সাংবাদিকদের লাঞ্ছিতের অভিযোগে এনসিপির সংবাদ সম্মেলন বর্জন

রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাকর্মীদের হাতে সাংবাদিকরা লাঞ্ছিত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন বর্জন করেছেন উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীরা।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সকাল পৌনে ১০টার দিকে বিমানবন্দরের ভিআইপি গেটে এই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশন ও উচ্চপর্যায়ের একাধিক বৈঠকে যোগ দিতে গত ২৩ সেপ্টেম্বর ঢাকা ছাড়েন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দীর্ঘ ৯ দিনের সফর শেষে বৃহস্পতিবার তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফেরেন। সঙ্গে ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির নেতা ও পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের এবং এনসিপির প্রতিনিধি আখতার হোসেন ও ডা. তাসনিম জারা।
বিজ্ঞাপন
তাদের দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে বিমানবন্দরের ভিআইপি গেটে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল ও সংবাদপত্রের সাংবাদিকরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
চোখে পড়ার মতো ভিড়ের মধ্যে বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবির সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে ব্রিফিং শুরু করেন। ঠিক সেই সময় এনসিপির নেতাকর্মীরা উচ্ছ্বসিত হয়ে জোরে জোরে স্লোগান দিতে থাকেন। সাংবাদিকদের কাজে ব্যাঘাত ঘটায় একজন সাংবাদিক তাদের শান্ত হতে অনুরোধ করলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
অভিযোগ রয়েছে, সেই মুহূর্তে এনসিপির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী ক্ষুব্ধ হয়ে সাংবাদিকদের দিকে তেড়ে যান এবং তাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। এতে উপস্থিত সাংবাদিকদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে তারা সিদ্ধান্ত নেন সংবাদ সম্মেলন বর্জন করার।
বিজ্ঞাপন
ঘটনার পরপরই অনেক সাংবাদিক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “গণমাধ্যমের ভূমিকা খর্ব করার এই ধরনের আচরণ অগ্রহণযোগ্য। একটি রাজনৈতিক দলের সংবাদ সম্মেলনে গিয়ে সাংবাদিকরা যদি নিরাপত্তাহীন বোধ করেন, তবে তা গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্য ভয়াবহ বার্তা।”
তারা এনসিপির নেতাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ ও প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনার দাবি জানান। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্বশীল আচরণের আহ্বান জানান সাংবাদিকরা।
বিজ্ঞাপন
উল্লেখ্য, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস প্রথমবারের মতো প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেন। এই সফরে তার সঙ্গে থাকা রাজনৈতিক নেতাদের উপস্থিতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছিল। ফলে দেশে ফেরার পর তাদের অভ্যর্থনা ও সংবাদ সম্মেলনকে ঘিরে রাজনৈতিক মহলে কৌতূহল ছিল তুঙ্গে।
কিন্তু সাংবাদিক লাঞ্ছনার ঘটনাটি পুরো আয়োজনকে বিতর্কিত করে তুলেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এনসিপির ভাবমূর্তির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং গণমাধ্যমের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন আরও বাড়াতে পারে।