দিনভর অবরোধের পর রাতেও শিক্ষা ভবনের সামনেই ছিল শিক্ষার্থীরা

ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির চূড়ান্ত অধ্যাদেশ জারির দাবিতে দিনভর সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালনের পর রাতেও শিক্ষা ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।
বিজ্ঞাপন
গতকাল রবিবার সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে তারা তাদের দাবি তুলে ধরেন। জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনায় অবরোধ তুলে নিলেও ঘোষণা দেন— অধ্যাদেশ পাওয়া না গেলে কেউ ঘরে ফিরবেন না।
রাত গভীর হওয়া সত্ত্বেও শিক্ষা ভবনের সামনে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা জানান, তারা আর কোনো আশ্বাসে ফিরতে চান না। অধ্যাদেশ জারি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন থেকে সরে আসবেন না।
আরও পড়ুন: বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত নগর আজ ঢাকা
বিজ্ঞাপন
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান বলেন, দিনভর রাস্তায় থেকেও কোনো নিশ্চয়তা পাইনি। তাই রাতে বাসায় না গিয়ে এখানেই থেকেছি। ঘরে ফিরলে আবার অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়তে হবে। আমাদের একমাত্র দাবি—চূড়ান্ত অধ্যাদেশ।
ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী স্মৃতি আক্তার জানান, যত কষ্টই হোক, অধ্যাদেশ হাতে না পাওয়া পর্যন্ত আমরা এখানেই থাকছি। গতকাল থেকে এক দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছি। সমাধান না পাওয়া পর্যন্ত অবস্থান ছাড়ছি না।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করছেন, দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানালেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোনো অগ্রগতি নেই। এতে দেড় লক্ষাধিক শিক্ষার্থী পরিচয়সংকট ও একাডেমিক অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। তাদের ঘোষণা—অধ্যাদেশ জারি না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান, অবরোধ, ঘেরাও—সব ধরনের কর্মসূচি চলবে। পাশাপাশি আন্দোলন আরও জোরদার করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তারা।
বিজ্ঞাপন
আজ সোমবার সকাল থেকে নতুন করে আরও শিক্ষার্থী অবস্থান-অবরোধ কর্মসূচিতে যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর আন্দোলনের প্রতিনিধি নাঈম হাওলাদার বলেন, রোববার সকাল ১০টায় পৃথক সাতটি পয়েন্ট থেকে শিক্ষার্থীরা পদযাত্রা করে শিক্ষা ভবনের সামনে জড়ো হন। এরপর কলেজ রোড, আব্দুল গণি রোড, দোয়েল চত্বর ও হাইকোর্টের মাজার রোড—এই চারটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে অবরোধ সৃষ্টি হয়। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা সড়ক অবরোধে সচিবালয় এলাকার যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, আমাদের এক দফা দাবি—ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির চূড়ান্ত অধ্যাদেশ দ্রুত জারি করা। অধিকার আদায়ের লড়াই করতে করতে আমরা ক্লান্ত। এখন অধ্যাদেশ ছাড়া আর কেউ বাসায় ফিরবে না।
গত ১২ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় সাত কলেজকে একীভূত করে ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে নতুন একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার নীতিগত সিদ্ধান্ত জানায়। একইসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তিও বাতিল করা হয়। তবে চূড়ান্ত অধ্যাদেশ প্রকাশ না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর অনিশ্চয়তায় পড়েছেন।
অধ্যাদেশ প্রাপ্তির নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত তারা রাস্তা ছাড়ছেন না—ঘোষণা এমনই। এখন দৃষ্টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দিকে—শিক্ষার্থীদের এই দীর্ঘ অবস্থান কর্মসূচির পর মন্ত্রণালয় কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেটাই দেখার বিষয়।








