খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিশ্চিতে সবরকম সহযোগিতা দিচ্ছে সরকার

মহান বিজয় দিবসের দিনে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, সরকারের পক্ষ থেকে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিশ্চিত করতে পরিবারের ইচ্ছার পূর্ণ সম্মান দেখানো হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এই ভাষণে তিনি বলেন, জাতীয় নেত্রী, দেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং গণতান্ত্রিক রাজনীতির অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিত্ব বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এটি আমাদের সকলের জন্য উদ্বেগের বিষয়।
প্রধান উপদেষ্টা আরও জানান, খালেদা জিয়া বাংলাদেশের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের অবিচ্ছেদ্য অংশ। দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের প্রতি তার অবিচল অঙ্গীকার এবং জনগণের প্রতি তার শ্রদ্ধার কারণে তাকে রাষ্ট্রের অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, সরকার তার চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। প্রয়োজনে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা নিয়েও সরকার প্রস্তুত।
ড. ইউনূস জনগণকে নির্বাচনের গুরুত্বেও সতর্ক করে বলেন, নির্বাচন হোক উৎসবমুখর, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ। নিরাপত্তা, প্রশাসনিক প্রস্তুতি, প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং পর্যবেক্ষণের প্রতিটি ধাপকে আমরা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছি। একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি ভোটের গুরুত্ব বোঝাতে বলেন, ভোট শুধুমাত্র কাগজে সিল মারার বিষয় নয়; এটি নতুন রাষ্ট্র বিনির্মাণে আপনার সক্রিয় অংশগ্রহণ। দেশের মালিকানা জনগণের হাতে, আর সেই মালিকানার স্বাক্ষর আপনার ভোট।
বিজ্ঞাপন
তিনি রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি আহ্বান জানান, নির্বাচনের মাঠে প্রতিযোগী হিসেবে থাকুন, কখনো শত্রু হিসেবে নয়। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করুন, যাতে জনগণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আরও আত্মবিশ্বাসী হয়।
ড. ইউনূস প্রবাসী ভোটারদের অংশগ্রহণকেও বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রবাসী ভাই-বোনেরা প্রথমবারের মতো পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে যাচ্ছেন। এটি একটি নতুন ধারার সূচনা, যা ভবিষ্যতেও চলবে।
বিজ্ঞাপন
প্রধান উপদেষ্টা দেশের বিচার ও প্রশাসনিক সংস্কারের অগ্রগতি তুলে ধরে জানান, একটি আধুনিক, ন্যায়ভিত্তিক ও জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র গঠনের জন্য বিচার বিভাগকে স্বাধীন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে স্বতন্ত্র প্রশাসনিক কাঠামো দিয়ে পৃথক সচিবালয় গঠন করা হয়েছে, যা দেশের বিচার ব্যবস্থার ইতিহাসে যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
ড. ইউনূসের ভাষণে স্পষ্ট করা হয়েছে, নির্বাচন, প্রবাসী ভোটার অংশগ্রহণ এবং বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতা— সব মিলিয়ে দেশের গণতান্ত্রিক ও প্রশাসনিক কাঠামোর উন্নয়নে সরকারের পরিকল্পিত উদ্যোগ চলমান।







