রাজশাহী বিভাগে বাড়ছে বাল্যবিবাহের হার, শিকার ৬৭% মেয়ে

সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, রাজশাহী বিভাগে দেশের মধ্যে বাল্যবিবাহের হার সর্বোচ্চ। ১৮ বছরের আগেই এখানে প্রায় ৬৭ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
বিশেষত গ্রামে এই হার ৫৬ শতাংশ এবং শহরে ৫০ শতাংশ। এর মধ্যে ১৫ বছরের আগে বিয়ে করা মেয়ের হার ১৩ শতাংশ। কম বয়সে মা হওয়ার ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকি ও মাতৃ-শিশু জটিলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
রাজশাহীর পুঠিয়ার স্কুল ছাত্রী সামিয়ার ঘটনা এ পরিস্থিতির একটি উদাহরণ। জন্মনিবন্ধন অনুযায়ী তার বয়স মাত্র ১৬ বছর। পারিবারিক অনুমতি না থাকায় বন্ধুর সঙ্গে অন্যত্র গিয়ে বিয়ে করেন। গত ২৬ অক্টোবর থেকে নিখোঁজ হওয়ায় পরিবারের সদস্যরা থানায় মামলা করেন। পরে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে তারা জানতে পারেন, মেয়েটি বিয়ে করেছে। মেয়েকে ফিরে না পেয়ে পরিবারের সদস্যরা দিন পার করছেন উদ্বেগ ও আহাজারিতে।
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা জানান, রাজশাহীতে পারিবারের অমতে অল্প বয়সে বিয়ের সংখ্যা বেড়েছে। শুধু বাল্যবিবাহ নয়, এই বিভাগে বিবাহিত মহিলাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর দ্বারা সহিংসতার শিকার, তালাকের হার এবং বহুবিবাহের প্রবণতাও বেড়েছে।
ইউনিসেফ ও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর চলতি মাসের জরিপে বলা হয়েছে, কম বয়সে গর্ভধারণের ফলে শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্যের ঝুঁকি বাড়ছে।
এ বিষয়ে অ্যাসোসিয়েশন ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট (এসিডি)-এর নির্বাহী পরিচালক সালীমা সারোয়ার বলেন, শিক্ষার অভাব, অর্থনৈতিক চাপ, দারিদ্র্যতা, বাবা-মায়ের উদাসীনতা এবং সামাজিক রীতিনীতি বাল্যবিবাহের মূল কারণ।
বিজ্ঞাপন
রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, বাল্যবিবাহ কমানোর জন্য জোর আইনি পদক্ষেপের পাশাপাশি সচেতনতা বৃদ্ধিতে নানা কার্যক্রম করা হচ্ছে। কমিউনিটি পুলিশিং, উঠান বৈঠক ও স্থানীয় সভার মাধ্যমে বাল্যবিবাহের কুফল নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে।
আইন অনুযায়ী, পুরুষের বিয়ে ২১ বছরের নিচে এবং নারীর বিয়ে ১৮ বছরের নিচে হলে সেটি বাল্যবিবাহ হিসেবে গণ্য হবে।
বিজ্ঞাপন
রাজশাহী বিভাগের এই উদ্বেগজনক প্রবণতা রোধে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষার প্রসারকে অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।








