মহা সমারোহে সারা দেশে পালিত হচ্ছে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:০৬ এএম, ৬ই সেপ্টেম্বর ২০২৫

আরবি রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ আজ; মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর জন্ম ও ওফাতের (মৃত্যু) পুণ্যময় দিন। ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে আরবের মক্কা নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ৬৩ বছর বয়সে একইদিনে তিনি ইন্তেকাল করেন।
মহানবী হযরত মুহম্মদ (সা.) এর জন্মের আগে গোটা আরব অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। ওই সময় আরবের মানুষ মহান আল্লাহকে ভুলে গিয়ে নানা অপকর্মে লিপ্ত ছিল। আরবের সর্বত্র দেখা দিয়েছিল অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা। এ যুগকে বলা হতো ‘আইয়ামে জাহেলিয়াত’র যুগ।
তখন মানুষ হানাহানি ও কাটাকাটিতে লিপ্ত ছিল। এই অন্ধকার যুগ থেকে মানবকুলের মুক্তিসহ তাদের আলোর পথ দেখাতে মহান আল্লাহ তাআলা রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে দুনিয়ায় প্রেরণ করেন।
মহানবী (সা.) অতি অল্প বয়সেই আল্লাহর প্রেমে অনুরক্ত হয়ে পড়েন এবং প্রায়ই তিনি হেরা পর্বতের গুহায় ধ্যানমগ্ন থাকতেন। ২৫ বছর বয়সে মহানবী বিবি খাদিজার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। মাত্র ৪০ বছর বয়সে তিনি নবুয়ত লাভ বা মহান রাব্বুল আলামিনের নৈকট্য লাভ করেন।
আরও পড়ুন: হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনাদর্শ মুসলমানের জন্য অবশ্য অনুসরণীয়
ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে সারাদেশে যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে উদযাপিত হচ্ছে দিনটি।
ধর্ম মন্ত্রণালয় এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এ দিনে দেশব্যাপী ব্যাপক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা এএফএম খালিদ হোসেনের সভাপতিত্বে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় বিস্তারিত কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
পবিত্র এই দিনটি উদযাপনের অংশ হিসেবে শনিবার সকাল থেকে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। পাশাপাশি, রাজধানীর প্রধান সড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহে জাতীয় পতাকা এবং কালিমা তাইয়্যেবা লেখা ব্যানার ও পতাকা দিয়ে সাজানো হয়েছে, যা এক উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি করেছে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন এই উপলক্ষে ১৫ দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে, যার মূল কেন্দ্র জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- কিরাত ও নাত প্রতিযোগিতা, কবিতা পাঠ, সাংস্কৃতিক আসর, আরবি খুতবা রচনা প্রতিযোগিতা, সেমিনার ও বিশেষ স্মারক প্রকাশ।
আরও পড়ুন: আজ পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)
এছাড়াও, ১২ রবিউল আউয়াল থেকে বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ প্রাঙ্গণে দুই সপ্তাহব্যাপী একটি ইসলামী বইমেলা অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ টেলিভিশন, বেতার এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক মিডিয়া দিবসটি উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছে। বিভিন্ন পত্রপত্রিকা প্রকাশ করেছে বিশেষ ক্রোড়পত্র, যেখানে মহানবীর (সা.) জীবন ও শিক্ষার ওপর আলোকপাত করা হয়। দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান এবং ধর্মীয় সংগঠনগুলো এই দিনটি পালনে আলোচনা সভা, দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেছে।
এইসব কর্মসূচির মাধ্যমে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবন ও শিক্ষা, ইসলামের শান্তি, অগ্রগতি, সহনশীলতা, ভ্রাতৃত্ব, মানবাধিকার এবং নারী মর্যাদার বার্তা তুলে ধরা হবে।
শিশুদের জন্য বাংলাদেশ শিশু একাডেমি নাত পাঠ, প্রবন্ধ প্রতিযোগিতা ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।
ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে দেশের সব সামরিক ও বেসামরিক হাসপাতাল, কারাগার, এতিমখানা, শিশু নিবাস এবং বৃদ্ধাশ্রমে বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলোও যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে এই দিনটি পালন করবে।
এমএল/
বিজ্ঞাপন
পাঠকপ্রিয়
আরও পড়ুন

রাষ্ট্রের দায়িত্ব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা: ধর্ম উপদেষ্টা

ষড়যন্ত্র থেমে নেই, জনগণই প্রতিরোধ করবে: উপদেষ্টা আদিলুর

সিলেটে আগে থেকেই পাথর উত্তোলন হচ্ছিল: রিজওয়ানা

নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা করলে জনগণকে সরকারের পাশে দাঁড়াতে হবে: শারমীন এস মুরশিদ
