‘এনসিপি উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতির পক্ষে, নিম্ন কক্ষে বিপক্ষে’

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম স্পষ্ট করে বলেছে, পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতি নিয়ে এনসিপির অবস্থান স্পষ্ট। । দলটি মনে করে, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় উচ্চকক্ষে পিআর কার্যকরভাবে চালু করা সম্ভব এবং কার্যকর হতে পারে।
বিজ্ঞাপন
সারজিস আলম বলেন, ঐক্যমত কমিশনও এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে উচ্চকক্ষে পিআর বাস্তবায়নের দিকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা মনে করি, যদি উচ্চকক্ষে পিআর সফল হয়, তাহলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে নিম্নকক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু হবে কি না। তবে আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে এনসিপির সুস্পষ্ট অবস্থান হলো, আমরা উচ্চকক্ষে পিআরের পক্ষে, কিন্তু এই মুহূর্তে নিম্নকক্ষে পিআরের পক্ষে নই।
আরও পড়ুন: জুলাই সনদে এনসিপির স্বাক্ষর করবেন যারা
সোমবার (১৩ অক্টোবর) দুপুর ২টায় জামালপুর জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এনসিপির জেলা ও উপজেলা কমিটির সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
জোট গঠন ও শাপলা প্রতীক নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত নির্বাচনকেন্দ্রিক বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তবে এনসিপি এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। আমরা মনে করি, দলের ও দেশের স্বার্থে এনসিপি এককভাবেও নির্বাচনে যেতে পারে, আবার কোনো নির্বাচনী জোট বা সমঝোতার ভিত্তিতেও অংশ নিতে পারে। তবে যদি জোট হয়, সেটি হবে একটি ইলেক্টোরাল আন্ডারস্ট্যান্ডিং-এর মাধ্যমে। সেক্ষেত্রেও এনসিপি নিজ নামে নির্বাচন করবে। আমরা প্রত্যাশা করছি, এনসিপি আমাদের নির্ধারিত প্রতীক শাপলা নিয়ে আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে।
উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক বলেন, দেশের নির্বাচন আইন ও এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি। নির্বাচন কমিশনের বিধান অনুযায়ী শাপলা প্রতীকে নির্বাচন করতে আইনগত কোনো বাধা নেই। তাই আমরা আশা করি, অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন কোনো প্রকার প্রভাব কিংবা স্বেচ্ছাচারিতা ছাড়াই আইন অনুযায়ী কাজ করবে। আমরা শাপলা প্রতীক পেয়ে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবো এই প্রত্যাশা রাখি।
সারজিষ আলম আরও বলেন, উত্তরাঞ্চলের সাংগঠনিক টিম ইতোমধ্যে ৩২টি জেলার প্রতিটিতে গিয়ে সাংগঠনিক সমন্বয় সভা করেছে। আমাদের লক্ষ্য, আগামী ২০ অক্টোবরের মধ্যে জেলা আহ্বায়ক কমিটি গঠন সম্পন্ন করা। এরপর পর্যায়ক্রমে উপজেলা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে আহ্বায়ক কমিটিগুলো আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে গঠন করতে চাই। আমরা বিশ্বাস করি, বিচার, সংস্কার এবং জুলাই সনদ সম্পর্কিত কার্যক্রমে সন্তোষজনক অগ্রগতি হলে, গণতান্ত্রিক ধারায় একটি স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য এনসিপির অংশগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। সে লক্ষ্যে এনসিপিকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করা জরুরি।
বিজ্ঞাপন
এনসিপিকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করে তৈরির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এনসিপি যত বেশি সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী হবে, তত বেশি জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে সংসদে অংশ নিতে পারবে। সেই উদ্দেশ্যেই আমাদের এই জেলা সমন্বয় সভা। আমরা আশা করি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংগঠনের কাঠামো সম্পূর্ণ করে এনসিপিকে এমন এক শক্তিশালী অবস্থানে নেওয়া সম্ভব হবে, যাতে আগামী সংসদ নির্বাচনে এনসিপি বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে।
সমন্বয় সভায় সভাপতিত্ব করেন এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব ও জামালপুর জেলা শাখার প্রধান সমন্বয়কারী লুৎফর রহমান। উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আশিকিন আলম, জাতীয় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক হিফজুর রহমান বকুলসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা।
বিজ্ঞাপন