প্রশিক্ষিত কিলার বা অতিরিক্ত ক্ষোভে সংঘটিত নৃশংসতা: ধারণা পুলিশের

ঢাকার মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডে এক নৃশংস হত্যাকাণ্ডে মা লায়লা আফরোজ ও তার মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজের মৃত্যু ঘটে। লাশের সুরতহাল ও আঘাতের ধরন দেখে পুলিশ ধারণা করছে, এটি হতে পারে প্রশিক্ষিত কোনো ঘাতকের কাজ অথবা অতিরিক্ত ক্ষোভে উন্মত্ত কোনো সাইকোপ্যাথের কাণ্ড।
বিজ্ঞাপন
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মৃত মা লায়লা আফরোজের শরীরে অন্তত ৩০টি জখমের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তার মধ্যে বাম গালে ৩টি, থুতনিতে ৪টি, গলার নিচে ৫টি, বাম হাতে ৩টি, দুই হাতের কব্জিতে ৩টি, বুকের বাম পাশে ৯টি, পেটের বাম পাশে ২টি এবং তলপেটে ১টি গভীর আঘাত রয়েছে।
অপরদিকে মেয়ে নাফিসার গলা ও বুকের দুই পাশসহ শরীরে ৬টি গভীর ক্ষত রয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই তাদের মৃত্যু হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
হত্যাস্থল থেকে দুটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি সাধারণ সবজি কাটার ছুরি, অন্যটি বিশেষ ধরনের ‘সুইচ গিয়ার’ যেটি আঙুলে আটকে এমনভাবে ব্যবহার করা হয় যাতে আঘাতের সময় হাত থেকে ফসকে না যায়।
পুলিশ বলছে, এই ধরনের অস্ত্র সাধারণত বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত হয় না।
তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার ইবনে মিজান জানান, হত্যার ধরন ও নৃশংসতা দেখে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ঘাতক প্রশিক্ষিত। হত্যাকাণ্ডের পর ঘাতক অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় বাথরুমে গিয়ে গোসল করেছে, রক্তমাখা পোশাক পরিবর্তন করে নিহত মেয়ের স্কুল ড্রেস পরে বাসা থেকে বেরিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এই ঘটনায় কথিত গৃহকর্মী আয়েশাকে আসামি করে মোহাম্মদপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ এখনও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করছে এবং সন্দেহভাজনের উপস্থিতি ও কার্যক্রম খতিয়ে দেখছে।
নিহত মা ও মেয়ের দাফন অনুষ্ঠিত হয়েছে নাটোর শহরের গাড়ীখানা কবরস্থানে। জানাজায় অংশ নিয়েছেন তাদের স্বজনসহ এলাকার বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ। ঢাকা থেকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে মরদেহ নাটোর শহরের বড়গাছা এলাকায় পৌঁছায়, যেখানে ভোর থেকেই আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীরা তাদের শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ভিড় করেন।
বিজ্ঞাপন
পুলিশ আশা করছে, পলাতক গৃহকর্মীকে গ্রেপ্তার করা গেলে হত্যার প্রকৃত কারণ ও নৃশংসতার নেপথ্যের তথ্য উদঘাটন সম্ভব হবে।








