ওই ১০টির মধ্যে ৯টির পুনঃতদন্ত মাঠ পর্যায়ে এবং একটি দলের পুনঃতদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে ইসির একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে।
এর আগে ইসির অতিরিক্ত সচিব আলী নেওয়াজ গত ১৪ ও ১৫ সেপ্টেম্বর দুটি দল ছাড়া ২০টি দলের শুনানি করেন। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দল নিবন্ধনের আবেদন আহ্বান করে ইসি। এতে ১৪৩টি নতুন রাজনৈতিক দল আবেদন করে। প্রথম দফায় কোনো দল শর্ত পূরণ না করায় সবাইকে ঘাটতি পূরণের সময় দেওয়া হয়। পরে জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ ৮৪টি দল সাড়া দিলেও বাকিরা সাড়া দেয়নি। এর মধ্যে ৬২টি দল তথ্য জমা দিলেও শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হয়। শেষ পর্যন্ত ২২টি দলের মাঠ পর্যায়ে তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শুনানি নেয় ইসি।
বিজ্ঞাপন
নির্বাচন কমিশনের কাজে গতিশীলতা আনতে দুটি আইন সংস্কারের অনুমোদনের পর যে ২২টি দলের মাঠ পর্যায়ে তদন্ত করা হয় সেগুলো হলো— ফরোয়ার্ড পার্টি, আমজনতার দল, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি (বিজিপি), বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি), বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী), মৌলিক বাংলা, বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি, জাতীয় জনতা পার্টি, জনতার দল, জনতা পার্টি বাংলাদেশ, বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ জাতীয় লীগ, ভাসানী জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ-শাহজাহান সিরাজ), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ বেকার সমাজ (বাবেস), বাংলাদেশ সলুশন পার্টি এবং নতুন বাংলাদেশ পার্টি।
আইন অনুযায়ী, নিবন্ধন পেতে হলে দলের একটি কেন্দ্রীয় কমিটি, কমপক্ষে এক-তৃতীয়াংশ জেলায় কমিটি, ১০০টি উপজেলা কমিটি এবং প্রতিটি কমিটিতে অন্তত ২০০ ভোটারের সমর্থনের প্রমাণ থাকতে হয়। এছাড়া কোনো দলের প্রার্থী আগে সংসদ সদস্য থাকলে বা গত নির্বাচনে মোট ভোটের পাঁচ শতাংশ পেলে নিবন্ধনের যোগ্যতা অর্জন করে। এ ছাড়া আরও কিছু নিয়ম-কানুন মেনে আবেদন করতে হয়।
বিজ্ঞাপন
আবেদন পাওয়ার পর ইসি প্রথমে প্রাথমিক বাছাই করে। এরপর মাঠ পর্যায়ে সরেজমিন তদন্ত শেষে বাছাই সম্পন্ন হয়। পরে মনোনীত দলগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে দাবি-আপত্তি চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। আপত্তি এলে শুনানি করে নিষ্পত্তি করা হয়। কোনো আপত্তি না থাকলে নিবন্ধন সনদ দেওয়া হয়। নিবন্ধন ছাড়া কোনো দল নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচনে প্রার্থী দিতে পারে না।
বর্তমানে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৫১টি (আওয়ামী লীগসহ)। নতুন ছয়টি দল নিবন্ধিত হলে এ সংখ্যা দাঁড়াবে ৫৭-এ। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন প্রথা চালু করে ইসি।