এবার সারাদেশে সরকারি কলেজ শিক্ষকদের কর্মবিরতি

ঢাকা কলেজে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও শিক্ষার্থীর ওপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদে সারাদেশের সরকারি কলেজে কর্মবিরতি পালন করছেন শিক্ষকরা। একইসঙ্গে কালো ব্যাজ ধারণ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের কর্মকর্তারা। বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের ডাকে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
বিজ্ঞাপন
কর্মবিরতির কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সব সরকারি-বেসরকারি কলেজের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। শিক্ষকরা ঢাকা কলেজের শিক্ষক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের গ্রেফতার ও আইনের আওতায় আনাসহ ১০ দফা দাবি উত্থাপন করেছেন।
কর্মসূচির কারণে মঙ্গলবার কোনো ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়নি। ঢাকা কলেজে দেখা গেছে, শিক্ষকরা নিজ নিজ বিভাগ থেকে বের হয়ে শহীদ মিনারের সামনে অবস্থান নেন। সেখানে কলেজের অধ্যক্ষ এ কে এম ইলিয়াস হোসেনও উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
এদিন ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষকরা প্রতিবাদ মিছিল করেন। কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শামছুন নাহার বলেন, “শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। শিক্ষকদের মর্যাদা রক্ষায় কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”
অন্যদিকে, ঢাকার সাত কলেজ একীভূত করে প্রস্তাবিত ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ গঠনের দাবিকে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষ ও শিক্ষক হেনস্তার ঘটনায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এর প্রতিবাদে ঢাকা কলেজের ছাত্ররা রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব মোড়ে ‘ব্লকেড কর্মসূচি’ পালন করে। বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীরাও এতে সংহতি জানান।
অন্যদিকে, প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়নের দাবিতে আরেকদল শিক্ষার্থী ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করে।
বিজ্ঞাপন
বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. খান মইনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল এবং সদস্য সচিব ড. মো. মাসুদ রানা খান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার রাতে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঐতিহ্যবাহী ঢাকা কলেজে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের ওপর দুষ্কৃতকারীদের হামলা এবং টিচার্স লাউঞ্জে ভাঙচুরের ঘটনায় সংগঠনটি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। একইসঙ্গে দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ঢাকাসহ দেশের সব সরকারি কলেজের শিক্ষকরা আজ সর্বাত্মকভাবে কর্মবিরতি পালন করবেন। কর্মসূচি সফল করতে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের সব কর্মকর্তাকে অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।
সংগঠনটির নেতারা বলেন, “শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এমন ঘটনা শিক্ষাঙ্গনে ভয় ও অস্থিরতা সৃষ্টি করে, যা রাষ্ট্রীয় শিক্ষাব্যবস্থার জন্য হুমকিস্বরূপ।”
এর আগে সোমবার সকালে ঢাকা কলেজ প্রাঙ্গণে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি আইন-২০২৫’ বাস্তবায়নের দাবিতে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের পদযাত্রার সময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে।
বিজ্ঞাপন
এসময় এক শিক্ষার্থী শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে ‘দালাল’ মন্তব্য করলে শিক্ষকরা তাকে কমনরুমে আটক করেন। পরে তার সহপাঠীরা প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করে তাকে ছাড়িয়ে আনে। এতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়।