ইসির প্রতীক তালিকায় যুক্ত হলো ‘শাপলা কলি’

নির্বাচন কমিশন (ইসি) রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতীকের তালিকা সংশোধন করে নতুনভাবে গেজেট প্রকাশ করেছে। এবার তালিকায় যুক্ত হয়েছে নতুন প্রতীক ‘শাপলা কলি’।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদের স্বাক্ষরে প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ১৯৭২ সালের আর্টিক্যাল ৯৪ এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে নির্বাচন কমিশন, ‘নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, ২০০৮’ এর নিম্নরূপ অধিকতর সংশোধন করিল, উপরি-উক্ত বিধিমালার বিধি ৯ এর উপ-বিধি (১) এর পরিবর্তে নিম্নরূপ উপ-বিধি (১) প্রতিস্থাপিত হইবে।
বিজ্ঞাপন
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, এই বিধির অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে, অনুচ্ছেদ ২০ এর দফা (১) এর অধীন, স্থগিতকৃত প্রতীক ব্যতীত, নিম্নবর্ণিত প্রতীকসমূহ হইতে, প্রাপ্যতা সাপেক্ষে, যে কোনো একটি প্রতীক বরাদ্দ করা যাইবে।
প্রজ্ঞাপনে প্রদত্ত প্রতীকগুলো হলো—আনারস, গাভি, টেলিভিশন, বই, রেল ইঞ্জিন, আম, গামছা, ডাব, বক, রিকশা, আলমিরা, গোলাপ ফুল, ড্রেসিং টেবিল, বাঘ, লিচু, ঈগল, ঘণ্টা, ঢেঁকি, বটগাছ, লাঙল, উট, ঘুড়ি, তারা, বাইসাইকেল, শাপলা কলি, উদীয়মান সূর্য, ঘোড়া, তালা, বালতি, সোনালি আঁশ, একতারা, চাকা, থালা, বেবি টেক্সি, সেলাই মেশিন, কাঁচি, চাবি, দাঁড়িপাল্লা, বৈদ্যুতিক পাখা, সোফা, কবুতর, চিরুনি, দালান, বৈদ্যুতিক বাল্ব, সিঁড়ি, কলম, চিংড়ি, দেয়ালঘড়ি, মই, সিংহ, কলস, চেয়ার, দোতলা বাস, মগ, সূর্যমুখী, কলার ছড়ি, কাঁঠাল, চশমা, দোয়াত-কলম, মাইক, হরিণ, কাপ-পিরিচ, ছড়ি, দোলনা, মোটরগাড়ি (কার), হাত (পাঞ্জা), কাস্তে, জগ, নোঙর, ছাতা, ধানের শীষ, মশাল, হাতঘড়ি, কেটলি, জাহাজ, নৌকা (স্থগিত), ময়ূর, হাতপাখা, হাঁস, কুমির, টর্চলাইট, পাগড়ি, মাছ, হাতি, কম্পিউটার, টিউবওয়েল, পানির ট্যাপ, মাথাল, হাতুড়ি, কুড়াল, টেবিল, পালকি, মিনার, হারিকেন, কুলা, টেবিল, প্রজাপতি, মোমবাতি, হ্যান্ডশেক, কুঁড়েঘর, টেবিলঘড়ি, ফলের ঝুড়ি, মোটরসাইকেল, মোবাইল ফোন, হুঁকা, কোদাল, খেজুরগাছ, ট্রাক, ফুটবল, মোড়া, হেলিকপ্টার, ট্রাক্টর, ফুলকপি ও মোরগ।
দলীয় প্রতীক হিসেবে শুরু থেকেই ‘শাপলা’ চেয়ে আসছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গত জুনে নিবন্ধন আবেদনের সময় দলটি শাপলার পাশাপাশি কলম ও মোবাইল ফোন প্রতীকও চেয়েছিল। পরে কেবল ‘শাপলা’ প্রতীকেই জোর দেয় তারা। তবে নির্বাচন কমিশনের প্রতীক তালিকায় ‘শাপলা’ না থাকায় এনসিপির আবেদন বারবারই নাকচ হয়ে যায়।
বিজ্ঞাপন
এর আগে মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বাধীন নাগরিক ঐক্যও একই প্রতীক চেয়েছিল, কিন্তু কমিশন সে আবেদনও গ্রহণ করেনি।
গত কয়েক মাস ধরে এনসিপি ও ইসির মধ্যে প্রতীক নিয়ে টানাপোড়েন চলছিল। এ বিষয়ে একাধিকবার চিঠি চালাচালি, সাক্ষাৎ ও বৈঠক হয়। সবশেষ গত ৭ অক্টোবর দলটি আবারও ‘শাপলা’ প্রতীক চেয়ে ইসিকে সাতটি নমুনাচিত্র পাঠায়। কিন্তু ইসি সাফ জানিয়ে দেয়—বিধিমালার তালিকায় না থাকায় ‘শাপলা’ প্রতীক দেওয়া সম্ভব নয়।
ইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, কমিশন নিজ বিবেচনায় বিকল্প কোনো প্রতীক বরাদ্দ করবে। এরপর ১৯ অক্টোবর প্রতীক পছন্দের শেষ তারিখেও এনসিপি জানায়, তারা ‘শাপলা’ ছাড়া অন্য কোনো প্রতীক নেবে না।
বিজ্ঞাপন
অবশেষে আজ নির্বাচন কমিশন প্রতীক তালিকা সংশোধন করে ‘শাপলা কলি’ যুক্ত করেছে—যা রাজনৈতিকভাবে এনসিপির জন্য নতুন এক মোড় তৈরি করেছে।
গত ২৭ অক্টোবর দুপুরে নির্বাচন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছিলেন, বিধিমালায় শাপলা প্রতীক না থাকায় এনসিপিকে সেটি দেওয়ার সুযোগ নেই, এটি আমরা আগেও বলেছি। নির্বাচন কমিশন স্ববিবেচনায় অন্য প্রতীক দিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করবে।








